লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা চলছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা বলেন, আজকের সভায় ঢাকার আইনশৃঙ্খলা কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে, তবে আরও উন্নত করার জায়গা রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সভার সিদ্ধান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগে আপনার বলতেন, মোহাম্মদপুর একটা সময় ঝামেলাপূর্ণ এলাকা ছিল, বর্তমানে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসছে। অন্যান্য এলাকায় এই মডেলে কাজ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, রাস্তাঘাটে দোকানপাট বসে। এগুলোকে আপাতত যেন এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আমি রাস্তার কথা বলছি, ফুটপাত নয়।
তিনি বলেন, আপনাদেরকেও সহযোগিতা করতে হবে। একটা দোকান সরিয়ে দিলে কিছুক্ষণ পর আবার আরেকটা দোকান চলে আসে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে যেসব পুলিশ এসেছেন, তাদের অলিগলি চিনতে সময় লাগবে। তাদেরকে একটু সময় দিতে হবে।
তিনি বলেন, ক্রিমিনাল যেই হোক, যে দলেরই হোক, তাকে কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। সে যত বড় প্রতাপশালী হোক না কেন, ছাড় দেওয়া হবে না। চাঁদাবাজী যেন কোনো অবস্থায় না হয়।
তিনি বলেন, সড়ক দখল করে যেন কোনো দোকান না বসে সেগুলো মনিটরিং করা হবে। আপনাদেরও সহযোগিতা লাগবে। মূল সড়কে যেন অটোরিকশা না আসে, সেজন্য তাদের চার্জ দেওয়ার পথ বন্ধ করতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব।
বৈঠকে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
আরও পড়ুন: সীমান্তে কোনো শিথিলতা দেখানো যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
২ সপ্তাহ আগে
মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় নানাভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সে বিবেচনায় বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হার অনেক কম এবং দিন দিন পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটছে।’
উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে মূলত আলোচনা হয়েছে মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে। মানবাধিকার ইস্যুতে আমরা যেন তাদের সহযোগিতা করি, তারা এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছে। তাছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে উত্তরণ ও বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের কাজেও তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: যানজট নিরসনে রাস্তা ও পার্কিংয়ের স্থান বাড়ানোর নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
তিনি বলেন, মানবাধিকার প্রতিনিধিদল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের পাঠানোর ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে যাচাই-বাছাই ও স্ক্রিনিং করে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছে। তবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ যে ভালো পারফর্ম করছে, সে বিষয়ে তারা প্রশংসা করেছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া পুলিশ সংস্কার কমিশনে মানবাধিকার সংরক্ষণের বিষয়টি যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়, সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা আমাদের বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষী সুরক্ষা ও ভিকটিম সুরক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছি। যদিও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে আমাদের সাহায্য করছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এটি অনেক কম।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারে সহিংস পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আরও কিছু রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটেছে।
সেজন্য জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণে আমরা চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।
ভলকার তুর্কের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, জেনেভায় অবস্থিত অফিস অব দ্য ইউএন হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের (ওএইচসিএইচআর) এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেন, মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি, মানবাধিকার কর্মকর্তা লিভিয়া কোসেঞ্জা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম, বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ৩২ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
৩ সপ্তাহ আগে
দশমী পর্যন্ত সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দুর্গাপূজার দশমী পর্যন্ত সারাদেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এরপরও চলমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সাড়ে ১৭ কোটি লোক ৩৬৫ দিনই নিরাপদে থাকবে। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের ৩৬৫ দিনের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। আমরা নিরলসভাবে সে প্রচেষ্টায় নিয়োজিত আছি।
আরও পড়ুন: দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও উজ্জ্বল করার দায়িত্ব সব ধর্মের মানুষের: ধর্ম উপদেষ্টা
