সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
অর্থনৈতিক অপরাধীদের বিচারে কমিটি গঠন হচ্ছে: রিজওয়ানা
অর্থনৈতিক অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে ও তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করতে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
এরআগে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রিজওয়ানা বলেন, বৈঠকে ব্যাংকিং খাতের কিছু বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে আছে, সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ। এছাড়া রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশে এবং গ্রামীণ ব্যাংক সংশোধন অধ্যাদেশেও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই অধ্যাদেশগুলো নিয়ে আলোচনার সময় আমাদের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে অর্থনৈতিক অপরাধ যে গোষ্ঠীগুলো করেছে, তাদের তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটা কমিটি গঠন করা হচ্ছে। এ জন্য প্রাথমিক কাজগুলো হয়েছে। এখন অর্থনৈতিক অপরাধে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা তদন্ত শুরু করার জন্য আলাদা একটি কমিটি গঠন করেছি।’
জাতিসংঘের পানিপ্রবাহ কনভেনশনে সইয়ের সিদ্ধান্ত
পানিসম্পদ উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, জাতিসংঘের পানিপ্রবাহ কনভেনশনে সই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ার মধ্যে আমরাই প্রথম এই কনভেনশনে সই করতে যাচ্ছি।
‘আর আমাদের অভিন্ন নদীর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা সবসময় বলি, আমরা আন্তর্জাতিক আইনগুলোতে কেন সই করছি না। এই অভিন্ন জলরাশির পানির ব্যবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দুটো আইন আছে জাতিসংঘে। একটি হচ্ছে জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭, আরেকটি হচ্ছে ১৯৯২ কনভেনশন,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘১৯৯৭ কনভেনশন কার্যকর হয় ১৯১৪ সালে। অর্থাৎ উজানের দেশগুলোর অনীহার কারণে মাত্র ৩৬টি দেশের সই লাগত। সেই সই পেতে ১৭ বছরেরও বেশি লেগে যায়। আরেকটি আইন হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে টার্গেট করে ১৯৯২ সালে আরেকটি আইন করা হয়েছিল। এটি ২০১৬ সালে সব দেশের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।
‘এ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের প্রায় ১১টি দেশ আইনটিতে সই করেছে। তারমধ্যে বেশিরভাগ দেশ আফ্রিকান। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই কনভেনশনে আমরা অনুস্বাক্ষর করবো,’ বলেন এই উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘এরআগে যত প্রক্রিয়া ছিল, সংশ্লিষ্টজনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করা, আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনা করা, ওই কনভেনশনের সেক্রেটারিয়েট থেকে লোক আসা—সবই আমাদের হয়ে গেছে। ফলে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কনভেনশন অব দ্য প্রটেকশন এন্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটারকোর্স এন্ড ইন্টারন্যাশনাল লেক ১৯৯২-এ সই করবো। বাংলাদেশকে দিয়েই এশিয়ার দেশগুলোর স্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।’
২ দিন আগে
আমরা একসঙ্গে শোষণ ও অন্যায়মুক্ত দেশ গড়তে পারি: পরিবেশ উপদেষ্টা
সবাই মিলে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে একটি শোষণ ও অন্যায়মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে এমন একটি শোষণ ও অন্যায়মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পারি, যেখানে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। যা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হবে।’
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিআইসিসিতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কনভোকেশন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে আপনাদের সাহস ও ত্যাগের কারণে। আপনারা অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।’
তিনি শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেন— ভালো ক্যারিয়ার শেষ লক্ষ্য নয়। সমাজের কল্যাণ করাই প্রকৃত সাফল্য।
বর্তমান উন্নয়ন মডেলের পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘উন্নয়ন যেন প্রকৃতির ওপর চাপ সৃষ্টি না করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃতির ক্ষতি না করেও উন্নতি সম্ভব। এজন্য আমাদের উন্নয়নের ধারণা বদলাতে হবে।’ তিনি আইইউবিএটিকে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন মডেল প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুরোধ করেন। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানো বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পরিহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সামাজিক বনায়নের গাছ কাটা যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ পরিবেশের জন্য বড় হুমকি। এটি কমাতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ পৃথিবী নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।’
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুর রব, সমাবর্তন বক্তা যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথয়ের অধ্যাপক ড. ট্যামসিন ব্র্যাডলি, আইইউবিএটির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নারগিস ও পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী রিয়ানা আজাদ।
