প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনি বক্তব্য হতাশাজনক: ফখরুল
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের বক্তব্যকে 'অস্পষ্ট ও হতাশাজনক' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যে নির্বাচন সংক্রান্ত বার্তা অস্পষ্ট।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপন করবেন। ' কিন্তু তিনি তা করেননি। এটা আমাদের জন্য যেমন হতাশাজনক, তেমনি জাতির জন্যও হতাশাজনক।’
ফখরুল বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে গঠিত হয়েছে, সেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি শুরু করতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। ‘খুব তাড়াতাড়ি এটা করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন মির্জা ফখরুল
নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও তার প্রেস সচিব যে 'পরস্পরবিরোধী বক্তব্য' দিয়েছেন তা নির্বাচন সংক্রান্ত সরকারের সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে ২০২৫ সালের শেষে অথবা ২০২৬ সালের শুরুর দিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এরপর মঙ্গলবার তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আশা করা যায় ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে দেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, 'তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) একটি সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন। এর চেয়ে পরিষ্কার রোডম্যাপ আর কী হতে পারে? ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার আশা করা যায়। এটি একটি পরিষ্কার রোডম্যাপ ‘
আরও পড়ুন: অসুস্থ ফখরুল, নেওয়া হয়েছে সাভার সিএমএইচে
৪ দিন আগে
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ইঙ্গিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিএনপির
জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের শুরুতে বা কৌশলগতভাবে বিলম্বিত করে ২০২৬ সালের দিকে নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ইঙ্গিত বিএনপির মধ্যে তুমুল মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
যদিও কিছু নেতা সতর্কতার সঙ্গে দীর্ঘায়িত রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা অবসানের পদক্ষেপ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সংকেতটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে অন্যরা সংশয় প্রকাশ করে এটিকে ‘রোডম্যাপ ছাড়া একটি অসম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি’ বলে অভিহিত করেছেন।
বিএনপি সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দ্রুত নির্বাচন অতি প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সমাধানের পথ তৈরি করতে পারে। আর বিলম্বিত নির্বাচন হতে পারে সময় কেনা এবং সরকারের প্রভাব বাড়ানোর কৌশলগত চেষ্টা।
বিএনপি নেতারা বলছেন, ‘সময়সীমা নিয়ে কয়েক মাসের অস্পষ্টতার পরে অবশেষে নির্বাচনের কথা শুনে ভাল লাগছে - তাড়াহুড়ো বা বিলম্বিত হোক না কেন - একটি কৌশলগত ভারসাম্যের কাজ বলে মনে হচ্ছে। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া আমরা সরকারের আসল উদ্দেশ্য অনুমান করতে পারছি।’
মিশ্র প্রতিক্রিয়া দলের মধ্যে আশা এবং সন্দেহ উভয়ই তুলে ধরে। বিএনপি নেতারা সম্ভাব্য আগাম শোডাউনের প্রস্তুতি বা দীর্ঘ অপেক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়ার চ্যালেঞ্জগুলো মূল্যায়ন করেন। এটি তাদের নিচের পর্যায়ে রাজনৈতিক ভিত্তি পরিবর্তন করতে পারে।
দলটির নেতারা বলেন, বিএনপি আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে নির্বাচনি সংস্কার কাজ শেষ করতে চায় এবং আগামী বছরের আগস্টের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। যাতে সরকারকে এক বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার সুযোগ দেওয়া হয়।
তারা আরও মনে করেন, ২০২৬ সালের শুরুর দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে প্রধান উপদেষ্টা যে উল্লেখ করেছেন, তা তার সরকারের মেয়াদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার কৌশলের অংশ হতে পারে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে সরকার সম্মত হতে পারে।
তারা বলছেন, অন্য রাজনৈতিক দলগুলো এতটুকু সময় দিতে রাজি হলে বর্তমান সরকারকে আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ দিতে পারেন তারা।
এর আগে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ২০২৫ সালের শেষের দিকে বা ২০২৬ সালের প্রথম দিকে ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে।
টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, 'বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে।’ ড. ইউনূস নির্বাচনের আগেই সব ধরনের সংস্কার সম্পন্ন করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণে আগামী নির্বাচন সম্পর্কে যা বলেছেন তাতে আমরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই, কারণ তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বা রোডম্যাপ পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করেননি। তবে আমরা কিছুটা স্বস্তি বোধ করছি এবং আশা করছি সরকার অন্তত নির্বাচন নিয়ে ভাবছে।’
তিনি বলেন, তাদের দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, সরকার আন্তরিক হলে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। ‘আমরা আরও বিশ্বাস করি, সরকারের এক বছর মেয়াদ প্রয়োজনীয় নির্বাচনি ও অন্যান্য সংস্কার করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি যৌক্তিক সময়সীমা। কিন্তু সরকারের ভেতরের কিছু লোক সংস্কারের নামে সময় কিনতে চায়, শুধু ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশন চলতি মাসের শেষের দিকে তাদের প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারে।
