কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর (অবসরপ্রাপ্ত) সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ে তার অফিসে সাক্ষাৎ করেন তারা।
সাক্ষাৎকালে খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু, বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ ও রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত হয়।
শুরুতে কৃষি উপদেষ্টা নরওয়ের প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে। নরওয়ের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন: এডিবি-ইডিসিএফের অর্থায়নে একসঙ্গে কৃষি গবেষণা করবে ইউজিসি ও বাকৃবি
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত জলবায়ুজনিত অভিযোজন, শস্যের বহুমুখীকরণ, এক ফসলি জমিতে দুই বা ততোধিক ফসল চাষ ও মৎস্যখাতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আগ্রহের কথা জানান।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত নাইট্রোজেন সার রপ্তানিতে তার দেশের আগ্রহের কথা জানালে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, দেশে সারের চাহিদা রয়েছে। আমরা নিয়মিত বিভিন্ন দেশ থেকে সার আমদানি করছি, নরওয়ে চাইলে জিটুজি বা বেসরকারি খাতের মাধ্যমে সার রপ্তানি করতে পারে।
রাষ্ট্রদূত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। এসময় উপদেষ্টা নরওয়েতে কিছু সংখক রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও পুলিশ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে না, অচিরেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গক্রমে উপদেষ্টা বলেন, কাজে যোগ না দেওয়া পুলিশের সংখ্যা অনেক কম। বিভিন্ন পদে পুলিশের নিয়োগ চলমান রয়েছে। পুলিশের মনোবল চাঙা করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান আছে। পুলিশের সংস্কারে নরওয়ে সহযোগিতায় আগ্রহী বলে রাষ্ট্রদূত জানালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ বিষয়ে পুলিশ সংস্কার কমিশনকে বলা হবে তারা যেন এ বিষয়ে যোগাযোগ করে।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় দেশে খাদ্য শস্যের উৎপাদন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শস্য নষ্টের কারণে কিছু কিছু খাদ্যশস্য কেনা হবে।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার আগ্রহ জানালে কৃষি উপদেষ্টা তাকে ধন্যবাদ জানান এবং এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় তথা সরকারেরও আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা কৃষি ও মৎস্যখাতে বাংলাদেশ থেকে তরুণ গবেষক নেওয়ার জন্য নরওয়েকে অনুরোধ করেন। রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করবেন বলে উপদেষ্টাকে আশ্বাস দেন।
এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয় ও নরওয়ে দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিজাত পণ্যের জন্য বিশেষ ট্রেন স্থগিত
২ সপ্তাহ আগে
কৃষির উন্নতি নিয়ে সরকার কাজ করছে: কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কৃষির উন্নতি নিয়ে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, কৃষকের উন্নতি না হলে কৃষির উন্নতি হবে না। আর কৃষির উন্নতি না হলে দেশের উন্নতি হবে না।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) উপদেষ্টা গাজীপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইতালির ভিসা সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, আশা উপদেষ্টা তৌহিদের
উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় আমাদের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি। এখন জনসংখ্যা বেড়েছে কিন্তু আবাদযোগ্য ভূমি বাড়েনি।
তিনি আরও বলেন, এই জমিতে দেশের ১৭ কোটিরও বেশি লোকের খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে এই কৃষিখাত। এ খাতের যথাযথ মূল্যায়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি বন্যাকবলিত এলাকায় কৃষকদের বীজ, চারা ও নগদ অর্থ পাঠানো হয়েছে। যেসব জায়গায় ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেখানে অন্য জায়গা থেকে আমনের চারা উৎপাদন করে দেওয়া হয়েছে। ২২ তারিখের পর আমন ধান আর রোপন করা যাবে না। সেসব জাগায় সরিষাসহ অন্যান্য ফসল কীভাবে চাষাবাদ করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।
বাজার সিন্ডিকেটের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার মনে হয় খুব শিগগিরই বাজার সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। যদি কোনো সিন্ডিকেট থাকে সেটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভেঙে দেবে।
আসন্ন দুর্গাপূজা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। এবারের পূজা খুব ভালোভাবে হবে। কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। এজন্য আপনাদেরও সহযোগিতা চাই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবার পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকে। এবার র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও এয়ারফোর্সও মোতায়েন করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আব্দুল্লাহ ইউছুব আকন্দ, জেলা প্রাশাসক নাফিসা আরিফীন, পুলিশ সুপার আবুল কালাম।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার অবস্থান জানে না সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
১ মাস আগে
কৃষিকে কৃষকবান্ধব করতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কৃষিকে কৃষকবান্ধব করতে হবে।