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ঢাকেশ্বরী মন্দির পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে এক আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার পূজার জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এরআগে প্রতি বছর দুর্গাপূজায় ২ থেকে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হতো। এছাড়া চলমান দুর্গাপূজায় কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের মহাসচিব সন্তোষ শর্মাসহ অন্যান্য নেতারা আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন, দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে করার লক্ষ্যে পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করা হয়েছে।
বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব।
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল।
আরও পড়ুন: প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহজবোধ্য পূর্বাভাসের উন্নয়নে কাজ করছে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
১ মাস আগে
কৃষিকে কৃষকবান্ধব করতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কৃষিকে কৃষকবান্ধব করতে হবে।
তিনি বলেন, কৃষকবান্ধব সরকার তখনই হবে যখন কৃষকরা সঠিকভাবে বীজ ও সার পাবে এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন কৃষি উপদেষ্টা।
আরও পড়ন: স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সমস্যাগুলো বুঝতে হলে দায়িত্বশীলতা বুঝতে হবে: উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, সার নিয়ে যাতে কোনো সংকট না হয় তার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কৃষকদের অবহিত করবেন, তারা যেন আতঙ্কিত না হয়।
দেশের বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার জন্য কাজ করতে উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
এছাড়া দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি খাতের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা তা অব্যাহত রাখতে সবাইকে সচেষ্ট থাকার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, কৃষি খাতের অগ্রগতির মূল কৃতিত্ব কৃষকদের। কৃষকরা উৎপাদন করে ভোগান্তিতে পরে, তারা ন্যায্য দাম পায় না। এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া কৃষিখাতে দুর্নীতি প্রতিরোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
মত বিনিময়কালে উপদেষ্টা সার ও বীজ সরবরাহ, পতিত জমি আবাদের আওতায় আনা, শস্য বহুমুখীকরণ, ফল-ফলাদির চাষ বৃদ্ধি ও মৌসুমি ফল রপ্তানি বাড়ানো, ইউরিয়া সারের ব্যবহার হ্রাস, বন্যা পরবর্তী জমির উপযোগী ফসল চাষ, শুষ্ক এলাকাকে সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনাসহ কৃষি খাতকে আরও কার্যকর ও কৃষকবান্ধব হওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং এসব বিষয়ে অবগত হন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী।
আরও পড়ন: সরকারের উদ্দেশ্য ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করা: উপদেষ্টা
১ মাস আগে
দেশে সারের কোনো সংকট নেই: কৃষি উপদেষ্টা
দেশে সারের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, দেশে ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যাপ্ত সারের মজুদ রয়েছে। তাই কৃষকরা চাহিদা অনুযায়ী সার কিনতে ও ব্যবহার করতে পারবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নির্ধারণ করে পুনর্বাসনের আহ্বান কৃষি উপদেষ্টার
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, বন্যার্তদের পুনর্বাসনে গৃহীত পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) কার্যক্রম সম্পর্কে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, সার আমদানির প্রক্রিয়া স্বাভাবিক আছে।
তাই ভবিষ্যতে সংকট হতে পারে এ শঙ্কায় অতিরিক্ত সার কেনা বা মজুদ না করার জন্য কৃষি উপদেষ্টা আহ্বান জানান।
এসময় কৃষি উপদেষ্টা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানসহ মন্ত্রণলয়, দপ্তর ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও প্রধানরা।
উল্লেখ্য, পত ১৬ আগস্ট থেকে আকস্মিক বন্যায় দেশের ২৩টি জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ জেলাগুলোর মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর। ফসল উৎপাদনে ক্ষতির পরিমাণ ৭ লাখ ১৪ হাজার ৫১৪ মেট্রিক টন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। বন্যায় ২৩টি জেলার মোট আবাদ করা ফসলের শতকরা ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ডাক বিভাগের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
বন্যায় অধিক আক্রান্ত ৭টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ-
ফেনী ৩৫ হাজার ৬৭৩ হেক্টর (৮০ শতাংশ), নোয়াখালী ৩৮ হাজার ৪৫৬ হেক্টর (৩৭ শতাংশ), কুমিল্লা ৪৯ হাজার ৬০৮ হেক্টর (৩৬ শতাংশ), লক্ষ্মীপুর ১৫ হাজার ৬২৬ হেক্টর (৩৩ শতাংশ), চট্টগ্রাম ২৩ হাজার ৯৯২ হেক্টর (১৬ শতাংশ), মৌলভীবাজার ১৫ হাজার ২২২ হেক্টর (১২ শতাংশ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৮ দশমিক ৩২৬ হেক্টর (৩৫ শতাংশ)।
