মেট্রোরেল স্টেশন
এটা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক, আমি মর্মাহত: মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শনের পর জাপানের রাষ্ট্রদূত
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে গত কয়েকদিন ধরে চলা সহিংসতা মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার পরিদর্শন করে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেছেন, তিনি মর্মাহত। মেট্রোরেল স্টেশনের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টিকে অত্যন্ত হৃদয়বিদারক বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মেট্রোরেলের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বুধবার (২৪ জুলাই) ঢাকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দেখে আমি হতবাক। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঢাকা এমআরটির মারাত্মক ক্ষতিতে আমি মর্মাহত। এটা আমার কাছে খুবই হৃদয়বিদারক মনে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই ক্ষয়ক্ষতি আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশি ও জাপানি- সংশ্লিষ্ট সবাই দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে নগর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ঘাম ও শ্রম দিয়ে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনা করছেন।’
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি মেট্রো ট্রেনে যেসব যাত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে, তাদের হাসিমুখ আমি কখনো ভুলতে পারব না। তাই হামলার কারণে মেট্রোরেলের পরিচালনা স্থগিত করা দুঃখজনক।’
আরও পড়ুন: মিরপুর-১২ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল বন্ধ, পুলিশ বক্সে আগুন
রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা বাংলাদেশে বিক্ষোভকারী ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘর্ষে হতাহতদের পাশাপাশি শোকাহত পরিবার ও তাদের বন্ধুবান্ধব এবং আহতদের প্রতি গভীর দুঃখ ও সমবেদনা জানান।
কিছু লোক এই ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিক ঢাকা মেট্রোরেলসহ তাদের সার্বিক সহায়তাকে সমর্থন করে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
ইওয়ামা বলেন, ‘আমি ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা সংস্কারসহ এই দেশের উন্নয়নে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কাজ করে যাব।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিস্থিতির আর অবনতি ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান হবে। শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশের জনগণ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসিমুখে তাদের দৈনন্দিন জীবনে ফিরে আসতে সক্ষম হবে।
আরও পড়ুন: অপরাধীদের রুখতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে: মেট্রোরেলে তাণ্ডব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
৩ মাস আগে
মিরপুর-১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী
মিরপুর-১০ নম্বরে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিরতার সময় ভাঙচুরের শিকার স্টেশনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ পরিদর্শনের সময় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ক্ষয়ক্ষতি এবং পুনরায় চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা।
এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গত ১৮ জুলাই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তদন্ত কমিটি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাইয়ের প্রতিবেদন জমা দিলেই পুনরায় মেট্রোরেল চালুর সময়সূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ২২ জুলাই মেট্রোরেলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে এবং কবে নাগাদ এটি আবার চালু করা যায় তা নির্ধারণে মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের অতিরিক্ত পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ জাকারিয়াকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
দেশের বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল উদ্বোধনের প্রায় দুই মাস পর ২০২৩ সালের ১ মার্চ জনসাধারণের জন্য মেট্রো স্টেশনটি খুলে দেয় সরকার।
প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ১৯ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা ঋণ দেয় আর বাকি অর্থায়ন করে বাংলাদেশ সরকার।
শুরুতে এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অতিরিক্ত ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার অংশ নির্মাণ, প্রতিটি স্টেশনের জন্য নতুন জমি অধিগ্রহণ এবং বিভিন্ন নতুন সুযোগ-সুবিধা সংযোজনের কারণে ব্যয় বেড়ে যায়।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের এমআরটি-৬ লাইনের উত্তরা-আগারগাঁও অংশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
৩ মাস আগে