পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা
পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: আবেদন, পড়াশোনার খরচ, ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
একটি দেশে তখনি শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ গড়ে ওঠে, যখন সেখানে মেধা ও বুদ্ধির স্বাধীন ও সঠিক চর্চা হয়। একটি দক্ষ জনগোষ্ঠী দেশের সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে নাগরিকদের জন্য কল্যাণকর করে তুলতে পারে। এর নিরীখেই বিকশিত হয় উন্নত জীবনধারণ, যা প্রতিটি মানুষেরই কাম্য। আর এই কারণেই ইউরোপ অভিমুখী হচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তের উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীরা। বছরের পর বছর ধরে পেশাদার জনশক্তি তৈরি করে আসছে বাস্তবধর্মী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিনিধি শেনজেনভুক্ত দেশগুলো। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দেশ পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আজকের প্রবন্ধ। চলুন, পোল্যান্ডে অধ্যয়ন খরচ ও স্কলারশিপসহ ক্যারিয়ার গঠনের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পোল্যান্ডে কেন পড়তে যাবেন
উচ্চশিক্ষা লাভে এই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সদস্য রাষ্ট্রটিকে বেছে নেওয়ার নেপথ্যে প্রধান কারণ হতে পারে এর আর্থ-সামাজিক অবস্থা। মাত্র ২৯ দশমিক ১ অপরাধ সূচক নিয়ে শীর্ষ সহিংসতাহীন দেশগুলোর তালিকায় পোল্যান্ড রয়েছে ২৮ নম্বরে। পৃথিবীর শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর সারিতে
৩২ নম্বর অবস্থানে থাকা এই দেশটির বৈশ্বিক শান্তি সূচক ১ দশমিক ৬৭৮। সর্বসাকূল্যে, ১৪৯ দশমিক ৩ জীবনমান সূচক নিয়ে উন্নত জীবনধারণে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে পোলিশ জাতির অবস্থান ৩৯ নম্বর।
এরপরেই সবচেয়ে আকর্ষণীয় কারণটি হচ্ছে স্বল্প খরচে মানসম্মত শিক্ষা। এখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে প্রতি বছর গড়ে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার অধ্যয়ন ফি নেওয়া হয়। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৪ থেকে ৪ লাখ ১৮ হাজার ১৭১ টাকার (১ মার্কিন ডলার = ১১৯ দশমিক ৪৮ বাংলাদেশি টাকা) সমান। শুধু তাই নয়, পোল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের সমস্ত বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থাও করে।
কম ফি নেওয়ার পরেও শিক্ষার মানের সঙ্গে এতোটুকু আপোস করা হয়নি। বিশ্ব কিউএস র্যাংকিং-এ এর বিদ্যাপীঠগুলোর অবস্থান তারই প্রমাণ। পোল্যান্ডের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারস-এর র্যাংক ২৬২’তে। জাগিলোনিয়ান ইউনিভার্সিটি এবং ওয়ারস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি রয়েছে যথাক্রমে ৩০৪ এবং ৫৭১ নং অবস্থানে।
পোল্যান্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রমের নাম বোলোগ্না, যা গোটা ইউরোপে মেনে চলা হয়। এর ফলে এখান থেকে অর্জিত ডিগ্রিগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়। শুধু ইউরোপেই নয়, এর বাইরে বিশ্বের যে কোনো চাকরির বাজারে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে পোলিশ ডিগ্রির।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে থেকে জার্মান ভাষার আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেট পাওয়ার উপায়
পোল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনের পূর্বশর্ত
আন্ডারগ্রাজুয়েশনে ভর্তির জন্য একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রমে ১২ বছর অতিবাহিত করতে হবে। এখানে প্রতিটি চূড়ান্ত পরিক্ষায় সর্বনিম্ন ৬০ শতাংশ নাম্বার পেতে হবে। জিপিএ (গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ) পদ্ধতিতে প্রোগ্রাম অনুসারে ন্যূনতম গ্রেডের প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জিপিএ ২ দশমিক ৫ চাওয়া হয়ে থাকে।
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য আইইএলটিএস-এ প্রতিটি ব্যান্ডে ৫ দশমিক ৫ সহ সামগ্রিক স্কোর ৬ থাকতে হয়।
মাস্টার্স-এর জন্য ৩ থেকে ৪ বছরের স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে, যেখানে কোনো পরীক্ষায় ৬০ শতাংশের নিচে পাওয়া যাবে না। আইইটিএলএস-এ প্রতিটি ব্যান্ড স্কোর অবশ্যই ৬ দশমিক ৫ বা তার ওপরে থাকতে হবে।
এছাড়া ডিজাইন, মেডিকেল, বা প্রকৌশলের মত প্রোগ্রামগুলোর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যোগ্যতা পূরণের প্রয়োজন হতে পারে।
পোল্যান্ডের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদা সম্পন্ন কোর্সের তালিকা
.
গোটা ইউরোপে বহুল সমাদৃত ১০টি পোলিশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
- ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারস
- জাগিলোনিয়ান ইউনিভার্সিটি
- ওয়ারস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি
- অ্যাডাম মিকিউইচ ইউনিভার্সিটি পোজনান
- পোজনান ইউনিভার্সিটি অফ লাইফ সায়েন্সেস
- জিডান্স্ক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি
- এজিএইচ (একাডেমিয়া গরনিক্জো-হাটনিক্জা) ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
- নিকোলাস কোপার্নিকাস ইউনিভার্সিটি
- ইউনিভার্সিটি অফ রোক্ল
- রোক্ল ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি |
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষা: উপায়, খরচ ও সুযোগ-সুবিধা
পোল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নের সেরা বিষয়গুলো:
মেডিসিন, মনোবিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স, আইন, ব্যবসা ব্যবস্থাপনা, ইঞ্জিনিয়ারিং, কলা, নকশা, এবং স্থাপত্য |
৩ মাস আগে