বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
জয়পুরহাটে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার
জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সদর থানা থেকে লুট হওয়া একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও ৩৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে জয়পুরহাট চুনা পাথর খনি ও সিমেন্ট প্রকল্প মাঠের পাশের একটি ঝোপ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এ আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ওইদিন সন্ধ্যায় জয়পুরহাট সদর থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। থানার অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ বিভিন্ন সরকারি সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের জয়পুরহাট চুনা পাথর খনি ও সিমেন্ট প্রকল্প মাঠের পাশের ঝোপ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এ পিস্তল, গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয় বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, জয়পুরহাট থানা থেকে মোট ৫৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি লুট হয়েছিল। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
সাত দিনের রিমান্ডে মোজাম্মেল বাবু-শাহরিয়ার কবির
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে গৃহকর্মী লিজা আক্তার হত্যার অভিযোগে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় করা মামলায় একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্যাহর আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. পায়েল হোসেন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকেও ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত ৭ দিনের রিমান্ডে
শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর লিজা আক্তারের বাবা মো. জয়নাল শিকদার বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই রমনা থানাধীন এলাকায় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। এতে লিজাসহ অনেক সাধারণ মানুষ আহত হন। গুলিবিদ্ধ লিজা আক্তার ২২ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফী
আসাদুজ্জামান নূর ও মাহবুব আলী কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালে হোটেল কর্মচারী মো. সিয়াম সরদারকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেনের আদালত।
আরও পড়ুন: ইনু-মেনন, পলকসহ সাবেক আইজিপি মামুন রিমান্ড শেষে কারাগারে
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিন নামঞ্জুরের আবেদন জানান। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন চান।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী তানভীর উল ইসলাম।
রবিবার রাত ১১টায় রাজধানীর বেইলি রোডের নওরতন কলোনি থেকে সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর সেগুনবাগিচা থেকে সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
গত ১২ সেপ্টেম্বর নিহত সিয়ামের বাবা মো. সোহাগ সরদার বাদী হয়ে ১১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ মামলার ৮ নম্বর আসামি আসাদুজ্জামান নূর।
আরও পড়ুন: ৩৮৮ জন আনসার সদস্যকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
অপর আসামিরা হলেন- আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন অর রশীদ, মনির হোসেন, মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও কামাল আহমেদ মজুমদার।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই রাত ১১টার দিকে মিরপুর-১০ এ আবু তালেব স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে নির্বিচারে গুলি করে। এ সময় সিয়াম সরদার হোটেলের কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন। তখন গুলিবিদ্ধ হয়ে সিয়াম মারা যান।
আরও পড়ুন: সাবেক বিচারপতি মানিক কারাগারে, আদালত প্রাঙ্গণে ডিম-জুতা নিক্ষেপ
দিনাজপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা
৪ আগস্ট দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে আহতের ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমসহ ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জেলার রাজবাটি এলাকার এ.বি.এম সিদ্দিকের ছেলে মো. ফাহিম ফয়সাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফী
মালার অন্য আমিরা হলেন- ইমদাদ সরকার, মোমিনুল ইসলাম, শেখ মোহাম্মদ শাহ্ আলম, আনোয়ার হোসেন, নোওশাদ ইকবাল কলিংশ, বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন, রমজান, রেজাউল ইসলাম রেজা, মো. জর্জেস সোহেল, মো. রানা, নওসাদ, সাদেকুল, মো. মামুন, মো. জাহিদি পারভেজ অপূর্ব, মো. আলাউদ্দীন, জেমী, মো. তায়েব, দুলাল হোসেন, আবু রায়হান আবু, আবু ইবনে রজ্জব, সুমন, শাজাহান নোবেল, মনিরুজ্জামান জুয়েল, সালেকিন রানা, আব্দুল্লাহ আল আমীন সৌরভ, দিপু, শাওন, সানি, মো. আবু তৈয়ব আলী দুলাল, ওয়ারেসুল হক রঞ্জু, কপিল বসাক, আইনজীবী শাহাজাদা, রহমত আলী, আহমাদ ইবনে সাইদ দিপ্ত, তানভির রেজওয়ান শান্ত, লাইজুর, রাফু, জিল্লুর, মো. আব্দুল লতিফ, মো. সুজন, মো. নুর নবিন, মো. হাসনাত আজিম লিয়ন, আতিয়ার রহমান, সৈকত পাল, মো. ফিরোজ, মো. রতন, মো. ফয়সাল হাবিব সুমন, মো. মোসাদ্দেক হোসেন রানা, মোবারক হোসেন, মশিউর রহমান, মো. হারুন উর রশিদ রায়হান, মো. সারোয়ার জাহান রাজ্য, সোহরাব, আক্তারুজ্জামান, মোস্তফা কামাল, সত্যঘোষ এবং মো. সালাউদ্দিন হক।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ হোসেন বলেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দিনাজপুর মুন্সিপাড়ায় জেনারেল হাসপাতালের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন এই মামলার বাদী ফাহিম ফয়সাল। তাকে হত্যার চেষ্টার জন্য শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিমকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নিক্সন চৌধুরী, ভাঙ্গা থানার ওসিসহ ৯৮ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা
সিলেটে চার মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর
ক্ষমা পেয়ে আরব আমিরাত থেকে ফিরলেন আরও ২৬ বাংলাদেশি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে গ্রেপ্তার হওয়া আরও ২৬ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
