প্রধান উপদেষ্টা
প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকদের ফোনালাপ
দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ওপর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে হামলার ঘটনার পর পত্রিকা দুইটির সম্পাদকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আলাদা আলাদা ফোনালাপে তিনি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এবং ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও তাদের সাংবাদিকদের ওপর সংঘটিত এই আকস্মিক ও নিন্দনীয় হামলার ঘটনায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই কঠিন সময়ে সরকার দৃঢ়ভাবে দুই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের পাশে রয়েছে।
ঘটনাগুলোকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস সতর্ক করে বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য মারাত্মক হুমকি এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বিপন্ন করে।
তিনি দুই সম্পাদককে পূর্ণ নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সব ধরনের সরকারি সহযোগিতার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই তাদের সঙ্গে তিনি সরাসরি সাক্ষাৎ করতে পারবেন।
৬ ঘণ্টা আগে
গুম ও হাওর সংক্রান্ত অধ্যাদেশ অনুমোদন
গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
আজকের বৈঠকে গুম প্রতিরোধসহ মোট তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টা প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া অনুমোদন এবং সুইজারল্যান্ডের বার্নে বাংলাদেশের নতুন একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদন।
গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বলা হয়েছে, এর ফলে গুম হওয়া ব্যক্তি অন্যূন ৫ বছর ধরে গুম থাকলে এবং জীবিত ফিরে না আসলে ট্রাইবুন্যাল তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ডিসাপিয়ার্ড’ বা ‘গুম’ ঘোষণা করতে পারবে।
অধ্যাদেশের ফলে সরকার ‘গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইবুনাল’-এর জন্য মানবাধিকার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতে পারবে। ভুক্তভোগী বা অভিযোগকারীও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ট্রাইবুনাল আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন এবং গুম হওয়া ব্যক্তির স্ত্রী বা তার ওপর নির্ভরশীল পরিবারের কোনো সদস্য কমিশনের পুর্বানুমতি ব্যাতিরেকে গুম হওয়া ব্যক্তির সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারবেন।
হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ অনুমোদন
বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলের ইকোসিস্টেম বিশ্বে বিরল ও অনন্য। কিন্তু নদী ও নদীপথের বাধা সৃষ্টি করে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, বিষ ও কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এবং পর্যটনের বিরূপ প্রভাবের কারণে এই ইকোসিস্টেম ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পড়ছে। আবার জলাশয় রক্ষায় আইনি কাঠামোরও অপ্রতুলতা রয়েছে।
এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও অধিক্ষেত্র সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে। হাওর ও জলাভূমি এলাকার জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের লক্ষ্যে সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারির বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, হাওর ও জলাভূমি এলাকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘সংরক্ষিত হাওর ও জলাভূমি এলাকা’ ঘোষণা করার বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়াও হাওর ও জলাভূমি এলাকায় নিষিদ্ধ কার্যক্রমের বিবরণ প্রদান, নিষিদ্ধ কার্যক্রম সংঘটিত হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা এবং উক্ত অপরাধের জন্য আরোপনীয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে।
হাওর ও জলাভূমি এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ব্যতিক্রম সাপেক্ষে অধিদপ্তরের মতামত গ্রহণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অন্যান্য কর্তৃপক্ষ, দপ্তর কিংবা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়, স্থানীয় অংশীজনদের সম্পৃক্ততা এবং সংরক্ষণ কার্যক্রমে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিধি, প্রবিধান ও নির্দেশিকা প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
বার্নে হচ্ছে নতুন দূতাবাস
এদিন সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্নে বাংলাদেশের নতুন একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকেই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বাংলাদেশের পার্মানেন্ট মিশন রয়েছে। তবে বার্নে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেরই দূতাবাস থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। এর ফলে জেনেভার স্থায়ী মিশনেই এতদিন ধরে জাতিসংঘ ও দূতাবাসের কাজগুলো একসঙ্গে সম্পন্ন করা হচ্ছিল।
সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী ও কৌশলগত অংশীদার। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বার্নে বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে একজন রাষ্ট্রদূত, ফার্স্ট সেক্রেটারি, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হবে।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন অফিস আছে।
