হাইকোর্টের আদেশ
৬ মাস ধরে বেতন বন্ধ সিলেট সরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ শিক্ষকদের
সরকারি আদেশে চাকরি বাতিল হওয়ার পর হাইকোর্টের আদেশ শিক্ষকদের পক্ষে থাকা সত্বেও চাকরিতে যোগ দিতে পারছেন না সিলেট সরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ১৪ শিক্ষক। একারণে শিখ্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সরকারি ইউনানী আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালে এটি উপশহরে বর্তমান নিজস্ব ভূমিতে স্থানান্তর হয়। এরপর থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে থাকেন এ কলেজে। বর্তমান সেশনে কলেজটিতে ৮৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অলটারনেটিভ মেডিসিন কেয়ার প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ৩৫১ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়োগ থেকে কলেজে ১২ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরাসরি কলেজের জন্য ২০১২ সালে ১৪ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকে এ কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমে নতুন গতি আসে।
আরও পড়ুন: ৫ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না গোয়াইনঘাটের ১৯ স্বাস্থ্যকর্মী
কিন্তু ২০১৬ সালে তাদের অব্যাহতি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বাতিল করা হয় তাদের নিয়োগ আদেশ। তাদের চাকুরিচ্যুতি বা অব্যাহতির কোনো কারণ এ পর্যন্ত জানায়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে শিক্ষকরা হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদেশ আসে শিক্ষকদের পক্ষে। হাইকোর্ট তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ দেন।
কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশ না পাওয়ায় শিক্ষকদের পক্ষে আসা আদেশ আমলে নেয়নি। ফলে আদালতের আদেশ নিয়েও নিজ কর্মস্থলে যোগদান করতে পারছেন তারা।
এরই মধ্যে হাইকোর্ট থেকে আরেকটি সম্পূরক আদেশ এসেছে এ ব্যাপারে। গত ১৯ আগস্ট আসা আদেশে ১৪ জন শিক্ষকের চাকরি আত্মীকরণের মাধ্যমে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরেরও আদেশ আসে। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় শিক্ষকরা পড়েছেন বিপাকে। তারা না পারছেন কাজে যোগদান করতে, না পারছেন এই মধ্য বয়সে অন্য কোনো পেশায় সম্পৃক্ত হতে।
আদেশপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ জাফর হোসেন খান বলেন, ‘চরম অমানবিক পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা। শিক্ষকদের আর কোনো উপার্জনের উপায় না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছি আমরা।’ অপরদিকে অলটারনেটিভ মেডিসিন কেয়ার প্রকল্পের আওতায় নেওয়া ১২ জন শিক্ষকও তাদের প্রকল্প বাতিল হয়ে যাওয়ায় কাজে যোগদান করতে পারছেন না। ফলে এখন কার্যত পুরো কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমই অচল রয়েছে। গত জুন মাস থেকে কলেজের এই ১২ জন শিক্ষকের কেউই বেতন পাচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) ডা. মো. ময়নুল ইসলাম চৌধুরী নান্না বলেন, ১৪ জন শিক্ষকের পক্ষে একটি আদেশ আদালত থেকে এসেছে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ ছাড়াতো আমি তাদের কাজে যোগদান করতে দিতে পারি না। আর অলটারনেটিভ প্রকল্পের যে ১২ জন শিক্ষক ছিলেন তারাই এখন ক্লাস নিচ্ছেন। তবে তারাও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে প্রায় ৭০০ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ
২ সপ্তাহ আগে
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালে হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল রাখতে হাইকোর্টের আদেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাবি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনার ও নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার(৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: চলমান তাপপ্রবাহে অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে ঢাবি
সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ জানান তারা।
ছাত্র অধিকার পরিষদের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বৈষম্যপূর্ণ দেশ গড়ার জন্য আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেননি। তারা ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা বাস্তবায়ন লাখ লাখ বেকার শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ধ্বংসের শামিল। এটা ছাত্রদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।’ এ আদেশ প্রত্যাহারের জন্য হাইকোর্টের প্রতি অনুরোধও জানান তিনি।
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, 'কোটা পুনর্বহালে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিক। সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে, দেশের প্রতিটি নাগরিকের সরকারি চাকরিতে সমান অধিকার রয়েছে। তাহলে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা কেন?’
২০১৮ সালের মতো দেশের সব শিক্ষার্থীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শীর্ষ গ্রেডের সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা পুর্নবহালের আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় সড়কে পৃথক মিছিলও করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, 'গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর দাবির ওপর ভিত্তি করে যারা অন্যায্য সুবিধা চায় তাদের দাবির ভিত্তিতে কোটা পুনর্বহাল শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। কোটা পদ্ধতি বাতিল করতে হলে আবারও রাজপথে নামতে হবে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সাম্য ও ন্যায়বিচারের জন্য যুদ্ধ করেছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটক থেকে শুরু হওয়া র্যালিতে অন্তত ৫০০ শিক্ষার্থী যোগ দেন। এই গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীরা সারা বছর সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেন। রায় বাতিলের স্লোগান দিয়ে মিছিল নিয়ে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যান।
এর আগে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাবিতে নিয়মিত ২০ আসন বরাদ্দ
ঢাবির সুইমিংপুলে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
৬ মাস আগে