ইন্ডিগো এয়ার লাইন্সের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টা ৫ মিনিটে এই ২৬ বাংলাদেশি দেশে ফেরেন।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান বলেন, প্রবাসীকল্যাণ ডেস্কের মাধ্যমে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে এই ২৬ বাংলাদেশিকে পরিবহন খরচসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১৩ বাংলাদেশি
তিনি বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড ও ব্র্যাক এই প্রবাসীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরেকত্রীকরণে কাজ করবে।
এজন্য তাদের চাহিদা নিরূপণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী মনো-সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা করা হবে বলে জানান শরিফুল হাসান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় গত জুলাই মাসে ৫৭ জন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার ও শাস্তি পান।
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৫০ অনিয়মিত বাংলাদেশি
পরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে ৫৭ বাংলাদেশির ক্ষমার আদেশ দেন প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কারাদণ্ড প্রত্যাহার করা হয়। এরপর ৩১ জন তিন দফায় দেশে ফিরে আসেন। বাকি ২৬ জন শুক্রবার ফিরলেন।
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে ফিরলেন ১৪৪ অনিয়মিত বাংলাদেশি
সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ৭ দিনের রিমান্ডে
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কিশোর আব্দুল মোতালেব (১৪) হত্যা মামলায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদের আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: ফের ৫ দিনের রিমান্ডে সাবেক তথ্যমন্ত্রী ইনু
এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খোকন মিয়া আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে।
শাজাহান খানের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিরা দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্র-জনতার ওপর নিপীড়ন শুরু করতে পুলিশ, র্যাব ও ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।
এরপর পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীসহ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা-নির্যাতন চালায়। এতে শত শত মানুষ মারা যান। অনেক লোক আহত ও পঙ্গু হন।
গত ৪ আগস্ট ধানমন্ডি থানাধীন জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর আব্দুল মোতালেব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন।
আরও পড়ুন: পৃথক হত্যা মামলায় আবদুল্লাহ আল–মামুন ও শহীদুল হক রিমান্ডে
এসময় আব্দুল মোতালেবসহ অন্যান্য ছাত্র ও সাধারণ মানুষদের ওপর পুলিশ, র্যাব, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় নেতাকর্মীরা হামলা করে।
তারা শত শত সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, ককটের বিস্ফোরণ ঘটায়। এছাড়া তার হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও রাবার বুলেটও নিক্ষেপ করে।
ঘটনাস্থলে অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন। এর মধ্যে আব্দুল মোতালেব বুকে ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
এই ঘটনায় ভিকটিমের বাবা আব্দুল মতিন শেখ হাসিনাসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সাবেক অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ হিল কাফী ৮ দিনের রিমান্ডে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি
দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে এই সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। গণঅভ্যুত্থান দমন করতে পতিত সরকার নিষ্ঠুর বল প্রয়োগ করলে বহু প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিনের দুঃশাসনে বহু মানুষ অপহরণ, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ফলে বিদায়ী সরকারের প্রতি জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজমান।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব নিপীড়নের বিচার করতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৪-২৫: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ল
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সরকার যখন বিচারের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার নিয়ে জাতিসংঘকে সত্য অনুসন্ধানে আহ্বান জানিয়েছে ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ঠিক সেই সময়ে কিছু অতি উৎসাহী ও স্বার্থান্বেষী মহল আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে।
প্রতিবাদের নামে প্রতিষ্ঠান ঘেরাও, জোরপূর্বক পদত্যাগ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বেআইনি তল্লাশি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঢালাওভাবে মামলা গ্রহণে পুলিশের উপর চাপ প্রয়োগ, আদালতে আসামিকে আক্রমণ করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, সরকার সকলকে আশ্বস্ত করতে চায় যে, মামলা হওয়া মানেই যত্রতত্র গ্রেপ্তার নয়। সকল মামলার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার। সরকার সকল দুষ্কৃতিকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান চালাবে এবং দল-মত নির্বিশেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দপ্তরে জানাতে হবে, কোনভাবেই কোনো প্রতিষ্ঠান ঘেরাও বা কোনো রকম সহিংস আচরণ করা যাবে না।
এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে তল্লাশি ও মামলা গ্রহণে প্রচলিত আইন যথাযথভাবে মেনে চলা হবে এবং হয়রানিমূলক পদক্ষেপ দূর করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আন্তরিক সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: নববর্ষের অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