তিনি বলেন, কৃষকবান্ধব সরকার তখনই হবে যখন কৃষকরা সঠিকভাবে বীজ ও সার পাবে এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন কৃষি উপদেষ্টা।
আরও পড়ন: স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সমস্যাগুলো বুঝতে হলে দায়িত্বশীলতা বুঝতে হবে: উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, সার নিয়ে যাতে কোনো সংকট না হয় তার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কৃষকদের অবহিত করবেন, তারা যেন আতঙ্কিত না হয়।
দেশের বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার জন্য কাজ করতে উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
এছাড়া দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি খাতের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা তা অব্যাহত রাখতে সবাইকে সচেষ্ট থাকার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কৃষি খাতের অগ্রগতির মূল কৃতিত্ব কৃষকদের। কৃষকরা উৎপাদন করে ভোগান্তিতে পরে, তারা ন্যায্য দাম পায় না। এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া কৃষিখাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মত বিনিময়কালে উপদেষ্টা সার ও বীজ সরবরাহ, পতিত জমি আবাদের আওতায় আনা, শস্য বহুমুখীকরণ, ফল-ফলাদির চাষ বৃদ্ধি ও মৌসুমি ফল রপ্তানি বাড়ানো, ইউরিয়া সারের ব্যবহার হ্রাস, বন্যা পরবর্তী জমির উপযোগী ফসল চাষ, শুষ্ক এলাকাকে সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনাসহ কৃষি খাতকে আরও কার্যকর ও কৃষকবান্ধব হওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং এসব বিষয়ে অবগত হন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী।
আরও পড়ন: সরকারের উদ্দেশ্য ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করা: উপদেষ্টা
১ মাস আগে
দেশে সারের কোনো সংকট নেই: কৃষি উপদেষ্টা
দেশে সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যাপ্ত সারের মজুদ রয়েছে। তাই কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী সার কিনতে ও ব্যবহার করতে পারবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নির্ধারণ করে পুনর্বাসনের আহ্বান কৃষি উপদেষ্টার
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, বন্যার্তদের পুনর্বাসনে গৃহীত পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) কার্যক্রম সম্পর্কে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সার আমদানির প্রক্রিয়া স্বাভাবিক আছে।
তাই ভবিষ্যতে সংকট হতে পারে এ শঙ্কায় অতিরিক্ত সার কেনা বা মজুদ না করার জন্য কৃষি উপদেষ্টা আহ্বান জানান।
এসময় কৃষি উপদেষ্টা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানসহ মন্ত্রণলয়, দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও প্রধানরা।
উল্লেখ্য, পত ১৬ আগস্ট থেকে আকস্মিক বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জেলাগুলোর মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর। ফসল উৎপাদনে ক্ষতির পরিমাণ ৭ লাখ ১৪ হাজার ৫১৪ মেট্রিক টন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। বন্যায় ২৩টি জেলার মোট আবাদ করা ফসলের শতকরা ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ডাক বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
বন্যায় অধিক আক্রান্ত ৭টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ-
ফেনী ৩৫ হাজার ৬৭৩ হেক্টর (৮০ শতাংশ), নোয়াখালী ৩৮ হাজার ৪৫৬ হেক্টর (৩৭ শতাংশ), কুমিল্লা ৪৯ হাজার ৬০৮ হেক্টর (৩৬ শতাংশ), লক্ষ্মীপুর ১৫ হাজার ৬২৬ হেক্টর (৩৩ শতাংশ), চট্টগ্রাম ২৩ হাজার ৯৯২ হেক্টর (১৬ শতাংশ), মৌলভীবাজার ১৫ হাজার ২২২ হেক্টর (১২ শতাংশ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৮ দশমিক ৩২৬ হেক্টর (৩৫ শতাংশ)।
বন্যায় জেলাগুলোর রোপা আমন ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০৯ হেক্টর, আউশ ৩৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর, বোনাআমন ৭৬৪ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১৪ হাজার ৯০৮ হেক্টর ও শাকসবজি ১১ হাজার ২৯০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আদা, হলুদ, আখ, পান, মরিচ, তরমুজ, পেঁপে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, টমেটো ইত্যাদি ফসল এবং ফলবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা মোকাবিলায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে রোপণের জন্য আমন ধানের বীজ বিতরণ ও বীজতলা প্রস্তুত করা, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান এবং কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় ও মনিটরিং করা হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে পুনর্বাসন কর্মসূচি বাবদ ৯টি জেলায় (কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর ও খাগড়াছড়ি) রোপা আমন চাষের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে আমন ধানের ৪০০ টন বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। উপকারভোগী কৃষক পরিবারকে ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওপি সার ও নগদ ১০০০ টাকা (মোবাইল/অনলাইন ব্যাংকিং) দেওয়া হচ্ছে। এতে ১০ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমি রোপা আমন চাষের আওতায় আসবে এবং উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ৮০ হাজার জন।
