প্রাথমিক শিক্ষা সচিব
কম শিক্ষার্থী থাকা বিদ্যালয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে: প্রাথমিক শিক্ষা সচিব
কম শিক্ষার্থী থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করেছি প্রায় ১৫০টির কাছাকাছি বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১০ থেকে ৫০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে।’
এ বিদ্যালয়গুলো পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের সঙ্গে চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব।
আরও পড়ুন: অষ্টম শ্রেণি চালুর জন্য প্রস্তুত আরও ১৫৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়: প্রাথমিক শিক্ষা সচিব
তিনি বলেন, ‘আমরা হুট করে সকল স্কুল বন্ধ করে দেব না।’
সচিবালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রদান ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কথা বলেন।
কম শিক্ষার্থী থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূত করার বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। ইন-জেনারাইলজড সিদ্ধান্ত না। আমাদের ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। আমাদের টার্গেট হলো ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় এলিমেন্টারি স্কুল করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ট্রেন্ডটা দেখছি। বিগত ১০ বছর বা ২০ বছর কোনো স্কুলে ১০ জন বা ২০ জন শিক্ষার্থী থাকে তাহলে আমরা শুধুমাত্র ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে স্কুল একীভূত করে দেব না।'
আরও পড়ুন: মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতে ৯ম গ্রেড ও শতভাগ পদোন্নতি দাবি এটিইওদের
উদাহরণ দিয়ে সচিব বলেন, ‘রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়খলিয়া ইউনিয়নে একটি স্কুলে ১০ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১৫ বছর ধরে স্কুলটি চলছে। কিন্তু তার আশেপাশে ৭ থেকে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো স্কুল নাই। সুতরাং ওই স্কুলটি আমরা একীভূত করব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবার বরিশালে রাস্তার এপারে একটি স্কুল আছে, বিপরীতে বা পার্শ্ববর্তী স্কুল আছে। এ স্কুলে ধরেন কয়েকজন শিক্ষার্থী আবার অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে ২০০- এর কাছাকাছি শিক্ষার্থী। ওই স্কুলটা আমরা একীভূত করে দেব।'
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘এটা একইধরনের (ইন-জেনারেলাইজড) সিদ্ধান্ত হবে না। চাহিদা ও স্থানীয় বাস্তবতা বিবেচনা করে সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।'
আরও পড়ুন: জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পালিত হবে ১২ মার্চ
সিটিজেন সেবা মডিউলে থাকবে সব তথ্য
সচিব বলেন, ‘আমরা ইন্টিগ্রেটেড প্রাইমারি এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম চালু করেছি। এটা আমাদের এক থেকে দেড় বছরের সাধনার ফল। এটাকে বলছি ওয়ান স্মার্ট প্ল্যাটফর্ম অল ডিজিটাল সার্ভিস।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিদ্ধান্তের আওতায় একটি মডিউল সংযোজন করেছি। সেটি হচ্ছে, সিটিজেন সেবা মডিউল। যে সব তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ ও প্রচারযোগ্য সেসব তথ্য-উপাত্ত এখানে পাবেন।’
সচিব বলেন, ‘আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এটা সম্পন্ন (কমপ্লিট) হবে। সেখানে জরাজীর্ণ ভবন থেকে শুরু করে সব ধরনের তথ্য থাকবে।’
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বই ছাপানোর পরিকল্পনা
জুলাইয়ে ঢাকার ১০টি নতুন স্কুল ভবন উদ্বোধন
এই মুহূর্তে সারাদেশে ৮১ শতাংশ স্কুলে নতুন ভবন হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এখনো আমাদের ২০ শতাংশের মতো জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে। ঢাকা শহরের কথা আমরা বলতে পারব। ঢাকা শহরে ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে ৩৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র স্থাপত্য শৈলীতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি আগামী জুলাই মাসে ঢাকার ১০টি স্কুল প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করাব। ইতোমধ্যে দুই শতাধিক বিদ্যালয়ের মাস্টার প্ল্যান আমরা অনুমোদন করেছি। ৫০টি বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ চলমান আছে। আগামী আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে ঢাকা শহরের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয়ে পরিণত হবে।’
