ফরিদা আখতার
করারোপ তামাক সেবন বন্ধে একমাত্র পদ্ধতি না: ফরিদা আখতার
তামাক সেবন বন্ধে করারোপ অন্যতম কার্যকর পদ্ধতি হলেও একমাত্র পদ্ধতি নয় বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, আইনের মধ্যে তামাকের প্রচার, বিক্রয় বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সিগারেট কোম্পানিগুলো উৎসাহ এবং আকর্ষণ তৈরির ফলে তামাক সেবন এখনও কমাতে দিচ্ছে না।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সিগারেটে কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চাহিদার বিপরীতে খাদ্যদ্রব্য অন্য বিভাগে পাঠাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে: ফরিদা আখতার
উপদেষ্টা বলেন, গবেষণায় বলা হচ্ছে দেশে ৩৫.৩ শতাংশ মানুষ তামাক সেবন করে থাকেন। এর অর্থ হচ্ছে দেশে প্রতি তিন জনে একজন তামাক সেবনকারী। এসডিজির অভীষ্ট ৩.৯ এর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনার কথা বলা হলেও ২০৩০ সালের মধ্যে তা কার্যকর করতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন ও অবিলম্বে বাস্তবায়ন দরকার।
‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মধ্যে ভীতি কাজ করে যে বেশি করারোপ করলে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে যাবে। তামাক কোম্পানিগুলো রাজস্ব কমানোর জুজুর ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বহু গবেষণার পর্যবেক্ষণ হলো তামাক ব্যবহার কিছুটা কমবে তবে রাজস্ব বাড়বে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দদের তামাকবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বদানের আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা আন্দোলন করলে দেশের জনগণ আপনাদের কথা শুনবে ও আরও বেশি সচেতন হবে।
আরও পড়ুন: হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অজুহাতে ভয় দেখাচ্ছে ভারত: ফরিদা আখতার
বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক অর্থবছরগুলোতে বাংলাদেশে বাজেটে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম অল্প অল্প করে বাড়ানো হলেও বৃদ্ধির এ কৌশল কাঙ্ক্ষিত সুফল দিতে পারছে না। নিত্যপণ্যের যেভাবে দাম বেড়েছে, সিগারেটের দাম সে হারে বাড়েনি।
তারা সিগারেটের ব্যবহার কমাতে ট্যাক্স বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, সিগারেট ক্রয় ক্ষমতার বাইরে গেলে ব্যবহার অনেকাংশে কমে যাবে।
৪ দিন আগে
ইলিশের দাম মানুষের নাগালে আনতে চেষ্টা করছি: মৎস্য উপদেষ্টা
ইলিশ মাছের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) ভবনের সামনে ‘ইলিশ মাছের সরবরাহ ও মূল্য শৃঙ্খলে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের জন্য হ্রাসকৃত মূল্যে ইলিশ মাছ বিক্রয়’ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘জনসাধারণ যেন ইলিশ মাছ খেতে পারেন, সেটা যেন তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখা যায়—এ ধরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। বাজারে মধ্যস্বত্বভোগী কমলে ইলিশের দাম কমানো সম্ভব ।
আরও পড়ুন: মেঘনায় অভিযানের সময় মৎস্য কর্মকর্তার ওপর দৃর্বৃত্তের হামলা
‘বাজারে যে ব্যবস্থা আছে, তাতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম কমানো কঠিন। তবে আমরা প্রমাণ রাখতে চাই, মাছ ধরার উৎস থেকে যদি সরাসরি বিক্রয়ের জায়গায় আনতে পারি, তাহলে এটার দাম কমানো সম্ভব। আমরা বাজারের মধ্যস্বত্বভোগী কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে চাই,’ বলেন ফরিদা আখতার।
বিএফডিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সুরাইয়া আখতার জাহানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এনাম চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, বিএফডিসির পরিচালক ( অর্থ) অদ্বৈত চন্দ্র দাস, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের উপপরিচালক উম্মে হাবিবা প্রমুখ। পরে উপদেষ্টা বিএফডিসির কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
ইলিশ মাছ বিপণন কর্মসূচি বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) এবং বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন। এই কার্যক্রমের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়-ইলিশ কিনে হোন ধন্য’।
স্বল্প মূল্যের ইলিশ বিক্রির কর্মসূচিতে ৪৫০ গ্রাম থেকে ৮৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকায়।
আরও পড়ুন: হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
উদ্বোধনের পর ২০ জন ক্রেতা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার হাত থেকে মাছ ক্রয়ের সুযোগ পেয়েছেন। ক্রেতারা জানান, বাজারে অনেক বেশি দাম হওয়ায় সবশেষ কবে ইলিশ কিনেছেন তাদের মনে নেই। তবে এখন কম দামে ইলিশ কিনতে পেরে তারা খুশি।
৬ দিন আগে
শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তা হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন: উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সংবিধানে শ্রমিকদের অধিকার থাকতে হবে সর্বাগ্রে। তাই শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তা হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, মানবাধিকারের জন্য যেসব সংগঠন কাজ করছে তাদের অধিকাংশই শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলে না। শ্রমিকদের জন্য কিছু হলেও যেন শুরু করতে পারি সে লক্ষ্যে কাজ করে যাব।
