ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস
প্রতিশোধের ম্যাচে হাঙ্গেরির জালে জার্মানির গোল উৎসব
নেশন্স লিগের গত আসরে গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে নিজেদের মাঠে হাঙ্গেরির বিপক্ষে হেরে নকআউট পর্বে উঠতে ব্যর্থ হয় জার্মানি। এবারের আসরেও সেই দলটিকে পেয়ে বড় ব্যবধানে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।
ডুসেলডর্ফের মেরকুর-শ্পিল আরেনায় শনিবার রাতে নেশন্স লিগের ‘এ’ লিগের তৃতীয় গ্রুপের ম্যাচে হাঙ্গেরিকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়েছে জার্মানি।
এদিন পাঁচটি গোলের প্রত্যেকটি পেয়েছে নতুন দিনের জার্মান দলের প্রতিভাবান পাঁচ খেলোয়াড়। ম্যাচের ২৭তম মিনিটে জার্মানির গোলের খাতা খোলেন নিকলাস ফুলক্রুগ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮, ৬৬, ৭৭ ও ৮১তম মিনিটে আরও চারটি গোল করেন যথাক্রমে জামাল মুসিয়ালা, ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস, আলেক্সান্ডার পাবলোভিচ ও কাই হাভার্টস।
এদিন একটি গোল ও তিনটি অ্যাসিস্ট করে ম্যাচসেরা হয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখ ২১ বছর বয়সী প্রতিভাবান অ্যাটাকার মুসিয়ালা। পেনাল্টিতে একটি গোল ছাড়া ওপেন প্লে থেকে হওয়া চার গোলেই অবদান রাখেন এই তরুণ।
ইউরোর পর অবসরে যাওয়ায় থমাস মুলার, টনি ক্রুস, মানুয়েল নয়ার ও অধিনায়ক ইলকাই গুনডোগানকে ছাড়া এদিন কার্যত তরুণ এক দল নিয়ে নবযাত্রা শুরু হয় জার্মানির।
এছাড়া নয়ারের অবসরে অভিষেকের ১২ বছর পর ১ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামার সুযোগ পান বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। তবে মাঠের খেলায় গোলের সামনে আস্থার পরিচয়ই দিয়েছেন তিনি। হাঙ্গেরির অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন ৩২ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক।
আরও পড়ুন: জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু
ম্যাচের শুরুতে থেকেই স্বাগতিক জার্মানিকে সমানে টক্কর দিতে থাকে ইউরোপের ‘ব্ল্যাক হর্স’ খ্যাত হাঙ্গেরি। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে প্রথম সুযোগটিও তৈরি করে তারা। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
অষ্টম মিনিটে প্রথম প্রচেষ্টাতেই গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করে জার্মানি। ডান পাশ থেকে আসা কর্নার হেডারে দূরের পোস্টের দিকে পাঠান জার্মান ডিফেন্ডার ইয়োনাথন টাহ, হাঙ্গেরির গোলরক্ষক পিটার গুলাশি তখন অন্যপ্রান্ত থেকে চেয়ে চেয়ে দেখছেন, কিন্তু গোললাইন থেকে আরেক হেডারে বল ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত করেন হাঙ্গেরির লিভারপুল অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ডমিনিক সোবসলাই।
ত্রয়োদশ মিনিটে হাঙ্গেরি মিডফিল্ডার মিলোস কারকেসের দূর থেকে নেওয়া বুলেট শট পোস্টের উপর দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে জার্মানি আক্রমণে উঠলেও শেষ মুহূর্তে সঠিক সময়ে এগিয়ে এসে বল তালুবন্দি করেন গুলাশি।
এরপর ২০তম মিনিটে গুলাশির একক নৈপুণ্যে গোল খাওয়া থেকে বেঁচে যায় হাঙ্গেরি। হঠাৎ ক্ষিপ্র গতিতে পাল্টা আক্রমণে উঠে হাঙ্গেরির ডিফেন্ডারদের হকচকিয়ে দেয় জার্মানি। প্রতিপক্ষের বক্সের সামনে তাদের দুই ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জের সামনে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করে জার্মানির তিন ফুটবলার। তবে ডান পাশে বক্সের ভেতরে ঢুকে নিকলাস ফুলক্রুগের নেওয়া জোরালো শট প্রতিহত করেন গুলাশি।
