এনসো মারেসকা
সিটি-আর্সেনালের সঙ্গে লড়াই-ই করতে পারবে না চেলসি: মারেসকা
এনসো মারেসকার তত্ত্বাবধায়নে চলতি মৌসুমটা দারুণ শুরু করেছে চেলসি। দশ ম্যাচ খেলে তার সাতটি জিতেছে লন্ডনের ক্লাবটি। তবুও এবার ম্যানচেস্টার সিটি বা আর্সেনালের সঙ্গে লড়াই-ই করতে পারবে না বলে মনে করছেন এনসো মারেসকা।
চলতি মৌসুমে সিটির বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করার পর থেকে দারুণ ছন্দে রয়েছে চেলসি। তার পরের পাঁচ ম্যাচে চারটি জয় ও একটি ড্রয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে উঠে এসেছে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটি। টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে মাত্র দুই পয়েন্টে পিছিয়ে রয়েছে তারা।
এছাড়া সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সবশেষ টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে ব্লুজরা। এ সময় তিনটি ক্লিনশিটসহ ১৭ গোল করেছে দলটি; হজম করেছে মাত্র চারটি।
গতরাতে কনফারেন্স লিগের ম্যাচে বেলজিয়ান ক্লাব গেন্টকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে তারা। ওই ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ব্লুজ বস মারেসকা।
আরও পড়ুন: মাদুয়েকের হ্যাটট্রিকে গোল উৎসব করে জয়ে ফিরল চেলসি
তার দলের যে পারফরম্যান্স, তাতে চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগসহ সম্ভাব্য শিরোপাগুলো জয়ের সম্ভাবনা দেখছেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ৪৪ বছর বয়সী এই কোচ বলেন, ‘আমার মনে হয় না যে চলতি মৌসুমে আমরা সিটি কিংবা আর্সেনালকে টক্কর দিতে পারব। আমার সত্যিই তা মনে হয় না, কারণ আমরা এখনও (পুরোপুরি) প্রস্তুত নই।’
বিষয়টির ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন এভাবে, ‘সিটির দিকে তাকান। দলটি গত ৯ বছর ধরে একই কোচের তত্ত্বাবধায়নে খেলছে; (মিকেল) আর্তেতার তত্ত্বাবধায়নে আর্সেনাল খেলছে পাঁচ বছর যাবত। যদি বড় কিছুর জন্য লড়াই করতে চান, তবে ওইরকম সময় প্রয়োজন।’
মারেসকা বলেন, ‘আর্সেনাল যখন পিএসজিকে (চ্যাম্পিয়ন্স লিগে) হারাল, তখন লুইস এনরিকেও একই কথা বলেছিলেন! সেদিক থেকে আমাদের দেখুন, মাত্র তিন মাস হয়েছে আমি (চেলসির) দায়িত্ব নিয়েছি।’
‘ফলে এই জায়গায় একটি বড় ব্যবধান রয়েছে। তাই ওইসব ক্লাবের সঙ্গে যে আমরা (এবার) লড়াই-ই করতে পারব না, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত।’
আরও পড়ুন: এনকুঙ্কুর হ্যাটট্রিকে লিগ কাপে চেলসির গোল উৎসব
তবে ধীরে ধীরে ওইসব ক্লাবগুলোর পর্যায়ে পৌঁছানোর লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তেই আমরা ওই পর্যায়ে যাওয়ার চিন্তা করছি না। আবার ঠিক কবে নাগাদ অমন হয়ে উঠতে পারব, তা-ও নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে আস্তে আস্তে সব সমস্যার সমাধান করে একটু একটু করে এগোনোই আমাদের লক্ষ্য।’
প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা শুরু হলে রোমান আব্রাহামোভিচ একপ্রকার বাধ্য হয়ে ক্লাব ছাড়ার পর শক্তিশালী দলগঠনে গত পাঁচ মৌসুম ধরে দলবদলে টাকার ফোয়ারা ছুটিয়েছে চেলসি। এই সময়ে দেড় বিলিয়ন ইউরোর বেশি খরচ করে যেখানে যত প্রতিভাবান তরুণ ফুটবলার পেয়েছে, তাকেই মোটা অঙ্কের বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে ক্লাবটি।
শিরোপাজয়ের আশায় এই সময়ের মধ্যে চারজন কোচ পাঁচবার ক্লাবটির দায়িত্ব নিয়েও প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। সর্বশেষ ১ জুলাই পাঁচ বছরের জন্য লেস্টার সিটি থেকে মারসেকাকে ক্লাবে নিয়ে আসে টড বোহেলি ও ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটালের নেতৃত্বাধীন চেলসি কর্তারা।
আরও পড়ুন: পালমারের চার গোল, চেলসিতে বিধ্বস্ত ব্রাইটন
তারা এত ফুটবলার কিনেছে যে মারেসকা দায়িত্ব নেওয়ার পর তার স্কোয়াডে সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৪ জন। ফলে দায়িত্ব নিয়েই তিনি খেলোয়াড় বিক্রি ও ধারে অন্য ক্লাবে পাঠানোর মাধ্যমে যতটা সম্ভব স্কোয়াড ছোট করেন। এরপর নিজের পছন্দের স্কোয়াড নিয়ে এগিয়ে চলেছেন এই কোচ।