গার্মেন্টস শ্রমিকসহ অনেক শ্রমিকের শোষণ আমরা চোখে দেখলেও কৃষি শ্রমিকের শোষণ আমরা চোখে দেখি না বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সিরডাপ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত ‘বৈশ্বিক মানদণ্ডের সমমান সম্পন্ন অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রম আইন এবং কৃষি ও অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির শ্রমিকদের আইনি স্বীকৃতি’ বিষয়ক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত সরকার কৃষিতে আধুনিকায়নের ব্যাপারে জোরেশোরে বললেও কৃষকের মজুরি বেশি বলে তারা হারভেস্টার মেশিন এনেছে। এর ফলে কৃষকরা বেকার হয়ে যাচ্ছে। এমনকি আগাছা পরিষ্কারের জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা যে কী ভয়াবহ সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
তিনি বলেন, ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ রোগী কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। এর কারণ মহিলারা কীটনাশক মেশাচ্ছে আর কৃষকরা তা স্প্রে করছে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না, তাই প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিত। এছাড়া কৃষি আইনে কৃষক বলে কোনো শব্দ নাই আছে কন্টাক্ট ফার্মার( চুক্তিভিত্তিক চাষি)।
আরও পড়ুন: রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, ২০১৭ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ নয় বরং শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আজিজুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম এবং দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।
৩ সপ্তাহ আগে
হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অজুহাতে ভয় দেখাচ্ছে ভারত: ফরিদা আখতার
‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন হচ্ছে’ এই কথা বলে কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত যে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে তাতে বাংলাদেশ ভয় পায় না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, ‘ শেখ হাসিনাকে সেখানে (ভারত) বসিয়ে রেখে তারা আমাদের সারাক্ষণ ভীতির মধ্যে রেখেছে, কিন্তু আমরা ভয় পাই না।’
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গণ-আকাঙক্ষা মঞ্চের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারত কি জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান ঠেকাতে পেরেছে? তারা হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশে কি রাখতে পেরেছে? তাহলে ভারতকে আমরা ভয় পাব কিসের জন্য!
তিনি বলেন, আমরা যে পরিবর্তন চেয়েছি, সেই পরিবর্তন আমাদের সন্তানেরা করেছে। তারা ভারতসহ সারা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিয়েছে গণঅভ্যুত্থান কী। যেটা কোনো রাজনৈতিক দল পারেনি, সেটা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেখিয়েছে। তার ১৫ বছরের ফ্যাসিস্টকে সরাতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: চাহিদার বিপরীতে খাদ্যদ্রব্য অন্য বিভাগে পাঠাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে: ফরিদা আখতার
এছাড়া এখন সব রাজনৈতিক দল এক হয়ে ঐক্যের কথা বলছে। এই ঐক্য আমাদের ধরে রাখতে হবে বলেও জানান উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসেনি, এটা ক্ষমতা নয়, আমরা দায়িত্বে গিয়েছি। ক্ষমতায় বসার কোনো যোগ্যতা আমাদের নেই। নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে, তারা যেন ক্ষমতায় না বসে এই চেষ্টা করতে হবে। এটাই হবে সংস্কার।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা কাউকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না। ক্ষমতা যে কী ভয়াবহ জিনিস সেটা দেখেছি। দায়িত্ব যারা নেবেন, যে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন করতে চান, তাদের আগেই বার্তাটা দিতে হবে। আপনারা ক্ষমতায় যাচ্ছেন না। আপনারা যদি দায়িত্ব নিতে চান তাহলে নির্বাচন করেন। তা না হলে নির্বাচন করার কোনো অধিকার নেই।
তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা শুধু সেনাবাহিনীর কাজ নয়। দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব। কাজেই আমরা ভীত না।
তিনি আরও বলেন, হাসিনা যদি দেশে আসে অবশ্যই তার বিচার হবে। তার বিচার হতেই হবে। এত মৃত্যু শুধু জুলাই-আগস্টে ঘটেনি। গত ১৫ বছরে কত মানুষকে গুম, খুন, যখন তখন উঠিয়ে নিয়ে গেছে। হাসিনার বিচার এই মাটিতে হবে। শুধুমাত্র বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য। এছাড়া তার এদেশে আসার কোনো অধিকার এবং ক্ষমতা নেই।
উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন তাদের অনেকে আইসিইউতে আছে। এখনও মারা যাচ্ছে। এর তালিকা বাড়ছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