আলোচনায় হাদির শারীরিক অবস্থা
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়েও আলোচনা হয়।
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। তার বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান নিয়মিতভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং খোঁজখবর জানাচ্ছেন।
এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল (বুধবার) েসিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন। তিনি সরাসরি হাদির চিকিৎসার দেখভাল করছেন।
১ দিন আগে
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন
মহান বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের পর ভোর ৬টা ৫৬ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধান উপদেষ্টা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করে। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। পরে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধে সংরক্ষিত দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিকসহ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা জানানোর পর ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
৩ দিন আগে
গণঅভ্যুত্থান নস্যাতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অবহিত করে রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান নস্যাৎ করার সকল প্রচেষ্টা রুখে দিতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি–এনসিপির নেতারা।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্বপরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি না হতে দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক (প্রতীকী)। এর মাধ্যমে তারা (ষড়যন্ত্রকারীরা) তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টার ভাষ্যে, ‘এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে ওসমান হাদির ওপর ন্যক্কারজনক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও এনসিপি নেতারা। এ ব্যাপারে দলগুলো সুদৃঢ় অবস্থান নেবে বলে জানান তারা। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে কঠোরভাবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনার ওপর জোর দেন তারা।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরস্পরকে দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাস্ত করব না।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে। সেই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।
৬ দিন আগে
হাদিকে গুলি: সহিংসতা ঠেকাতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চায় বিএনপি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনার মতো সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তড়িৎ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলা, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের ওপর হামলা। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা বলে আমরা মনে করি না। নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে ১০ তারিখ, তার পরের দিনই বাংলাদেশে একজন সম্ভাব্য জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর ওপরে প্রাণবিনাশী হামলা হলো। হামলার ধরন দেখে বোঝা যায়, এটা পেশাদার খুনির কাজ।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আলোচনা হলো, আমরা ফ্যাসিবাদরিবোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখব। আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক হতে পারে। সামনে নির্বাচন, বিভিন্ন রাজনৈতিক বিতর্ক হবে। কিন্তু ঐক্য বিনষ্ট হয়—আমরা ঐ পর্যায়ে বিতর্ক করব না।’
‘আমাদের চেতনা হচ্ছে জুলাই, ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনা। এটাকে আমরা ঊর্ধ্বে তুলে ধরব। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য দিয়ে একে (ফ্যাসিবাদ) প্রতিহত করব। এই জায়াগাতে আমাদের কোনো আপোস নেই।’
তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না এবং নির্বাচনকে যারা গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথ হিসেবে দেখতে চায় না… প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধের শক্তি, তাদেরই কাজ এটা (হামলা)। তারা বাংলাদেশে আছে, দেশের বাইরেও আছে।’
‘প্রতিটি ফ্যাসিবাদকে আমরা এই বার্তা দিতে চাই, এ জাতীয় কোনো ধরনের হামলা করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তোরণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আমরা সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল জাতীয় ঐক্যে অটুট থাকব এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে আমরা যেকোনো মূল্যে অর্থবহ ও বিশ্বাসযোগ্য করব। এমন একটি বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, যা সারা বিশ্বে স্বীকৃত হবে। সে জন্যে আমরা কাজ করছি।’
এ সময় হাদির ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে আয়োজিত জাতীয় প্রতিরোধ সভায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বানে বিএনপি সাড়া দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের ভেতরে যেন এমন একটি ঐক্য থাকে, যাতে করে আমরা সকল রাজনৈতিক দল ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যকে সবাই মিলে আমরা আঁকড়ে ধরি। তাহলে জাতীয়ভাবে আমরা এই সন্ত্রাসকে মোকাবিলা করতে পারব।… আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আহ্বান জানিয়েছি।’