তিনি বলেন, ‘পরে সরকার এসব প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে এবং ঐকমত্যের মাধ্যমে সংস্কারের একটি রূপরেখা তৈরি করতে পারে। যে রাজনৈতিক সরকার নির্বাচনে জনগণের ভোটে সরকার গঠন করতে পারবে, সেই রাজনৈতিক সরকার তখন সংসদে সংস্কার কাঠামো বাস্তবায়ন করবে। এটাই প্রক্রিয়া হওয়া উচিত, কিন্তু সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার অভিপ্রায়ে এটাকে জটিল করে তুলছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে শেখ হাসিনার শাসনবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে যেসব রাজনৈতিক দল তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে তাদের সঙ্গে তারা এখন কথা বলবেন। তিনি বলেন, 'আমরা সবাই আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে কথা বলব। খুব বেশি হলে নির্বাচনের জন্য আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। আমরা মনে করি, সরকার চূড়ান্তভাবে আগামী বছরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে সম্মত হতে পারে।’
তিনি বলেন, তাদের স্থায়ী কমিটি তাদের পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে কাজ করবে।
যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশন আন্তরিক হলে আগামী ডিসেম্বরের আগেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।
তিনি বলেন, সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, কারণ সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে এবং বিদ্যমান সমস্যা থেকে উত্তরণের মাধ্যমে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।
মোশাররফ বলেন, ‘নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করা হলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে উঠবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে থাকলে তারা ষড়যন্ত্র বরদাশত করবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বুঝতে হবে, আগাম নির্বাচন তাদের জন্য এবং দেশের জনগণের জন্য লাভজনক হবে।’
দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর সরকারের কার্যক্রম তারা সতর্কতার সঙ্গে তদারকি করবেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আয়োজনে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়। সরকার আন্তরিক হলে জনগণের ইচ্ছার আলোকে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
খসরু বলেন, সরকার সংস্কারের রূপরেখা দিতে পারে। কিন্তু নির্বাচিত সরকারই সংসদের মাধ্যমে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন করবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমুন্নত রাখবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শুধু নির্বাচনের সময় সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়েছেন, 'কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ নেই।’
সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য কত সময় প্রয়োজন তা তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) স্পষ্ট করেননি। ‘আমরা আশা করি, তিনি একটি রোডম্যাপ দেবেন, যেখানে সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ের সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকব ‘
৫ দিন আগে
ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে রাতে মিসর যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
কায়রোতে ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে মিসর যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ১টায় ঢাকা ছাড়ছেন তিনি।
এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সমসাময়িক ইস্যুতে করা এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া আরও কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধান এতে যোগ দেবেন। এর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক ও পাকিস্তান। মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী ও নাইজেরিয়ার একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও এতে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
কায়রোতে অনুষ্ঠিতব্য ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘ইনভেস্টিং ইন ইয়ুথ অ্যান্ড সাপোর্টিং স্মল মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ, শেপিং টুমরোস ইকোনমি’।
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রেস সচিব
আজাদ মজুমদার বলেন, ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন ভবিষ্যতের অর্থনীতির জন্য যুব ও এমএসএমই ইস্যুতে সংস্থাটির গুরুত্বকে তুলে ধরে। এ কারণে সম্মেলনটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের তরুণদের নিয়ে বৈশ্বিক সম্মেলনে কাজ করতে তিনি সেখানে যাচ্ছেন। এমএসএমই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেই বিষয়গুলো এখানে আলোচনা হবে।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেবেন বলেও জানান উপ-প্রেস সচিব।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও জেষ্ঠ্য সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
আগামী ১৯ ডিসেম্বর ১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের কয়েকটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে এবং সেই প্রস্তুতিও চলছে। এই সপ্তাহে কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ কমিশনের ৪৮তম বৈঠকের মাধ্যমে ডি-৮ এর জন্য একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ চিহ্নিত হয়েছে।