পরে উপদেষ্টা সমাবর্তন ডিগ্রি প্রদান করেন ও ফাউন্ডার মিয়ান গোল্ড মেডেল, আলিমুল্লাহ মিয়ান অ্যাওয়ার্ড ও ক্রেস্ট বিজয়ীদের হাতে তুলে দেন।
৬৮ দিন আগে
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সামাজিক বনায়নের গাছ কাটা যাবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা
সামাজিক বনায়নের গাছ রক্ষা করতে হবে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসব গাছ কাটা যাবে না। আকাশমণি ও ইউকেলিপটাস নয়, দেশীয় গাছ লাগাতে হবে।’
তিনি বলেছেন, ‘সামাজিক বনায়নের সুবিধাভোগীরা গাছ বিক্রির লভ্যাংশের পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড থেকে সমপরিমাণ অর্থ পাবেন।’
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রংপুর সার্কিট হাউজে বন অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যকর সমন্বয় জরুরি। বন ধ্বংস, দূষণ ও পানি সংকট মোকাবিলায় এককভাবে কাজ না করলে হবে না। খরা, বন্যা ও নদীভাঙন মোকাবিলায় জলাধার সংরক্ষণ, বন পুনর্স্থাপন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: প্রকৃতি সংরক্ষণের জায়গা হবে বোটানিক্যাল গার্ডেন: পরিবেশ উপদেষ্টা
এ সময় তিনি পাথর ভাঙা রোধ ও অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দেন। বাঁধের পাশে বেশি করে দেশীয় গাছ লাগাতে ও এই কর্মকাণ্ডে স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করতে বলেন।
সভায় বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা তাদের কার্যক্রম ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। এ সময় তারা জানান, রংপুর অঞ্চলে বন উজাড়, শিল্প ও কৃষিখাতে দূষণ এবং পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করা হচ্ছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম, বগুড়া সামাজিক বন সার্কেলের বন সংরক্ষক মুহাম্মদ সুবেদার ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবর রহমান ও পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
৬৯ দিন আগে
প্রকৃতি সংরক্ষণের জায়গা হবে বোটানিক্যাল গার্ডেন: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বিনোদনের স্থান নয়, এটি প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এসব উদ্যানকে প্রকৃতির সংরক্ষণস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। কেউ এ সংক্রান্ত কার্যকর প্রস্তাব দিলে তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক বোটানিক্যাল কনফারেন্স ২০২৪-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে তার ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। বন সংরক্ষণে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।
রিজওয়ানা হাসান জানান, শালবন পুনরুদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না, এগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও জরুরি। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।
নগরায়ণের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকাসহ দেশের নগর এলাকায় সবুজায়ন ও আরবান ফরেস্ট্রি প্রসারে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সংবিধানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অঙ্গীকার করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আরও পড়ুন: মেছো বিড়াল রক্ষা করা পরিবেশের জন্য জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদীদের উত্থানের অন্যতম কারণ এখানকার প্রকৃতিবান্ধব পরিবেশ। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরনের প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে তোলা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ড. এম. মাহফুজুর রহমান, প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর (প্রশাসন) প্রফেসর ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. এম আব্দুর রব প্রমুখ।
৭২ দিন আগে
দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে ভারত-চীনকে বাঁধ নির্মাণের আহ্বান উপদেষ্টার
ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সিয়ান নদী ও চীনের তিব্বত সীমান্তে বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে বাঁধ নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেছেন, ‘একদিকে পদ্মার অন্যদিকে তিস্তার পানি কমে গিয়েছে। এখন যদি ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে যায় তাহলে বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য হারিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘কাজেই উভয় দেশের কাছে আমরা চাইব, আমাদের দেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে কাজ করে সে বিষয়ে নিশ্চিত করা হবে।’
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সার্কিট হাউজের কক্ষে প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সিয়ান নদী ও চীনের তিব্বত সীমান্তে বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে দেশে পানি সংকট ও খড়ায় কোনো প্রভাব পড়বে কি-না? এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, চীনের তিব্বতে সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পের বিষয়ে তথ্য চেয়ে চীনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে চীন আমাদের বলেছেন, তাদের এই প্রকল্পে লোআর রিপারিয়ান (নিম্ন জলজ ভূমি এলাকা) দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