তবে ম্যাচের ২৭তম ম্যাচে জার্মানির সম্মিলিত প্রচেষ্টার কাছে হার মানতে বাধ্য হন হাঙ্গেরির গোলরক্ষক।
প্রতিপক্ষের বক্সের বাইরে বেশ কিছুক্ষণ ধরে বল নড়াচড়া করতে করতে হঠাৎ ডানপাশে বক্সের ভেতরে ঢুকে বিপরীত পাশে ফাঁকায় থাকা ডেভিড রাউমকে উড়িয়ে পাস দেন ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস। রাউম গোলমুখে মাটি কামড়ানো জোরালো ক্রস দিলে তা ধরে শট না নিয়ে ডান পাশে থাকা ফুলক্রুগকে বাড়ান জামাল মুসিয়ালা। আর প্রথম টোকাতেই বল জালে জড়িয়ে দেন ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
৩২তম মিনিটে হাঙ্গেরির একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। সতীর্থের ক্রস পেয়ে বক্সের মাঝামাঝি জায়গা থেকে প্রথম ছোঁয়াতেই ভলি করেন রোনাল্ড সালাই, কিন্তু শটটি লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন তিনি।
পরের অন্তত ১৫ মিনিট আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ চালালেও তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দুই দলের কেউ। এরপর বিরতির আগে নির্ধারিত সময়ের কয়েক মুহূর্ত আগে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ডান পাশ থেকে দূরের পোস্টে জোরালো শট দিলেও কাই হাভার্টসের শটটি পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে ফুলক্রুগের গড়ে দেওয়া ব্যবধানেই বিরতিতে যায় জার্মানি।
২ মাস আগে
স্বর্গীয় ফুটবল উপহার দিয়েও নিয়তি মানতে হলো জার্মানির
১২০ মিনিটের সাইক্লোন যেন চলল মাঠে; স্বর্গ থেকে নেমে আসা ফুটবল দেবতারা যেন তাতে পারফর্ম করলেন। এমনই এক ধ্রুব লড়াই শেষে স্পেনের ব্যান্ড অব ব্রাদার্সের কাছে হার মানল স্বাগতিক জার্মানি।
এই পরাজয়কে ঠিক ‘হারা মানা’ বলা চলে না। খেলায় একপক্ষের জয় ও অন্যপক্ষের পরাজয় নির্ধারিতই ছিল। সেই নিয়তির সেই বিষাদই আলিঙ্গন করলেন ইউলিয়ান নাগেলসমানের শিষ্যরা। আর ধৈর্য্য ধরে, মাথা ঠান্ডা রেখে শেষ মুহূর্তে জয় ছিনিয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়লেন স্পেনকে নতুন দিনের ফুটবলের পথ দেখানো লুইস দে লা ফুয়েন্তের শিষ্যরা।
শুক্রবার (৫ জুলাই) ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক জার্মানিকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্পেন।
স্পেনের হয়ে ম্যাচের ৫১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন দানি অলমো। লামিন ইয়ামালের দারুণ একটি ক্রস থেকে গোল করেন তিনি।
এরপর নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে, ম্যাচের ৮৯তম মিনিটে গোল করে জার্মানিকে সমতায় ফেরান বদলি নামা বায়ের লেভারকুজেন ফরওয়ার্ড ফ্লোরিয়ান ভিয়ার্টস।
এরপর ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে আক্রমণে পসরা সাজায় দুদলই। তবে কেউই গোল করে উঠতে পারছিল না। তবে নির্ধারিত ১২০ মিনিটের ঠিক এক মিনিট আগে গোল পেয়ে যান স্পেনের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো।
বক্সের বাইরে থেকে দানি অলমোর বাড়ানো মাথার ওপরের ক্রসে দানবীয় কায়দায় লাফিয়ে উঠে গোলের দিকে জোরালো হেড দেন তিনি। আর নয়ারকে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নেয় বল।
ফলে শেষ হাসি হাসে স্পেন, আর দুর্দান্ত খেলেও ভাগ্যকে মেনে নিয়ে হতাশ হৃদয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক জার্মানি।
ঘটনাবহুল জার্মানি-স্পেনের ধ্রুব লড়াইয়ে ম্যাচজুড়ে যা হলো, তা দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
৪ মাস আগে