দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়
২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৮ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা চলমান ত্রাণ তৎপরতার হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: কমেছে গোমতী নদীর পানি, কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
এসময় অতিরিক্ত সচিব জানান, দেশের সব নদ-নদীর পানি নেমে যাচ্ছে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কোনো পূর্বাভাস নেই। এছাড়া সাম্প্রতিক বন্যায় ১২ লাখের বেশি পরিবার এবং ১১টি জেলার মোট ৫৮ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে কুমিল্লার ১২ জন, ফেনীর ২ জন, চট্টগ্রামে ৫ জন, খাগড়াছড়ির একজন, নোয়াখালীর ৬ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারের ৩ জন রয়েছেন। এছাড়া মৌলভীবাজারে নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। বন্যায় বাস্তুচ্যুতদের সহায়তার জন্য সরকার ৪ হাজার ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে এবং ৫ লাখ ৪০ হাজার ৫১০ জন মানুষ এবং ৩৯ হাজার ৫৩১টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া দুর্গতদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে মোট ৬১৯টি মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৫৯ লাখ মানুষ
এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে এবং বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সংগ্রহ করা মোট ৮৮ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, কাপড় ও পানি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (ডিডিএম) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া বন্যাকবলিত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে আকস্মিক বন্যায় ২৫ জনের মৃত্যু
২ মাস আগে
বন্যায় ২৯ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত, মারা গেছেন ২ জন: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়
চলমান বন্যায় দেশের আট জেলায় ২৯ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় মারা গেছে দুইজন।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সচিবালয়ে চলমান বন্যা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।পানিবন্দি বা ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে মোট ১ হাজার ৫৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মোট ৭৫ হাজার ৬৬৮ জন লোক এবং ৭ হাজার ৪৫৯টি পরিবারকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত সচিব।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতি অবনতি: চট্টগ্রাম থেকে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ
তিনি বলেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের মনু, খোয়াই, ধলাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে উন্নতি হতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য তুলে ধরে আলী রেজা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় এ অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরবর্তীতে উন্নতি হতে পারে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ৫০ উপজেলা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন ৩৫৭টি। আট জেলায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার ৮৪০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ২৯ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ জন।
এছাড়া ফেনীতে একজন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন মারা গেছেন। আট জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৪৪৪টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে এক সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
ফেনী জেলায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ও ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এছাড়া বিজিবিসহ আরও নৌযান আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব।
ত্রাণ কার্যক্রমের বিষয়ে- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন বলেন, বন্যা দুর্গত আট জেলায় মোট ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৩ হাজার ৬৫০ টন। এছাড়া শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১১ হাজার পিস।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বন্যার জন্য ত্রিপুরার ডুম্বুর বাঁধ দায়ী নয়: নয়াদিল্লি
২ মাস আগে