এনজিওগুলো
বন্যা মোকাবিলায় এনজিওগুলোর দক্ষতা কাজে লাগানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
চলমান বন্যা পরিস্থিতি এবং বন্যা পরবর্তী কার্যক্রম দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলায় এনজিওগুলোর স্থানীয় জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূসকে উদ্ধৃত করে তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ‘এনজিওগুলো বাংলাদেশের শক্তি। তরুণদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সেটা করতে পারি। আমাদের সমন্বিতভাবে বন্যা মোকাবিলা করতে হবে।’
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে এনজিও প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান শফিউল আলম।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে এমন এনজিওগুলো বৈঠকে অংশ নেয়। সভায় ক্ষুদ্র ও কমিউনিটি পর্যায়ের সংগঠনসহ প্রায় ৪৪টি এনজিওকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
প্রেস সচিব বলেন, বৈঠকে সব অংশীদারের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সমন্বিতভাবে পুনর্বাসন ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
অধ্যাপক ইউনূসকে উদ্ধৃত করে আলম বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের সময় মানুষ যেভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল, একইভাবে এখনো উদ্বুদ্ধ হয়েছে দেখে আমরা অভিভূত।’
দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির চমকপ্রদ দৃশ্যের কথাও উল্লেখ করেন।
আলম বলেন, বন্যা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ, টেলিকম সংযোগ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ চালুর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, এনজিওগুলো সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ পুনর্গঠনেও এনজিওগুলো ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
এ সময় উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, রাশেদা কে চৌধুরী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের প্রধান ফারাহ কবির, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ সালেহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ে এনজিওগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
তিনি বলেন, প্রয়োজন যাচাইবাছাই করা হবে। তারা কার্যকর সমন্বয়ের দিকে মনোনিবেশ করবেন, যাতে ত্রাণ সামগ্রী প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির কাছে পৌঁছায়।
আসিফ বলেন, ‘এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন প্রয়োজন। প্রবাসীদের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের আরেকটি বিষয়েও আলোচনা হয়। সেখানে চ্যানেল তৈরির সুযোগ রয়েছে। অবশ্যই আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।’
সমন্বিত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা চাহিদা নিরূপণ শুরু করেছেন এবং চাহিদা নিরূপণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সর্বস্তরের মানুষের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিরা এগিয়ে আসছেন।
স্বাস্থ্য ও খাদ্য সংকট সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে আসিফ বলেন, 'এখন পর্যন্ত নেওয়া উদ্যোগ দেখে আমরা অভিভূত। আমরা আমাদের আইডিয়া শেয়ার করলাম। যেহেতু আমরা মাঠে কাজ করছি তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।’
জাতীয়, জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ে যারা কাজ করছেন, তাদের সম্পৃক্ত করে কিছু কর্মপরিকল্পনা ও সমন্বয়ের বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
সমন্বিত ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে আসিফ বলেন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে।
তিনি বলেন, দাতাদের সঙ্গে সমন্বয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা দাতা সংস্থাগুলোকেও আমন্ত্রণ জানাবেন।
আসিফ বলেন, যেকোনো মানবিক সংকটে তথ্য ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ-ভারত উচ্চ পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার
৩ মাস আগে