সচিব আরও বলেন, ‘এটাকে আমরা পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি করছি, যদি সরকারের অনুমোদন পাই, আমরা সামনের দিকে যাব। জড়াজীর্ণ ভবনগুলো ভেঙে নতুন নির্মাণ আমাদের অগ্রাধিকার।’
আরও পড়ুন: নতুন বইয়ের আনন্দে শিশুরা আলোকিত বাংলাদেশ গড়বে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
৪ মাস আগে
অষ্টম শ্রেণি চালুর জন্য প্রস্তুত আরও ১৫৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়: প্রাথমিক শিক্ষা সচিব
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার জন্য দেশের আরও ১৫৪ প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। তিনি বলেছেন, আগামী তিন বছরে আরও এক হাজার বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার অবকাঠামো আছে।
সচিবালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রদান ও জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ জুন) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কথা বলেন।
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘সিদ্ধান্তহীনতা কাটিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করার বিষয়ে আবারও তৎপর সরকার।’
মৌলিক শিক্ষা অধিকার: প্রাথমিক থেকে নিম্ন-মাধ্যমিক স্তরে উত্তরণে কাজ করবে দুই মন্ত্রণালয়
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি চালুর অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে বলা আছে যে, প্রাথমিক শিক্ষা হবে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এটি পর্যায়ক্রমে হবে। এটি আসলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘এখানে পলিসি মেকিংয়ে (নীতি নির্ধারণ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের সিদ্ধান্তে আমরা ৬৯৫ স্কুলে অষ্টম শ্রেণি চালু করেছি। আমরা ৭০০-এর বেশি স্কুলে চালু করেছিলাম। তবে একসময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার কারণে নতুন স্কুলগুলো অন্তর্ভুক্ত করিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সমন্বয় সভায় আবারও সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, ধারাবাহিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত ও শতভাগ অবৈতনিক করা।’
‘আমরা হিসেব করে দেখেছি, ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫ হাজারের কাছাকাছি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করতে পারি। এছাড়া মাধ্যমিকে ২৩ হাজারের কছাকাছি নিম্ন মাধ্যমিক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে, সেগুলো যদি তারা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক করতে পারে, তাহলে সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।’
ফরিদ আহাম্মদ আরও বলেন, ‘এটা করতে হলে তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে- অবকাঠামো, শিক্ষক নিয়োগ ও পদ সৃজন এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। কারণ আমরা আমাদের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত।’
সচিব বলেন, ‘আমরা মাঠ পর্যায় থেকে যে তথ্য উপাত্ত পেয়েছি, তাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে এই মুহূর্তে আরও ১৫৪ স্কুলে অষ্টম শ্রেণি চালু করতে পারি। পাশাপাশি আগামী তিন বছরে আরও এক হাজার স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার মতো অবকাঠামো আছে। এটি একটি ধারাবাহিক ও নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়া।’
কবে নাগাদ সব স্কুলে পুরোপুরি অষ্টম শ্রেণি চালু হবে হবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘এর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। অবকাঠামো, শিক্ষক নিয়োগ ও পদ সৃজন এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়গুলো রয়েছে। এই কাজগুলো আমরা শুরু করেছি। আগামী তিন বছরের একটা টার্গেট নিয়ে কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, “আমরা ‘স্মার্ট প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম-৫’ এর দিকে যাচ্ছি। সেখানেও এ বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি যাতে অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধি, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষক-কর্মচারীর পদ সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে। পিডিপি-৫ এর কাজ শুরু হলে এই কাজ আরও ত্বরান্বিত হবে।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ছে
ঢাকা-চট্টগ্রাম বিভাগে ৬ মাসের জন্য স্থগিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম: হাইকোর্ট
৪ মাস আগে