তারপরও আমরা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে তারা যেন তথ্য-উপাত্ত চায়। অন্যদিকে ভারতে যেখানে বাঁধ নির্মাণের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে অভ্যন্তরীণ বিরোধ রয়েছে।
নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের নতুন কাজের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, নদী গবেষণাকে কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেটা তাদের ভিজিবিলিটি বাড়াতে সহায়তা করবে। যেমন শিল্পপ্রবণ এলাকায় নদী কি পরিমাণ দূষিত হয়ে থাকে, ঢাকার বড় বড় নদীগুলো দূষণের বিষয়ে জিপিএস পয়েন্ট দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান জানাবে। তাহলে দাতা সংস্থা থেকে লোন নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন হবে না।
এছাড়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর ইকোসিস্টেমের ওপর কি ধরনের প্রভাব পড়বে এবং ওই বিষয়ে এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক মেঘ কেটে গেছে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু গবেষণা সরকারি পর্যায়ে হয়ে থাকে। সে গবেষণাগুলো দেখা যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য সংস্থা দিয়ে করিয়ে থাকে। কিন্তু আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে যেখানে এই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা রয়েছে সেখানে কাজ করতে বলা হবে এবং সেটা সরকারি যে সংস্থা যাকেই চুক্তি দেওয়া হোক না কেন সে বিষয় চুক্তিপত্রে লেখা থাকবে।
অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের সহিংসতার ক্ষেত্রে সকলকে ধর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন সৈয়াদা রিজওয়ানা হাসান।
এ সহিংসতার পেছনে কোনো উসকানি রয়েছে কিনা সে বিষয়ে সরকারি সংস্থা কাজ করছে বলে তিনি জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এস এম আবু হুরায়রা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক তাহমিদুল ইসলাম, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা।
৮২ দিন আগে
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; যা আগামী বর্ষাকাল পর্যন্ত কাজ করবে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণ রোধে করণীয় নিয়ে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “কিছু এলাকা ‘নো ব্রিকফিল্ড জোন’ ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বায়ুদূষণের সমাধান সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয়। তাই জনগণকে মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড নয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করুন: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
তিনি জানান, আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরোনো গাড়ি অপসারণ করা হবে এবং রাজধানীতে খোলা ট্রাক প্রবেশের বিষয়ে পুলিশকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, বায়ুদূষণের প্রধান উৎস চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নির্মাণকাজের ধুলা, ইটভাটা ও যানবাহনের ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি, আইন বাস্তবায়ন ও মনিটরিং জোরদার করার মাধ্যমে বায়ুদূষণ সমস্যার সমাধান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্মাণকাজে ধুলা কমাতে পানি ছিটানো, নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখা এবং সুরক্ষা বেষ্টনী ব্যবহারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নিয়মিত ভ্যাকুয়াম ট্রাকের মাধ্যমে রাস্তা পরিষ্কার এবং দ্রুত সড়ক মেরামতের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
পাশাপাশি, রাস্তার ধারে ঘাস লাগানো, নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য ফেলা এবং বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, খাল উদ্ধার এবং উন্মুক্ত জায়গায় খেলার মাঠ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের পরিবেশের মানোন্নয়নে সমন্বিতভাবে কাজ করা হবে।
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা ও বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিরপেক্ষ-নির্ভীক সাংবাদিকতা অপরিহার্য: রিজওয়ানা হাসান
১২৮ দিন আগে
উপকূলের পরিবেশ সুরক্ষায় সমন্বিত পরিকল্পনা অপরিহার্য: পরিবেশ উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পরিবেশবান্ধব পর্যটন উন্নয়ন ও উপকূলীয় অঞ্চল সুরক্ষায় সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকাগুলোতে কাজের জোনিং করতে হবে। কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট রুলস এবং স্পেশাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান তৈরি করতে হবে। কোস্টাল জোন পলিসি আপডেট করাও প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সেগুনবাগিচার পূর্ত ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘পায়রা বন্দর নগরী ও কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশ পর্যটনভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিরপেক্ষ-নির্ভীক সাংবাদিকতা অপরিহার্য: রিজওয়ানা হাসান
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কৃষি জমি সুরক্ষায় ল্যান্ড জোনিং ও কৃষি জমি সুরক্ষা আইনের খসড়া তৈরির কাজ চলছে। উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। ভূগর্ভস্থ পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করতে হবে। সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ এবং বনায়ন কার্যক্রম বাড়াতে হবে।’
সেমিনারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘এই প্রকল্পের প্রস্তাবনাগুলো রিভাইজড আকারে আনতে হবে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে এ অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।’
সেমিনারে প্রকল্প পরিচালক শরীফ মোহাম্মদ তারিকুজ্জামান প্রকল্পের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক, অধ্যাপক ড. ইসরাত ইসলাম এবং অধ্যাপক ড. মোসলেহ উদ্দীন হাসান প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করেন।
সেমিনারে রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ছিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব.), অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল মতিন, প্রধান প্রকৌশলী শামিম আখতারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করতে প্রস্তাবিত ‘জিরো ওয়েস্ট অ্যাকশন প্ল্যান’ নিয়ে বাংলাদেশ সাসটেইনেবিলিটি অ্যালাইন্সের সদস্যদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
১৪২ দিন আগে
টেন্ডারের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে: উপদেষ্টা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সরকারি বিভিন্ন কাজ বাস্তবায়নের জন্য টেন্ডারের (দরপত্র) মাধ্যমে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা সিন্ডিকেট হয়ে গেছে, এই সিন্ডিকেটটাকে ভাঙতে হবে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ক্রয় প্রক্রিয়ায় ‘পিপিএ-২০০৬’ এবং ‘পিপিআর-২০০৮’- এর বিধি-বিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা চিহ্নিতকরণ এবং করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক সভা শেষে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আমনের ফসলহানীতে সৃষ্ট ঘাটতি ঠেকাতে চাল আমদানি করা হচ্ছে: খাদ্য উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। এ কাজগুলোকে দলীয় ও স্থানীয় প্রভাব মুক্ত করা যাচ্ছে না। যে মন্ত্রণালয়গুলোর বেশি কাজ থাকে। আমরা বসেছিলাম এখানে কোথায় কোথায় সংশোধন আনলে আমরা এই বিষয়টাকে নির্ধারণ করতে পারব। এখানে কোন ঠিকাদার কাজ পাবে, কোন ঠিকাদার কাজ পাবে না, সেটা নিয়ে কথা হয়নি।’
তিনি বলেন, 'কোন কাজের সর্বনিম্ন একটা টাকা আমরা ঠিক করলাম। সর্বনিম্ন এ টাকার কথা গোপন থাকার কথা, কিন্তু সেটা প্রকাশ হয়ে যায়। তাই ঠিকাদাররা আর সেটার নিচে নামেন না।'
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যেভাবে টেন্ডারের (দরপত্র) মাধ্যমে কাজ চলছে এটা একটা সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। এটাকে ভাঙতে হবে। পাবলিক প্রক্রিউরমেন্টের ক্ষেত্রে কোথায় কোথায় ব্যত্যয় আছে, কোথায় কোথায় সংযোজন-বিয়োজন করলে আমরা এই সিন্ডিকেটটা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব, সেটা বোঝার জন্যই আজকের এই আলোচনা।’
পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম দূর করার প্রক্রিয়াটা আজকে শুরু হলো। দেখা যাক কতদূর কি করা যায়।
প্রকল্পের তথ্য প্রকাশ করা হয় না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আগে ত্রাণ দেওয়ার সময় একটা বোর্ডে লেখা থাকত- এত মন গম, এত মন চাল। এটাই আমরা বললাম। আপনি যে বলছেন ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প, ব্রেক ডাউনটা যাতে জেলা প্রশাসকরা প্রকৃত উপকার ভোগীদের ডেকে এনে আলোচনা করে, যে এটা হবে। জেলা প্রশাসক তার মনোনীত লোকদের ডেকে গণশুনানি করলে তো হবে না।’
অনেক সময় প্রকল্পের সময় এবং ব্যয় বাড়ানো হয়। এতে অনেকে লাভবান হয়। সেই বিষয়গুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানই অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
১৫৮ দিন আগে
২০ অক্টোবরের মধ্যে সেন্টমার্টিন নিয়ে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
সেন্টমার্টিন দ্বীপে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা, দ্বীপে রাত্রিযাপন এবং পর্যটকের সংখ্যা নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে 'সুন্দরবন বাঘ জরিপ-২০২৪' এর ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা জানান।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে করা সুপারিশ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, 'সেখানে যারা হোটেল ও জাহাজ চালায় তারা একমত হয়েছেন যে সেখানে একবার ব্যবহারযোগ্য কোনো প্লাস্টিক ঢুকতে দেওয়াই উচিত নয়। চানাচুর, চিপস, আচার- এগুলো ওখানে ঢুকতে দেওয়াই উচিত না।'
তিনি আরও বলেন, 'সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেগুলো ঐক্যমতের ভিত্তিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত কিন্তু সেগুলো কেন বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা যদি সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই তাহলে সেখানে তাদের বক্তব্য কি? তারা আমাদের বলেছেন, তাদের যে বাকি সদস্যরা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের জানাবেন। তারা বলেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে আগের সরকার একতরফাভাবে ওই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিল।'
