স্থান হবে না
মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না: নাহিদ ইসলাম
মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুততম সময়ে গতিশীল এবং আধুনিকায়ন করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
রবিবার (১৮ আগস্ট) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নতুন করে স্বপ্ন দেখছে, নতুন করে আশা-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করছে। আমরা সেই আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এই সরকারে এসেছি।’
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশকে পুনর্গঠন ও নতুন বাংলাদেশ তৈরির যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হচ্ছে, সেখানে যেন এই ধরনের স্বৈরতন্ত্র আর কোনো দিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে আপনাদের দৃষ্টি রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: ইন্টারনেট বন্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কী ধরনের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সামনের বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটুক সেটা আমরা চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফ্রিডম অব প্রেস যদি না থাকে ফ্রিডম অব স্পিচ নিশ্চিত হয় না।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে সেজন্য বিভিন্ন আইন ও বিধিনিষেধ যেগুলো নিয়ে সমালোচনা রয়েছে সেগুলো পুর্নবিবেচনা করতে হবে। যাতে বাকস্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত না হয়। আমরা চাই গণমাধ্যম যেন তার স্বাধীনতা নিয়ে জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে পারে।’
সাংবাদিকদের বেতন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘সাংবাদিকদের বেতন নিয়ে অনেক অসন্তোষ রয়েছে। আমরা যদি মেধাবীদের উৎসাহিত করতে না পারি তবে সাংবাদিকতা এগোবে না। যারা রিপোর্টার ও জুনিয়র লেভেলে কাজ করে তাদের বেতন অত্যন্ত কম, অনেক ক্ষেত্রে বেতন মানাও হয় না, এ বিষয়ে নীতিমালা প্রয়োজন।’
সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই বেদনাদায়ক ও নির্মম। এর বিচার নিয়ে কী ধরনের প্রহসন করা হয়েছে তা আমরা সবাই জানি। এ হত্যাকাণ্ডসহ সাংবাদিকদের ওপর যত রকম নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করতে সরকার ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষে যা যা করণীয় তা আমরা করব।’
স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন করার কথা ভাবা হচ্ছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের সাথে আলোচনা করেই এ বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টও পুর্নবিবেচনা করা হবে।
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, গণহত্যার ছবি এবং ভিডিও প্রকাশে সহযোগিতা করা হবে যাতে করে হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা ও পরিচয় জানা যায়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যারা অপরাধে জড়িত ছিলেন না তাদের প্রতি যেন কোনো অন্যায় না হয় সে বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে, মামলা হলে সুস্পষ্ট তদন্তের ভিত্তিতে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া আছে।’
বিশেষ কারণ ছাড়া তাদের ছবি প্রচার না করার অনুরোধ করেন উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকদের মধ্যে দলীয়করণ দেখতে চাই না।’
সেন্সর বোর্ডের কমিটিগুলো দ্রুততম সময়ে পূর্ণগঠন করা হবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘অনেকগুলো চলচ্চিত্র সেন্সর অবস্থায় আছে যদি কোনো নীতিমালা ভঙ্গ না হয়, তাহলে দ্রুততম সময় চলচ্চিত্রগুলো প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। একেবারে নীতিমালা এবং যৌক্তিকতার ভিত্তিতে যেন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’
কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি ও ব্যক্তিগত পরিচয় যেন বিবেচনায় না নেওয়া হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, আওতাধীন দপ্তর সংস্থার প্রধানগণ ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
মতবিনিময় সভার শুরুতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র, জনতা এবং সাংবাদিকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের সময় যারা ছাত্র-মানুষ হত্যা করেছে তাদের শাস্তি হবে: উপদেষ্টা নাহিদ
স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন করার কথা ভাবা হচ্ছে: তথ্য উপদেষ্টা
২ মাস আগে