১৩ দফা দাবি
জবি উপাচার্যকে পদত্যাগে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা দাবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম, সম্পূর্ণ প্রক্টরিয়াল বডি ও হল প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১১ আগস্ট) দুপুর ২টায় জবির কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে সভা শেষে এ দাবি উত্থাপন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলনকারী সন্দেহে জবির ৩ শিক্ষার্থী আটক
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকাল ৩টার মধ্যে উনাদের পদত্যাগ করতে আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, অবিলম্বে জবি উপাচার্যসহ প্রশাসনে যত আওয়ামী লীগের দোসর আছে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। আর যদি তারা পদত্যাগ করতে না চান, তাহলে কীভাবে তাদের পদত্যাগ করাতে হবে তা ছাত্রসমাজের জানা আছে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছে। কিন্তু আমাদের ভিসি কেন এখনও পদত্যাগ করছেন না, তার পেছনে যদি কারও হাত থাকে ছাত্রসমাজ তাদেরও মোকাবিলা করতে প্রস্তুত।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক স্বর্ণ আক্তার রিয়া বলেন, ‘আমরা সোমবার বিকাল ৩টার মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম, হল প্রভোস্ট অধ্যাপক দীপিকা রানী, প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পুরো প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি উনারা সোমবার বিকাল ৩টার মধ্যে পদত্যাগ না করেন, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাব।’
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: পুলিশি নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন জবি সমন্বয়ক
শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা দাবিগুলো হলো-
১. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবির ভিসি, প্রোক্টরসহ সম্পূর্ণ প্রোক্টরিয়াল বডি, হল প্রভোস্ট, ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের প্রধান ও রেজিস্ট্রারকে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ক্যাম্পাসের ভেতরে লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। (ক্যাম্পাসের বাইরে তার রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে। এটা যে কারও ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্ত, ক্যাম্পাসের ভেতরে সবাই সাধারণ ছাত্র)।
৩. আন্দোলনে শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সার্বিক খরচ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
৪. আগে যারা ছাত্রলীগের পদধারী ছিলেন এবং এর ওপর ভিত্তি করে যারা ক্যাম্পাসে চাকরি পেয়েছেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকসহ যারা এখনও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যারা শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঠাট্টা-টিটকারি করেছেন তাদের আগামী দুইদিনের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যহতি নিতে হবে।
৫. আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জকসু) নীতিমালা প্রণয়ন করে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. দখল হওয়া হলগুলো অবিলম্বে দখলমুক্ত করতে হবে। এছাড়া মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পাসের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।
৮. শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
৯. ক্যাফেটেরিয়ার জন্য বাজেট বরাদ্দ রেখে খাবারের মান উন্নত করতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি নতুন ক্যাফেটেরিয়ার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
১০. নারী শিক্ষার্থীদের কমন রুমের মান উন্নত করতে হবে; নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
১১. ক্যাম্পাসের আশপাশে চাঁদাবাজি ও রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১২. পোষ্য কোটা বাতিল ও রাজনৈতিক নিয়োগ-বাণিজ্য আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে।
১৩. গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে হবে।
আরও পড়ুন: নিহত তামিমের পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা জবি প্রশাসনের
৩ মাস আগে