ডি-৮ অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন, যা ডেভেলপিং-৮ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্কের মধ্যে পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতার জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থা।
আরও পড়ুন: পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের চিন্তা
৫ দিন আগে
‘শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে দেখাই প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার স্বপ্ন হলো সব শিক্ষার্থী নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। তিনি দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। এতে সেলফ সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্টের পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন সাধন হবে।’
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আমিনুল বলেন, ‘একসময় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে ভালোদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা ছিল। শুধু মেধাবীরাই ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ পেত। কম মেধাবীরা পেছনে পড়ে থাকত। কম মেধাবীদের পেছনে রাখা যাবে না, তাদেরও উঠিয়ে আনতে হবে। লটারি সিস্টেম চালু হওয়াতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন সমন্বয়ের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। এতে ভালো ও মন্দের সমন্বয় হবে বলে মনে করি।’
আরও পড়ুন: দেশকে উন্নত ও শক্তিশালী করতে আমরা বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জানা গেছে, কম মেধাবীদের উঠিয়ে আনার জন্য অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন। তারা কম মেধাবীদের উঠিয়ে আনার জন্য উদ্যেগ গ্রহণ করেছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন। কম মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে মনোযোগ ও স্কুলমুখী করার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কাজ করে যাচ্ছেন। এতে বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষাঙ্গনে বিশাল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে যেসব ছোট ছোট শিশুরা অধ্যয়ন করে তাদের অদম্য ক্রিয়েটিভিটি থাকে। তাদের এই ক্রিয়েটিভিটি জাগ্রত করতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে এবং শিক্ষকদের ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শিশুদের এই ক্রিয়েটিভিটির মূল্যায়ন করে না। প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাস করার উদ্দেশ্যে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। যার কারণে তারা শুধু প্রশ্ন মুখস্থ করে পরীক্ষা দেয়। এতে তাদের ক্রিয়েটিভিটি নষ্ট হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ও পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের শ্রদ্ধা
‘আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রিয়েটিভিটি জাগ্রত করতে হলে শিক্ষকদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের মাঝে মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। মূল্যবোধ পরিবার থেকে তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, অনেক শিশুদের মাঝে মূল্যবোধ তৈরি হয় না। এক্ষেত্রে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভূমিকা নিতে হবে। কারণ শিশুরা স্কুল ও মাদ্রাসায়ই বেশি সময় কাটায়।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাকে মানসম্মত, যুগোপযোগী ও বিশ্বমানের করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা ব্যবস্থায় বরাদ্দ অনেক বেশি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। তিনি শিক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
৬ দিন আগে
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনীতি ঠিক করার প্রতিশ্রুতি প্রধান উপদেষ্টার
অর্থনীতি ঠিক করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে আমরা সবার সহযোগিতা চাই। আমরা ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের কাছে ওয়াদা করেছেন বাজারে পণ্য সরবরাহের কোনো সংকট হবে না।’
৫৪তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, অতিরিক্ত মুনাফার লোভে যদি কেউ কৃত্রিম কোনো সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করে আমরা তাকে কঠোর হাতে দমন করব। বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে বিকল্প কৃষি বাজার চালু করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আমরা এখনো পাইনি। তবে আমার বিশ্বাস, মূল্যস্ফীতি শিগগিরই কমে আসবে।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে বাজারে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। আমরা সরবরাহ বাড়িয়ে, আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়ে, মধ্যস্বত্ব ভোগীদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে এবং বাজার তদারকির মধ্য দিয়ে জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।
পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি এখনো পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘এটা(চাঁদাবাজি বন্ধ) সম্ভব হলে আমরা আশা করি জিনিসপত্রের দাম আরও কমে আসবে। আমরা আপনাদের কষ্টে সমব্যথী। তবে আমরা জানি সরকারের কাজ কেবল সমবেদনা জানানো নয়।
সরকার জনগণের কষ্ট কমিয়ে আনতে সকল রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ড. ইউনূস।