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদুল্লাহর ওপরে প্রাণবিনাশী হামলা হয়েছে। কিন্তু তারপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ওই ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে যদি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা যেত, তাহলে হয়তো এমন ঘটনা আর ঘটাতে উৎসাহিত হতো না। যারা এগুলো করছে, তারা যখন মনে করছে, তারা নিরাপদ থাকতে পারে, তখন এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এ জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন প্রধান উপদেষ্টা নেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি—আমরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনের বিজয়নগর এলাকায় মোটরসাইকেলে এসে দুই দুর্বৃত্ত শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই চলছে তার চিকিৎসা।
হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিদের ধরতে এরই মধ্যে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাপিড অ্যানকশন ব্যাটালিয়নসহ (র্যাব) যৌথবাহিনী।
৬ দিন আগে
হাদির পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতের আশ্বাস
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ওসমান হাদির ভাই আবু বকর সিদ্দীক, বোন মাসুমা এবং ইনকিলাব মঞ্চের তিন নেতা—আব্দুল্লাহ আল জাবের, ফাতিমা তাসনিম জুমা ও মো. বোরহান উদ্দিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ সময় ওসমান হাদির সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সারা দেশ তার জন্য দোয়া করছে। তার সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিতে সবাই চেষ্টা করছে। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় যদি তাকে দেশের বাইরে পাঠাতে হয়, সেক্ষেত্রে যেখানে পাঠানোর প্রয়োজন হবে, সরকার সেখানেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।’
ওসমান হাদির বোন বলেন, ‘সে ছোটবেলা থেকেই দেশকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে। ছোটবেলা থেকেই সে বিপ্লবী। বিদ্রোহী কবিতা তার প্রিয়, সে বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করতে ভালোবাসে। তার একটি ১০ মাসের সন্তান আছে। হাদি আমাদের মেরুদণ্ড।’
তিনি বলেন, ‘ওর অনেক কাজ, ওকে বেঁচে থাকতে হবে। আপনারা বিপ্লবী সরকার, যে করেই হোক জুলাই বিপ্লবীদের বাঁচিয়ে রাখবে হবে। তা না হলে এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে।’
৬ দিন আগে
নির্বাচন পাঁচ বছরের, গণভোট শত বছরের: প্রধান উপদেষ্টা
গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই নির্বাচনকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের মাধ্যমে স্মরণীয় করে রাখতে হবে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সারা দেশের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদানকালে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এ সময় সকল জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাগণ ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন।
ইউএনওদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের নতুন করে একটি সুযোগ দিয়েছে। অন্য জেনারেশন (প্রজন্ম) এই সুযোগ পাবে না। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারব, আর যদি না পারি তাহলে জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগেও আমরা নির্বাচন দেখেছি। বিগত আমলে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, যেকোনো সুস্থ মানুষ বলবে—এটা নির্বাচন নয়, প্রতারণা হয়েছে।’
‘আগামী নির্বাচন অন্যান্য দায়িত্বের মতো নয়; বরং একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। আমরা যদি ভালোভাবে এই দায়িত্বটি পালন করতে পারি, তাহলে আগামী নির্বাচনের দিনটি জনগণের জন্যও ঐতিহাসিক হবে।’
ইউএনওদের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলেই সরকার তার দায়িত্বটি সফলভাবে পালন করতে সক্ষম হবে।’
আগামী নির্বাচন ও গণভোট—দুটিই জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য, আর গণভোট শত বছরের জন্য। এর মাধ্যমে (গণভোট) আমরা বাংলাদেশটাকে স্থায়ীভাবে পাল্টে দিতে পারি। যে নতুন বাংলাদেশ আমরা তৈরি করতে চাই, তার ভিতটা এর মাধ্যমে গড়তে পারি।’
সদ্য যোগদান করা ইউএনওদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের প্রধান দায়িত্ব হলো একটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজন করা।
এ সময় তিনি ইউএনওদের নিজ নিজ এলাকার সব পোলিং স্টেশন পরিদর্শনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ, এলাকাবাসী এবং সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন।
গণভোট বিষয়ে ভোটারদের সচেতন করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘ভোটারদের বোঝাতে হবে যে, আপনারা মন ঠিক করে আসুন—“হ্যাঁ”-তে দেবেন নাকি “না”-তে ভোট দেবেন।’
প্রধান উপদেষ্টা কর্মকর্তাদের ধাত্রীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ধাত্রী ভালো হলে জন্ম নেওয়া শিশুও ভালো হয়। তাদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সৃজনশীল হওয়ার পাশাপাশি অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার প্রদানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, নারীরা যেন ঠিকভাবে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