সীমিত পরিসরে বড়দিন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের নির্দেশনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমানের নামে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কিশোর আদিল হত্যা ও ও তার চাচাতো ভাই আপন আহতের ঘটনায় শেখ হাসিনা, শামীম ওসমান ও অয়ন ওসমানসহ ১৮২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নিহত কিশোর আদিলের চাচা ও আহত আপনের বাবা নুরুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে। এসময় অজ্ঞাতনামা ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে টিপু মুনশি
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফতুল্লায় ৪ যুবক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩০০/৪০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) রাতে এনায়েতনগর মুসলীমনগর এলাকার সুলতান খানের ছেলে রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে।
চার যুবক হলেন- মানিক (২২), রিপন (৪০), বাঁধন (২০) ও ইমন (১৯)। এদিকে এই দুই মামলায় ৯৭২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট পঞ্চবটি মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে শর্টগান, পিস্তল, চাপাতি রাম দা, হকি স্টিকসহ অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রজনতার ওপরে।
সে সময় মামলার এজাহারের ৩ নম্বর আসামি শর্টগান হতে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে এতে ৪ যুবক গুলিবিদ্ধ হয়।
এছাড়াও আসামিদের অস্ত্রের আঘাতে সেখানে আরও ৪০/৫০ জন গুরুতর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। ঘটনায় ৪ নম্বর আসামি তার অবৈধ পিস্তল দিয়ে গুলি করে।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি মামলায় মির্জা আব্বাসসহ ৫ জন খালাস
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর মামলায় আরও ৪ জন গ্রেপ্তার
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৫ জনের বিরুদ্ধে ৩ হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৫ জনের বিরুদ্ধে আরও ৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলাগুলোকে এজাহার হিসাবে গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রাজধানীর ডেমরার সানারপাড়ে মিরাজ হোসেন, মোহাম্মদপুরের বসিলায় বুড়িগঙ্গা ফিলিং স্টেশনের মেশিন অপারেটর মনসুর মিয়া এবং মিরপুরে নাহিদুলকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে এসব মামলা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেনের আদালতে মিরাজ হোসেনকে হত্যার অভিযোগে ৯২ জনকে আসামি করে মামলা করেন খোরশেদ আলম মিয়া। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডেমরা থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: সাভারে শেখ হাসিনাসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশীদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রমুখ।
একই দিনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ২২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। মোহাম্মদপুরের বসিলায় মনসুর মিয়া নিহতের ঘটনায় তার ভাই আয়নাল হক এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার প্রমুখ।
এছাড়া ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়েছে।
রাজধানীর মিরপুরে নাহিদুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় তার ভাই সবুজ এ হত্যা মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি মিরপুর থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে শেখ হাসিনাসহ ৮৫ জনের নামে হত্যা মামলা
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া উল্লেখ্যযোগ্য আসামিরা হলেন- শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডিএসসিসির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ।
মনসুর হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই মনসুর মিয়া মোহাম্মদপুরের বসিলা সেতু এলাকায় তার সন্তানকে মাদরাসা থেকে আনতে যাচ্ছিলেন। পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মিরাজ হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট মিরাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। ডেমরার সানারপাড় মেইন রোডে আসলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও র্যাবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, পেশাজীবীরা ও অন্যান্য নেতাকর্মী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগের কয়েকশ’ কর্মী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন ও আক্রমণ করেন। তারা গুলি চালাতে থাকেন। এতে মিরাজসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নাহিদুল হত্যা মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে নাহিদুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে টিসিবির পণ্যবিক্রেতার মৃত্যু: শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
রাশেদ খান মেননের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর আদাবর থানার গার্মেন্টসকর্মী রুবেল হত্যা মামলায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালত রিমান্ডের এই আদেশ দেন।
২২ আগস্ট আদাবর থানায় মামলাটি করেন রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ৪ দিনের রিমান্ডে দীপু মনি, আরিফ খান জয়ের ৫
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মিন্টু চন্দ্র বণিক আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
গত ২২ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে মেননকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ হত্যা মামলায় তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রুবেল হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট রুবেলসহ কয়েকশ’ ছাত্র-জনতা সকাল ১১টায় আদাবর থানার রিং রোড এলাকায় মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, কৃষক লীগ, মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এতে রুবেল গুলিবিদ্ধ হয়। নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
অন্যান্য আসামিরা হলেন- শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ ও ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ অনেককে।
আরও পড়ুন: ৫ দিনের রিমান্ডে রাশেদ খান মেনন
হত্যা মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে সাংবাদিক দম্পতি শাকিল-রূপা