জোইয়াও ফেলিক্স
অবশেষে ‘ঠিকানা’ খুঁজে পেলেন ফেলিক্স
আতলেতিকো মাদ্রিদে থাকতে না চাওয়ায় গত দুই মৌসুম ধরে এক প্রকার ভেসে বেড়াচ্ছিলেন পর্তুগিজ তারকা জোয়াইও ফেলিক্স। অবশেষে ২০২২-২৩ মৌসুমে ধারে খেলা স্ট্যামফোর্ড ব্রিজই হলো তার নতুন ঠিকানা।
বুধবার (২১ আগস্ট) এক বিবৃতিতে প্রিমিয়ার লিগ জানিয়েছে, ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ থেকে ২৪ বছর বয়সী এই তারকাকে দলে টেনেছে চেলসি।
দুই মৌসুম আগে ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানো ছাড়ার ইচ্ছার কথা জানানোর পর থেকেই প্রতিভাবান এই তরুণ ফুটবলারের জন্য নতুন ঠিকানা খুঁজছিল আতলেতিকো। ২০২২-২৩ মৌসুমের শেষ ছয় মাসের জন্য চেলসিতে তাকে ধারে পাঠানো হয়। সে সময় ব্লুজদের হয়ে ২০ ম্যাচ খেলে ৪ গোল করেন ফেলিক্স।
তবে মৌসুম শেষে চেলসি তাকে রাখতে না চাওয়ায় আবারও ফিরতে হয় মাদ্রিদে। এরপর গত মৌসুমে বার্সেলোনা তাকে এক মৌসুমের জন্য ধারে নেয়। মৌসুমজুড়ে কোচ শাভি এরনান্দেসের শুরুর একাদশে জায়গা করে নিতে না পারলেও বেশিরভাগ ম্যাচে তিনি নামেন বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। তারপরও কাতালুনিয়ার দলটির হয়ে ৪৪ ম্যাচ খেলে ১০ গোল করেন এই ফরোয়ার্ড।
এরপর বার্সেলোনাও তাকে পাকাপাকিভাবে দলে না টেনে মৌসুম শেষে আতলেতিকোয় পাঠিয়ে দেয়। তারপর থেকে ফের ফেলিক্সের জন্য নতুন ঠিকানা খুঁজছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি।
আরও পড়ুন: চেলসিতেই যাচ্ছেন মেসিনিয়ো!
কিছুদিন থেকেই তাকে দলে টানতে চেলসির ইচ্ছার কথা জানিয়ে আসছিলেন ট্রান্সফার গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো। এবার গুঞ্জন সত্যি করে অবশেষে স্থায়ী দলবদলে ঠিকানা খুঁজে পেলেন এই পর্তুগিজ তারকা। চেলসিতে যোগ দিয়ে তার কণ্ঠেও এ বিষয়ে স্বস্তি ঝরেছে।
চেলসির অফিশিয়াল সাইটে ফেলিক্স লিখেছেন, ‘(স্থায়ী) ঠিকানা করে নিতে এটি আমার জন্যে একটি ভালো সুযোগ।’
‘চেলসি ও বার্সায় দুটি লোনপর্ব শেষের পর আমার একটি জায়গায় স্থায়ী হওয়ার দরকার ছিল। এক্ষেত্রে চেলসির চেয়ে ভালো স্থান হতে পারে না। উন্নতি করার জন্য এই ক্লাবটি আমার কাছে একেবারে উপযুক্ত মনে হয়।’
শুধু আতলেতিকো ছাড়তেই চেলসিতে আসেননি ফেলিক্স। ক্লাবটির অনেকগুলো বিষয় তাকে গন্তব্য নির্বাচনে সহায়তা করেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
‘অনেকগুলো বিষয়ের একটু একটু করে নিয়ে আমি চেলসিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ক্লাব, প্রজেক্ট, লিগ, সমর্থক ও এখানে আমার কাটানো সময়- সবকিছু আমি পছন্দ করি। এখানে (এর আগে) যখন ছিলাম, ভালো ফল আনতে না পারলেও ওই সময়টা আমি খুব ভালো কাটিয়েছিলাম। তাই ফিরে আসতে পেরে সত্যিই আমি খুশি।’
তবে আগের ব্যর্থতা আর পেছনে ফিরে দেখতে চান না তিনি। সময়ের সঙ্গে তিনি যে নিজেও বদলেছেন, তা জানিয়ে আগামীতে আরও ভালো করার প্রত্যয় ঝরল এ তরুণের কণ্ঠে।
‘সেবারের চেয়ে এবার আমি অনেকটাই বদলেছি। এখন আমার বয়স ২৪, (আগামী) নভেম্বরে ২৫-এ পা দেব। খেলোয়াড় হিসেবে এখন নিজেকে অনেকটাই পরিণত মনে হয়। প্রিমিয়ার লিগে খেলতে আমি এখন অনেকটাই প্রস্তুত।’
নিজের সেরাটা এখনও দেখাননি জানিয়ে ফেলিক্স বলেন, এই বছরটি ভালো একটি বছর হতে চলেছে। কারণ অবশেষে আমি ঠিকানা খুঁজে পেয়েছি। তাই নতুন ঠিকানায় ফুটবলটা উপভোগ করতে চাই।’
আরও পড়ুন: আলভারেস আতলেতিকোর ডিএনএর সঙ্গে পুরোপুরি মানানসই: সিমিওনে
ফেলিক্সকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত চেলসি কোচ এনসো মারেসকাও। তিনি বলেছেন, ‘জোইয়াও (ফেলিক্স) দারুণ প্রতিভাবান। ক্লাবের সবাই আগে থেকেই তাকে চেনে। তার ভালো দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে- সে ইনসাইড, নম্বর নাইন কিংবা আউটসাইড- বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারে।’
১৯৯৯ সালে পর্তুগালের ভিসেউতে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলার মাত্র ১৭ বছর বয়সে বেনফিকার জার্সিতে পেশাদার ফুটবলে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০১৮ সালে মাত্র বেনফিকার হয়ে ওই মৌসুমে ২৬ ম্যাচে ১৫ গোল ও ৯ অ্যাসিস্ট করে ইউরোপীয় ফুটবলে সাড়া ফেলে দেন তিনি। পর্তুগিজ লিগের ওই মৌসুমের ‘গোল্ডেন বয়’ খেতাবও জোটে তার।
পরের বছর জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় ফেলিক্সের। এরপর ২০২০ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদে পাড়ি জমান তিনি। ক্লাবের রেকর্ড ফিতে ফেলিক্সকে দলে টানে আতলেতিকো। তবে দিয়েগো সিমিওনের তত্ত্বাবধায়নে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি এই প্রতিভাবান ফুটবলার।
২ মাস আগে