১ মাস আগে
রাহিম স্টার্লিং পরিকল্পনায় নেই, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মারেসকা
নতুন কোচের তত্ত্বাবধায়নে বেশ কিছুদিনের অনিশ্চয়তায় পর এবার রাহিম স্টার্লিং জানতে পারলেন, চেলসিতে তিনি একেবারেই ব্রাত্য। সদ্য শুরু হওয়া মৌসুমে দলের পরিকল্পনায় তিনি যে একেবারেই নেই, তা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন কোচ এনসো মারেসকা।
তবে প্রাক-মৌসুমে চেলসির ম্যাচগুলোতে দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ছয় ম্যাচের সবকটিতে খেলানো হয়েছে স্টার্লিংকে। কিন্তু লিগের প্রথম ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষ শুরুর একাদশ তো দূরের কথা, স্কোয়াডেও রাখা হয়নি তাকে।
তাছাড়া, উয়েফা কনফারেন্স লিগের প্লে-অফ ম্যাচের আগে মূল স্কোয়াডের সঙ্গেও অনুশীলনে দেখা যায়নি স্টার্লিংকে।
চেলসিতে তার চুক্তির মেয়াদ আরও তিন বছর থাকলেও কোচের এমন সিদ্ধান্তে খানিকটা অস্পষ্টতায় ভুগছিলেন স্টার্লিং। তাই তাকে নিয়ে ক্লাবের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন ২৯ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।
এর পরিপ্রেক্ষিতে কোচ মারেসকা জানালেন, আগেই স্টার্লিংয়ের কাছে তিনি সব স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: অবশেষে ‘ঠিকানা’ খুঁজে পেলেন ফেলিক্স
বৃহস্পতিবার রাতে সার্ভেত্তের বিপক্ষে প্লে-অফ খেলতে নামবে চেলসি। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে স্টালিংয়ের প্রতি কোচ ‘নিষ্ঠুর’ আচরণ করছেন কি না, তা জানতে চান এক সাংবাদিক।
জবাবে মারেসকা বলেন, ‘আমার একদমই তা মনে হয় না। আমি সবসময় সৎ থাকার চেষ্টা করি। সিটি ম্যাচের আগেই আমি রাহিমের সঙ্গে কথা বলেছি, এটা স্পষ্ট না হলে আমি আবারও বলতে পারি।’
‘আমি তাকে পরিষ্কার বলেছি যে, এ মৌসুমে তাকে দলে সুযোগ পেতে ভুগতে হবে। আর সে কারণেই সে (সিটির বিপক্ষে) স্কোয়াডে নেই।’
ম্যানচেস্টার সিটিতে সাত বছর কাটানোর পর ২০২২ সালে ৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে স্টার্লিংকে দলে ভেড়ায় চেলসি। যে প্রত্যাশা নিয়ে তাকে এনেছিল ক্লাবটি, তিনি তা পুরোপুরি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্লুজদের জার্সিতে এ পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৮১ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৯ গোল করেছেন এই ইংলিশ ম্যান।
মারেসকা বলেন, ‘সিটি ম্যাচের আগে আমি তাকে পরিস্থিতি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছি। আমার যদি আবার তার সঙ্গে কথা বলতে হয়, আমি সেই কথাগুলোই বলব। তাকে বলার মতো নতুন কিছু আমার কাছে নেই।’
গত কয়েক মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে খেলোয়াড় কেনায় চেলসির স্কোয়াডে বর্তমানে ৪২ জন ফুটবলার রয়েছেন। তবে সবাইকে নিয়ে ভাবছেন না বলে জানালেন ৪৪ বছর বয়সী ইতালিয়ান এই কোচ।
‘আমি কোনোমতেই ৪২-৪৩ জন খেলোয়াড় নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি না। আপনি বলতে পারেন যে, আমাদের স্কোয়াডে এত খেলোয়াড় রয়েছে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তাদের ১৫ জনেরও বেশি আলাদাভাবে অনুশীলন করছে। তারা (আমার) দলে নেই। তাই বাইরে থেকে যতটা জটিল দেখা যায়, পরিস্থিতি ততটা জটিল নয়।’
আরও পড়ুন: চেলসি থেকে আতলেতিকো মাদ্রিদে গ্যালাগার
শুধু স্টার্লিং নয়, ইংলিশ লেফট ব্যাক বেন চিলওয়েলের ব্যাপারেও একই ধরনের কথা শোনালেন তিনি।
‘আমি বলছি না যে সে ভালো ফুটবলার নয়, তবে আমার দলে সে যথেষ্ট সুযোগ পাবে না। আমি নির্দয় নই, তবে স্রেফ সত্যিটা বলছি।’
আগামী ৩০ আগস্ট প্রিমিয়ার লিগের গ্রীষ্মকালীন দলবদল মৌসুম শেষ হচ্ছে। কোচের এমন সিদ্ধান্তের পর তাই এই সময়ের মধ্যেই অনেক খেলোয়াড় অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টায় থাকবে চেলসি।
ইএসপিএনের খবর অনুসারে, স্টার্লিকে দলে টানতে আগ্রহী ইতালির ক্লাব ইউভেন্তুস। এছাড়া আরও দুয়েকটি ক্লাবও তার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে নির্যাতনের অভিযোগ: ব্রাজিল পুলিশের তদন্তে নির্দোষ আন্তোনি
২ মাস আগে