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পানি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণে সহায়তা বাড়াবে চীন: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের রাতে থাকতে দেওয়া যাবে না, সিদ্ধান্ত ছিল নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন না- এখানে তাদের বক্তব্য কী? তারা একমত হয়েছেন যে সেখানে পর্যটক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যা নিয়ে তারা তাদের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন।'
পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘পর্যটন বিভাগেরও এ বিষয়ে বক্তব্য আছে। জাহাজ যারা চালায় তাদেরও একটা বক্তব্য আছে। আমরা হোটেল মালিক ও সেখানকার জাহাজ মালিকদের মতামত আমরা পাব। সেখানে পর্যটকদের রাত্রিযাপন ও পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করার বিষয়ে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে তাদের মতামত জানাবেন।'
সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা বলে ২০ অক্টোবরের মধ্যে সেন্টমার্টিনের ব্যাপারে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।
সেন্টমার্টিনের কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'কুকুর নিয়ে যে বিশেষজ্ঞ সংস্থাগুলো কাজ করে তারা যদি ওখানে গিয়ে কুকুর বন্ধ্যাকরণের কাজ শুরু করলে তারা (হোটেল মালিকরা) সহযোগিতা করবেন।'
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের তদন্ত দলের প্রস্তাব অনুযায়ী পুলিশে সংস্কার আনা হবে: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
১৯৪ দিন আগে
সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ১১টি
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছরের জরিপে ১১টি বাঘ বেশি পাওয়া গেছে।
একই সঙ্গে বাঘের ঘনত্ব ও শাবকের সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে 'সুন্দরবন বাঘ জরিপ-২০২৪' এর ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।
জরিপে দেখা যায়, ২০১৮ সালের জরিপে ১১৪টি বাঘ পাওয়া গিয়েছিল, নতুন জরিপে ১১টি বেড়ে ১২৫টি বাঘ পাওয়া গেছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সার্বিক বিচার বিশ্লেষণে ২০২৩-২০২৪ সালে সুন্দরবনে পরিচালিত বাঘ জরিপে বাঘের সংখ্যা ১২৫টি পাওয়া যায় এবং প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটার বনে বাঘের ঘনত্ব পাওয়া যায় ২ দশমিক ৬৪।
তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০১৫ সালের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে আধুনিক পদ্ধতি ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ জরিপ করা হয়। সেই জরিপে বাঘের সংখ্যা পাওয়া যায় ১০৬টি এবং প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ১৭। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের বাঘ জরিপে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায় এবং প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ৫৫। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে বাঘ বেড়েছে ৮টি এবং বাঘ বাড়ার শতকরা হার ছিল প্রায় ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাঘ সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৪ পালন
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে তৃতীয় পর্যায়ে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা, খুলনা, চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে চালানো বাঘ জরিপে বাঘের ছবি পাওয়া যায় ৭ হাজার ২৯৭টি। এত বিপুলসংখ্যক বাঘের ছবি এর আগে পাওয়া যায়নি।
২০২৩-২৪ সালের বাঘ জরিপে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, তবে বাঘ শাবকের সংখ্যা জরিপের ফলাফলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ ছোট থেকে পূর্ণবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাঘ শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি হয়ে থাকে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৩-২৪ সালের বাঘ জরিপে ২১টি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছে, যেখানে ২০১৫ ও ২০১৮ সালের বাঘ জরিপে মাত্র ৫টি করে বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।
বাঘ সংরক্ষণে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম নিয়েছে বলে জানান রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, বাঘসহ সুন্দরবনের অন্যান্য বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও প্রজননের উদ্দেশ্যে বনের ৫৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এলাকাকে রক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখান থেকে সব ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ নাইলনের ফেন্সিং তৈরি করা হচ্ছে।
এছাড়াও ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় বাঘ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ের জন্য বনের ভিতরে ১২টি মাটির উঁচু কিল্লা বা ঢিঁবি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ বলেন, বাঘের প্রজননের জন্য সুন্দরবনের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামীতে বাঘের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এই জরিপে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মোহসিন হোসেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে সুন্দরবনের শিশু-কিশোরদের নিয়ে ওয়াইল্ডটিমের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান
১৯৪ দিন আগে