ফাবিয়ান রুইস
প্রায় পুরো ম্যাচ ১০ জনে খেলা স্পেনে বিধ্বস্ত সুইজারল্যান্ড
স্পেন কেন বর্তমানে ইউরোপের সেরা দল, আজ তার সবচেয়ে পরিষ্কার প্রমাণ দেখল বিশ্ব। ম্যাচের ৭০ মিনিটের বেশি সময় দশ খেলোয়াড় নিয়ে খেলে, রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে কোনোমতে প্রতিপক্ষকে ঠেকিয়ে, চকিতে পাওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা সুইজারল্যান্ডের ঘরের মাঠ থেকে ৪-১ ব্যবধানের জয় তুলে নিয়েছে তারা।
জেনেভায় নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের চতুর্থ গ্রুপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে রবিবার রাতে স্বাগতিক সুইসদের বিপক্ষে বড় জয়ে নকআউটে যাওয়ার পথে ফিরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
দলের হয়ে মাঝের দুটি গোল করেন মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রুইস এবং বাকি গোলদুটি থেকে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড হোসেলু এবং শেষেরটি বার্সেলোনা স্ট্রাইকার ফেররান তোরেস। অপরদিকে, সুইসদের একমাত্র গোলটি করেন জেকি আমদুনি।
প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্রয়ের পর এদিন পুরোনো ধ্বংসাত্মক চেহারায় ফেরে লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পর আক্রমণ চালাতে থাকে তারা।
এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় স্পেন এবং দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেই গোল পেয়ে যায় তারা।
আরও পড়ুন: সার্বিয়ার ‘রক্ষণ দুর্গ’ ভাঙতে ব্যর্থ চ্যাম্পিয়নরা
পাল্টা আক্রমণে উঠে বক্সের ভেতর থেকে শট নিলে হোসেলুর সেই শট ঠেকিয়ে কর্নারে পরিণত করেন ইয়ান জমারের অবসরের কারণে সুইসদের গোলপোস্ট সামলানো গ্রেগর কোবেল। এরপর শর্ট কর্নারের পর ডান দিক থেকে প্রতিপেক্ষর একাধিক ডিফেন্ডারকে ড্রিবল করে ভেতরে ঢুকে গোলমুখে ক্রস দেন লামিন ইয়ামাল। সেখান থেকে হেডারে বল লক্ষ্যে পাঠান হোসেলু। শূন্যে ভাসা অবস্থায় কোবেল বল ক্লিয়ার করলেও ভিএআর রিভিউতে দেখা যায় ততক্ষণে গোললাইন অতিক্রম করেছে বল। ফলে গোল পেয়ে ম্যাচে এগিয়ে যায় স্পেন।
চার মিনিট পরই অবশ্য চমৎকার এক পাল্টা আক্রমণে উঠে সমতায় ফেরে সুইজারল্যান্ড। তবে অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। বাঁ পাশ ধরে উঠে গিয়ে গোলমুখে ক্রস দেন ব্রাইল এম্বলো, কিন্তু বেসির ওমেরাজিক বল জালে পাঠালেও ভিএআর রিভিউতে দেখা যায়, অফসাইড ছিলেন তিনি।
ত্রয়োদশ মিনিটে লামিন ইয়ামালের নৈপুণ্যে ব্যবধান বাড়ায় স্পেন। নিজেদের অর্ধ থেকে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে চ্যালেঞ্জ করে বল কেড়ে নেন ১৭ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান তরুণ। এরপর দ্রুতগতিতে বল নিয়ে উঠে গিয়ে বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে তারই সঙ্গে দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা নিকো উইলিয়ামসকে পাস বাড়ান লামিন। নিকো সেখান থেকে এক ডিফেন্ডারকে ড্রিবল করে গোলে শট নিলেও তার প্রচেষ্টা ফিরিয়ে দেন কোবেল। কিন্তু ভাগ্য সহায় না থাকলে যা হয়; বল এসে পড়ে ছয় বক্সের বাইরে থাকা ফাবিয়ান রুইসের সামনে। সময় নষ্ট না করে সেখান থেকে জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার।
২ মাস আগে
জর্জিয়ার স্বপ্নযাত্রা থামাল দুর্দান্ত স্পেন
পর্তুগালকে ২-০ ব্যবধানে হারানোর পর জর্জিয়া কোচ উইলি স্যানিওল বলেছিলেন, শেষ ষোলোয় উঠতে পেরেই অনেক খুশি। তবে স্পেনকে ভয় পেয়ে খেলবে না তার শিষ্যরা। মাঠের খেলায় তা করেও দেখালেন জর্জিয়ার ফুটবলাররা। তবে বদলে যাওয়া স্পেনের ক্রমাগত ক্ষুরধার আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হলো তাদের হৃদয়।
কোলনে রবিবার দিবাগত রাতে জর্জিয়ার বিপক্ষে ৪-১ গোলের ব্যবধানে জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্পেন।
টুর্নামেন্টজুড়ে অসাধারণ সব সেইভ করে দলকে শেষ ষোলোয় নিয়ে এসেছিলেন জর্জিয়ার তরুণ গোলরক্ষক জর্জি মামারডাশভিলি। গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচে ২৭টি সেইভ করে ফুটবলপাড়ায় আলোচনার জন্ম দেন ২৩ বছর বয়সী ভ্যালেন্সিয়ার এই গোলরক্ষক। দুর্দান্ত স্পেনের বিপক্ষেও বারংবার দেখালেন সেই অসামান্য প্রতিভা। তবে একক প্রচেষ্টায় ঠিক পেরে উঠলেন না তিনি। স্পেনের ৯টি প্রচেষ্টা তার কাছে বাধা পেলেও চারবার ব্যর্থ হন মামারডাশভিলি।
অপরদিকে, শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজাতে থাকা স্পেন আত্মঘাতী গোল খেয়েও সেদিকে দৃকপাত না করে নিজেদের কাজের ধারা অব্যহত রাখল। আর তাতেই থেমে গেল ইউরোর ইতিহাসে প্রথমবার শেষ ষোলো খেলতে আসা জর্জিয়ার স্বপ্নযাত্রা।
আরও পড়ুন: ইয়ামালের ইতিহাস গড়ার রাতে স্পেনে বিধ্বস্ত ক্রোয়েশিয়া
ম্যাচজুড়ে আক্রমণের পর আক্রমণ করতে থাকা স্পেন প্রতিপক্ষের গোলে ৩৫টি শট নেয়, যার ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। অপরদিকে, দুই অর্ধে দুটি করে মোট চারটি শট নিয়ে তার একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি কিভিচা কেভারাটসখেলিয়ারা।
৪ মাস আগে