বন্যাকবলিত জেলাকে গুরুত্ব দিয়ে ৬৪ জেলায় ১২টি ফসলে (গম, ভুট্টা, সরিষা, সুর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন, পেঁয়াজ, মুগ, মসুর, খেসারি, ফেলন ও অড়হড়) রবি মৌসুমে প্রণোদনা/পুনর্বাসনের জন্য ১৬৪ দশমিক ৭৯ কোটি টাকা অর্থছাড় করা হয়েছে। যাতে ১৬ দশমিক ৪১ লাখ কৃষক উপকৃত হবে। পরবর্তীতে শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদনে জন্য ২২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা ১ দশমিক ৫ লাখ কৃষককে প্রণোদনা প্রদানের জন্য অর্থছাড় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বিভিন্ন খামারে ২২ দশমিক ৫ একর জমিতে চারা উৎপাদনের জন্য ৪ হাজার ৫০০ কেজি আমন ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। উৎপন্ন চারা দিয়ে ৪৫০ একর (১ হাজার ৩৫০ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা সম্ভব হবে।
আগামী ২০-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ২ হাজার ৫০০টি কৃষক পরিবারের কাছে রোপা আমন ধানের চারা পৌঁছাবে। যা দিয়ে ২ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে। এরমধ্যে বিএডিসির সরবরাহ করা বীজে ১ হাজার ৩২৫ বিঘা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরবরাহ করা বীজে ৩৭৫ বিঘা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সরবরাহ করা বীজে ৪৫০ বিঘা এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সরবরাহ করা বীজে ৩৫০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হবে। বিএডিসির মধুপুরস্থ খামারের ১ দশমিক ৫০ একর উঁচু জমিতে আমন ধানের বীজ রোপন করা হয়েছে। যা দ্বারা ফেনী জেলার মহিপালে অবস্থিত খামারের ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ একর (৭৫ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কুমিল্লা সেনানিবাসে ২ দশমিক ৫০ একর (৭ দশমিক ৫ বিঘা) জমিতে চারা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলার কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১ হাজার ২০০ কেজি বীজের চারা ২৪০টি কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করবে মর্মে আশ্বাস পাওয়া গেছে। বেসরকারি সংস্থা সিনজেন্টার ১৫ টন বীজ ৫ কেজি হারে ৩ হাজার কৃষক পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
২ মাস আগে
চীনের সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: উপদেষ্টা
চীন আমাদের সবচেয়ে পুরোনো ও পরীক্ষিত বন্ধু জানিয়ে কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, চীনের সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বন্যায় ৪০টিরও বেশি জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি কাটিয়ে উঠতে তিনি চীনের সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মান্টিটস্কির সাক্ষাৎ
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ থেকে আম, কাঠাল, পেয়ারাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল আমদানিতে তাদের দেশ আগ্রহী।
এছাড়া কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম আগামী মৌসুমে চীনে মৌসুমি ফল রপ্তানি করা হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানালে উপদেষ্টা তাদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা জানান।
চীনের অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতায় চলমান প্রকল্পের অফিস, স্থাপনা- সামগ্রীর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও উপদেষ্টা তা জানাতে বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমান, যুগ্মসচিব মোসম্মত জোহরা খাতুন, চীনা দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সং ইয়াং, হেড অব অ্যাডমিনেস্ট্রেশন জিয়ান ই, পুলিশ লেইজ্ন অফিসার ঝাঁও ই, পলিটিক্যাল এটাচে লিয়াং শুয়িং।
আরও পড়ুন: বন্যায় ২৭ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬ লাখ ছাড়িয়েছে: উপদেষ্টা
ভারত ফারাক্কা খুলে দিলেও নতুন কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি: উপদেষ্টা
২ মাস আগে
কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে গুণগত বীজ সরবরাহ করতে হবে। যে বীজ কৃষকের কাছে যায় সেগুলো যেন গুণগত মানসম্পন্ন হয়। বীজের মান ভালো না হলে ফসল ভালো হবে না।’
বুধবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ কথা বলেন কৃষি উপদেষ্টা।
সার প্রসঙ্গে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, ‘সারের কোনো সমস্যা নেই। কৃষকের কাছে সারটা যেন সময় মতো পৌঁছায় এটা নিশ্চিত করতে হবে। সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় সাবেক মেয়র আব্দুল খালেকসহ ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
উৎপাদন বাড়াতে বীজ ও সারের পাশাপাশি কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘যান্ত্রিকীকরণের ক্ষেত্রে কৃষকদের কর্মসংস্থানের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখতে হবে।’
উপদেষ্টা কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর ও সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থেকে কৃষকদের সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্নীতিকে কোনো ধরনের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কোনো দুর্নীতিবাজের জন্য কোনো সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না। কৃষকরা দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত হচ্ছে। মধ্যস্বত্ত্বভোগী ও অসাধু শ্রেণির জন্য কৃষক দাম পায় না। ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুধু কোটাবিরোধী আন্দোলন নয়। এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আন্দোলন।’
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে দীপু মনিসহ ৬২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৩ মাস আগে