শীঘ্রই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন, কীভাবে, কোন কাজটি করবেন—তার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি এখন থেকেই নিন।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম এবং জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৯ দিন আগে
নারীদের সামনে রেখেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের নারীরা আমাদের দুনিয়ার সামনে অন্য স্তরে নিয়ে গেছে। তারা শুধু বাংলাদেশের নয়, তারা সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দেওয়ার মেয়ে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উদযাপন ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার এবং নারী জাগরণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়েছে।
এ বছর নারীশিক্ষায় (গবেষণা) রুভানা রাকিব, নারী অধিকারে (শ্রম অধিকার) কল্পনা আক্তার, নারী জাগরণে (ক্রীড়া) ঋতুপর্ণা চাকমা এবং মানবাধিকার ক্যাটাগরিতে নাবিলা ইদ্রিস বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যে আদর্শে বেগম রোকেয়া আমাদের নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন, অতি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছিলেন তার বক্তব্যে, তার লেখায়, আজকে যে চারজন পুরষ্কার পেলেন তারা রোকেয়ার সেই পথে আমাদের জাতিকে এগিয়ে দিলেন। এটি আরও একটি পুরস্কার নয়, এটা যুগান্তকারী পুরস্কার। তারা আমাদেরকে দুনিয়ার সামনে অন্য স্তরে নিয়ে গেছে। তারা শুধু বাংলাদেশের নয়, তারা সারা পৃথিবীর নেতৃত্ব দেয়ার মেয়ে।’
এই দিনে শুধু বেগম রোকেয়াকে স্মরণ নয়, বরং ব্যর্থতা খুঁজে বের করা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ১০০ বছর পার হলেও আরেকজন রোকেয়া সৃষ্টি করতে পারিনি। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। তিনি যেসব দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, যেসব স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন, এ স্বপ্নকে আমরা আমলে আনতে পারিনি। কথা বলেছি, কিন্তু অগ্রসর হতে পারি নাই। কেন পারলাম না, এটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’
১০ দিন আগে
৪ নারীর হাতে উঠল বেগম রোকেয়া পদক
নারীশিক্ষা, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর চারজন বিশিষ্ট নারীকে মর্যাদাপূর্ণ ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২৫’ প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিজয়ীদের হাতে এই পদক ও সম্মাননা তুলে দেন।
এবারের পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে বিশেষ চমক হিসেবে ছিলেন সাফজয়ী নারী ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা। ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের অগ্রযাত্রা ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখায় তাকে এই সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
এ বছর ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য যে চারজনকে নির্বাচিত করা হয়েছে, তারা হলেন— ক্রীড়াঙ্গনে নারীর বলিষ্ঠ অবস্থান তৈরি ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিতে ঋতুপর্ণা চাকমা, নারীশিক্ষায় গবেষণাধর্মী ও মৌলিক অবদানের জন্য রুভানা রাকিব, দীর্ঘ সময় ধরে পোশাকশ্রমিক ও নারীদের শ্রম অধিকার আদায়ে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ (নারী অধিকার শ্রেণি) কল্পনা আক্তার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সাহসী ভূমিকার জন্য নাবিলা ইদ্রিস।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নারী সমাজের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই পদক নারীদের আগামীর পথচলায় নতুন দিশা ও শক্তি জোগাবে।
৯ ডিসেম্বর, বেগম রোকেয়া দিবস। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিবছর এ দিবস পালন করা হয়।
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশজুড়ে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের আদর্শ ছড়িয়ে দিতে এবং নারীর ক্ষমতায়ন তুলে ধরতে দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
১০ দিন আগে
সবাইকে জুলাই সনদ সইয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ সই হবে আজ শুক্রবার। জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠানে সবাইকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি সব টিভি ও অনলাইন গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার আহ্বান জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এক বার্তায় বলেন, আমরা সব টিভি ও অনলাইন মিডিয়াকে আহ্বান জানাচ্ছি ১৭ অক্টোবর বিকেল ৪টায় ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারের জন্য।
তিনি বলেন, প্রতিটি বাংলাদেশি—আপনারা যেখানে যে অবস্থায়ই থাকুন না কেন, বাড়িতে কিংবা ভ্রমণে, দোকান কিংবা কারখানায়, কর্মস্থলে, ফসলের ক্ষেতে কিংবা খেলার মাঠে—অবশ্যই এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হোন!
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, আমরা দেখাতে চাই, রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত পার্থক্য সত্ত্বেও আমরা এক ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে আছি। এখন সময় আমাদের একসঙ্গে উদযাপন করার—ঐক্যের শক্তি অনুভব করার এবং গর্ব ও আশার এই ঐতিহাসিক দিন থেকে শক্তি অর্জন করার।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করবেন।
৬৩ দিন আগে