বন্যায় জেলাগুলোর রোপা আমন ১ লাখ ৪১ হাজার ৬০৯ হেক্টর, আউশ ৩৮ হাজার ৬৮৯ হেক্টর, বোনাআমন ৭৬৪ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১৪ হাজার ৯০৮ হেক্টর ও শাকসবজি ১১ হাজার ২৯০ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আদা, হলুদ, আখ, পান, মরিচ, তরমুজ, পেঁপে, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, টমেটো ইত্যাদি ফসল এবং ফলবাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা মোকাবিলায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে রোপণের জন্য আমন ধানের বীজ বিতরণ ও বীজতলা প্রস্তুত করা, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ, কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান এবং কমিটির মাধ্যমে সামগ্রিক কার্যক্রম সমন্বয় ও মনিটরিং করা হচ্ছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে পুনর্বাসন কর্মসূচি বাবদ ৯টি জেলায় (কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর ও খাগড়াছড়ি) রোপা আমন চাষের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়।
এর মাধ্যমে আমন ধানের ৪০০ টন বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। উপকারভোগী কৃষক পরিবারকে ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওপি সার ও নগদ ১০০০ টাকা (মোবাইল/অনলাইন ব্যাংকিং) দেওয়া হচ্ছে। এতে ১০ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমি রোপা আমন চাষের আওতায় আসবে এবং উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ৮০ হাজার জন।
বন্যাকবলিত জেলাকে গুরুত্ব দিয়ে ৬৪ জেলায় ১২টি ফসলে (গম, ভুট্টা, সরিষা, সুর্যমুখী, চিনাবাদাম, সয়াবিন, পেঁয়াজ, মুগ, মসুর, খেসারি, ফেলন ও অড়হড়) রবি মৌসুমে প্রণোদনা/পুনর্বাসনের জন্য ১৬৪ দশমিক ৭৯ কোটি টাকা অর্থছাড় করা হয়েছে। যাতে ১৬ দশমিক ৪১ লাখ কৃষক উপকৃত হবে। পরবর্তীতে শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদনে জন্য ২২ দশমিক ৮৪ কোটি টাকা ১ দশমিক ৫ লাখ কৃষককে প্রণোদনা প্রদানের জন্য অর্থছাড় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বিভিন্ন খামারে ২২ দশমিক ৫ একর জমিতে চারা উৎপাদনের জন্য ৪ হাজার ৫০০ কেজি আমন ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। উৎপন্ন চারা দিয়ে ৪৫০ একর (১ হাজার ৩৫০ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা সম্ভব হবে।
আগামী ২০-২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি জেলায় মোট ২ হাজার ৫০০টি কৃষক পরিবারের কাছে রোপা আমন ধানের চারা পৌঁছাবে। যা দিয়ে ২ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে। এরমধ্যে বিএডিসির সরবরাহ করা বীজে ১ হাজার ৩২৫ বিঘা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরবরাহ করা বীজে ৩৭৫ বিঘা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) সরবরাহ করা বীজে ৪৫০ বিঘা এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) সরবরাহ করা বীজে ৩৫০ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হবে। বিএডিসির মধুপুরস্থ খামারের ১ দশমিক ৫০ একর উঁচু জমিতে আমন ধানের বীজ রোপন করা হয়েছে। যা দ্বারা ফেনী জেলার মহিপালে অবস্থিত খামারের ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ একর (৭৫ বিঘা) জমিতে আমন ধান আবাদ করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কুমিল্লা সেনানিবাসে ২ দশমিক ৫০ একর (৭ দশমিক ৫ বিঘা) জমিতে চারা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলার কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১ হাজার ২০০ কেজি বীজের চারা ২৪০টি কৃষক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করবে মর্মে আশ্বাস পাওয়া গেছে। বেসরকারি সংস্থা সিনজেন্টার ১৫ টন বীজ ৫ কেজি হারে ৩ হাজার কৃষক পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষিতে উৎপাদন বাড়াতে হবে: কৃষি উপদেষ্টা
২ মাস আগে
চীনের সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: উপদেষ্টা
চীন আমাদের সবচেয়ে পুরোনো ও পরীক্ষিত বন্ধু জানিয়ে কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, চীনের সঙ্গে সকল ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের বন্যায় ৪০টিরও বেশি জেলায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি কাটিয়ে উঠতে তিনি চীনের সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মান্টিটস্কির সাক্ষাৎ
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ থেকে আম, কাঠাল, পেয়ারাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল আমদানিতে তাদের দেশ আগ্রহী।
এছাড়া কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম আগামী মৌসুমে চীনে মৌসুমি ফল রপ্তানি করা হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানালে উপদেষ্টা তাদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা জানান।
চীনের অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতায় চলমান প্রকল্পের অফিস, স্থাপনা- সামগ্রীর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও উপদেষ্টা তা জানাতে বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ড. মো. মাহমুদুর রহমান, যুগ্মসচিব মোসম্মত জোহরা খাতুন, চীনা দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সং ইয়াং, হেড অব অ্যাডমিনেস্ট্রেশন জিয়ান ই, পুলিশ লেইজ্ন অফিসার ঝাঁও ই, পলিটিক্যাল এটাচে লিয়াং শুয়িং।
আরও পড়ুন: বন্যায় ২৭ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ৫৬ লাখ ছাড়িয়েছে: উপদেষ্টা
ভারত ফারাক্কা খুলে দিলেও নতুন কোনো এলাকা প্লাবিত হয়নি: উপদেষ্টা
২ মাস আগে