ড. ইউনূস পূর্ববর্তী 'ফ্যাসিবাদী শাসন' থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল করতে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: পতিত স্বৈরাচার-দোসরদের বিচার সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নভেম্বরে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের মাসের তুলনায় ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। সামগ্রিকভাবে, ২০২৪ সালের জুলাই-নভেম্বর সময়কালে রপ্তানি ১৬ দশমিক ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। গত বছর একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ১৪ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বছরের হিসাবে এই প্রান্তিকে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এসবের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
ড. ইউনূস বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ভাই-বোনেরা বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। তাদের বার্ষিক মজুরি ৯ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনা করে শ্রমিক ইউনিয়ন, মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এটি নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, 'এই সূচকগুলো দেখায় যে আমাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার শুরু করেছে এবং অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।’
অধ্যাপক ইউনূস স্বীকার করে বলেন, মূল্যস্ফীতি এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। যদিও আমরা এখনো কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করতে পারিনি। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী যে মূল্যস্ফীতি শিগগিরই কমে আসবে।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের শেষে বা '২৬ সালের শুরুর দিকে নির্বাচন হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা
১ সপ্তাহ আগে
পতিত স্বৈরাচার-দোসরদের বিচার সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত: প্রধান উপদেষ্টা
৫৪তম মহান স্বাধীনতা হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত পতিত স্বৈরশাসন ও তার দোসরদের বিচার কার্যক্রম এগিয়ে চলছে এবং তা সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
৫৪তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আসামিদের বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সব ধরনের সুযোগ তারা পাবেন।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিচারের যেকোনো অংশ চাইলে যে কেউ রেকর্ড করার সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম খান সম্প্রতি আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি আইসিটি প্রসিকিউটর এবং অন্যান্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে সম্মত হয়েছেন এবং আইসিটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আলাদাভাবে আমরা গণহত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করব বলে তাকে জানিয়েছি।’
১ সপ্তাহ আগে
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার
দেশে চলমান সংস্কার উদ্যোগের অংশ হিসেবে একটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রতিষ্ঠার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
৫৪তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ইতোমধ্যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং শিগগিরই তারা তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই ছয় কমিশনের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করার দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই কমিশনের কাজ হবে রাজনৈতিক দলসহ সকল পক্ষের সঙ্গে মতামত বিনিময় করে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপন হবে সেগুলো চিহ্নিত করা এবং বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমত এই ছয়টি কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাবার পর আগামী মাসেই জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন কাজ শুরু করতে পারবে বলে আমি আশা করছি।’
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের শেষে বা '২৬ সালের শুরুর দিকে নির্বাচন হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি বলেন, এই নতুন কমিশনের প্রথম কাজ হবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যে সমস্ত সিদ্ধান্ত জরুরি, সে সমস্ত বিষয়ে তাড়াতাড়ি ঐকমত্য সৃষ্টি করা এবং সকলের সঙ্গে আলোচনা করে কোন সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়, সেই ব্যাপারে পরামর্শ চূড়ান্ত করা।
ড. ইউনূস বলেন, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বিবেচনা করে আমি এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করব। আমার সঙ্গে এই কমিশনের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। কমিশন প্রয়োজন মনে করলে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্ত (কো-অপ্ট) করতে পারবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে আগামী নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য এই কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে‘
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ও পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের শ্রদ্ধা
১ সপ্তাহ আগে
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি।
তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে দেশের কৃতি সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আগামীকাল
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে যায়।
বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগ ও শহরের বিভিন্ন স্থানে টর্চার সেলে নিয়ে যায় তারা। পরে রায়েরবাজার ও মিরপুরে নিয়ে গণহারে হত্যা করে তাদের।
এরপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
১ সপ্তাহ আগে
ক্যানসার চিকিৎসায় সার্কের গুরুত্ব দেওয়া অনুপ্রেরণামূলক: প্রধান উপদেষ্টা
সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন অনকোলোজির (এসএফও) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত হন তিনি।
এসময় তিনি সার্ক ফেডারেশন অব অনকোলোজিস্টের (এসএফও) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. এবিএমএফ করিমের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় নিজের ছোটভাই, বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক, সমালোচক ও খ্যাতনামা টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস। ভাইয়ের ক্যানসার শনাক্ত ও চিকিৎসার সময় তার পুরো পরিবারকে কী ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল সেসব অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি।
সেসময় ডা. করিম কীভাবে তার চিকিৎসায় সাহায্য করেছিলেন সেকথাও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘ক্যানসার চিকিৎসায় যে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রয়োজন, তা এখনো আমরা পাচ্ছি না। সার্ক যে ক্যানসার চিকিৎসাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে এটা অত্যন্ত জরুরি ও অনুপ্রেরণামূলক।’
দক্ষিণ-এশিয়ার দেশগুলো সার্ককে সক্রিয় করে তোলার মধ্য দিয়ে লাভবান হবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সার্ক আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণের পরপরই সার্ককে সক্রিয় করার বিষয়ে বলেছি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার কিছু ইস্যুর জন্য সার্ক সক্রিয় হচ্ছে না। আমি মনে করি, দুটি দেশের মধ্যকার সমস্যার কারণে অন্য দেশগুলোকে প্রভাবিত করা উচিত নয়। প্রতি বছর দক্ষিণ এশিয়ার নেতারা যদি সাক্ষাৎ করেন, একসঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন তাহলে গোটা বিশ্বের কাছে বার্তা যায় যে আমরা একসঙ্গে আছি। এটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে বিশ্বের কাছে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করবে এবং এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’
আজকের কনফারেন্সে সার্ককে সক্রিয় করতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে আবারও আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
১ সপ্তাহ আগে
শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
শিক্ষা, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত 'পার্বত্য জেলা পরিষদ ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদে পরিপূর্ণ পার্বত্য জেলাগুলো বাংলাদেশের সবচাইতে উন্নত অঞ্চল হতে পারত। কিন্তু সবচেয়ে পেছনে পড়ে আছে। এটা হওয়ার কথা না। আপনাদের ফসল, ফল-ফলাদি, ঐতিহ্যবাহী পণ্য দিয়ে অর্থনীতিতে আপনাদের এগিয়ে যাওয়ার কথা। পার্বত্য এলাকাগুলো দুর্গম, সেজন্য যোগাযোগ করা কঠিন হয়। আর এ কারণেই সেখানে প্রযুক্তির প্রসার দরকার। প্রযুক্তি দিয়ে এই দুরত্ব জয় করা যাবে।’
আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে কাজ করবে নয়া দিল্লি: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
নারী ফুটবল টিমে পার্বত্য জেলা থেকে আসা খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। আপনাদের এলাকার মেয়েরা কী দুর্দান্ত খেলল! কীভাবে বলবেন পিছিয়ে আছে? যারা আপনাদের এলাকা থেকে এসেছে তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। কী কঠিন পরিস্থিতি! কত কষ্ট করে পাহাড় মাড়িয়ে বাড়িতে পৌঁছাতে হয়! বাবা মা ঢাকায় আসলে কত কষ্ট করে তাদের আসতে হয়। এই প্রতিকূলতার মধ্যেই কিন্তু তারা বিশ্বজয় করে এসেছে।’
পার্বত্য এলাকার তরুণরা যেন বিশ্ব নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠে এ আশাবাদ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আপনাদের মেয়েরা ফুটবলে বিশ্বজয় এনে দিয়েছে। তরুণদের শুধু বাংলাদেশের নাগরিক না, বিশ্ব নাগরিক হতে হবে। দুর্গম এলাকা বলে পিছিয়ে থাকলে হবে না। সীমাবদ্ধতা থাকবে, কিন্তু মনের সীমারেখাকে বাড়িয়ে দিতে হবে। সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে নিজ কৃতিত্ব দিয়ে পৌঁছে যেতে হবে।’
জানুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসবে পার্বত্য অঞ্চলের তরুণদের অংশ নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের শিশুদের, তরুণদের এ উৎসবে যোগ দিতে উৎসাহ দিন। স্থানীয় খেলা হোক, রচনা প্রতিযোগিতা, গান-নাচ তারা যা পারে, যা চায় তা নিয়ে যেন অংশ নেয়। এটা সবার উৎসব। উৎসবটি বৈচিত্র্যময় হোক। সরকারি নির্দেশ তাই অংশ নেবে এরকম না। তাদেরকে আপনারা উৎসাহ দিন, যেন নিজ থেকেই তারা উদ্যমী হয়ে এ উৎসবে অংশ নেয়।’
পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ও সঠিক পদ্ধতি, প্রশিক্ষণের গুরুত্ব নিয়েও কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এক কঠিন সংকটে আছে। আপনাদের অঞ্চলে এটা আরও বেশি কঠিন। শিক্ষকদের কষ্ট হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্ট হয়। অনিয়মের পরিমাণ সারা বাংলাদেশে আছে। আপনাদের অঞ্চলে আরও বেশি করে আছে। আপনাদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগী হতে হবে। আমরাও চেষ্টা করব রাষ্ট্রীয় দিক থেকে কীভাবে কী করা যায়। পার্বত্য জেলার তরুণরা দুর্গম অঞ্চলে আছে বলে বড় শহর থেকে লেখাপড়ায় পিছিয়ে থাকবে সেটা হতে দেওয়া যাবে না। লেখাপড়ায় তাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের রূপান্তরে ইইউ'র সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
১ সপ্তাহ আগে