গণ-আকাঙক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
আরও পড়ুন: মৎস্যজীবী-মৎস্যখাত চরম বৈষম্যের শিকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
১ মাস আগে
চাহিদার বিপরীতে খাদ্যদ্রব্য অন্য বিভাগে পাঠাতে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে: ফরিদা আখতার
রোজার সময় মাছ ও মাংসের চাহিদা বেড়ে যায় উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, চাহিদার বিপরীতে উদ্বৃত্ত খাদ্যদ্রব্য অন্য বিভাগে পাঠানোর জন্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা যাতে উপকৃত হন, এজন্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে খামারিদের সহযোগিতা করতে হবে।’
শনিবার (৩০ নভেম্বর) নীলফামারীর সৈয়দপুরে ইকু হ্যারিটেজ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট- এ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মৎস্যজীবী-মৎস্যখাত চরম বৈষম্যের শিকার: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
খামারিদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, খামারি ও ভোক্তাদের মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে খামারিরা যাতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত না হয়, এজন্য সরকার মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাতে উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
অবৈধ জাল বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবৈধ জালের জন্য শুধু জেলেদের শাস্তির ব্যবস্থা করলেই চলবে না, অবৈধ জাল তৈরির কারখানা বন্ধে প্রশাসনকে জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া সরকার জেলেদের জীবনমান উন্নয়নে আধুনিক নিবন্ধন কার্ড বিতরণে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান উপদেষ্টা।
তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করতে উপদেষ্টা বলেন, তামাক একটি নেশাজাতীয় দ্রব্য। যা মানুষের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। এজন্য তামাক চাষের বিপরীতে ভুট্টা চাষ করে গো-খাদ্য ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর গরুর ক্ষুরা রোগের কারণে অনেক খামার নষ্ট হয়। এজন্য প্রান্তিক খামারিদের গবাদি পশুর পা ও মুখের রোগ এফএমডি ভ্যাকসিন ঘাটতি পূরণে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার: ফরিদা আখতার
১ মাস আগে
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার: ফরিদা আখতার
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, 'দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে দ্রব্যমূল্য কমাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে উৎপাদন খরচের সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্য উৎপাদন খরচ ও পুরো মার্কেট ব্যবস্থার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। এ কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য’ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পোল্ট্রির বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, পোল্ট্রির দাম কমাতে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ফিড। এক্ষেত্রে ফিডের নিরাপদতাও আমাদের দেখতে হবে। কারণ ফিড নিরাপদ না হলে পোল্ট্রিও নিরাপদ হবে না।
আরও পড়ুন: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু বাকৃবি প্রশাসনের
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরও বলেন, অনেক জায়গায় মাছ ধরার ক্ষেত্রে জাল দিয়ে না ধরে কিটনাশক বা বিষ প্রয়োগ করে ধরা হচ্ছে, যা মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আমাদের শুধু খাদ্যের নিরাপদতার কথা মুখে বললেই হবে না বরং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে।
‘ওয়ান হেলথ’কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মানবস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, প্রাণীস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের একসঙ্গে কাজ না করলে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। সবাইকে ওয়ান হেলথ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে হবে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুডের আয়োজনে ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুডের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. খালেদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম; প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক; বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মি. জাকারিয়া; রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন।
এসময় বাকৃবি উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণে শুরু থেকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের গবেষণা ও শিক্ষার মাধ্যমে আমরা টেকসই কৃষি উৎপাদন, নিরাপদ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং খাদ্য সরবরাহের চেইনকে উন্নত করার জন্য কাজ করছি। বিশেষ করে আমাদের ভেটেরিনারি, কৃষি, পশুপালন, মৎস্য, কৃষি প্রকৌশল এবং কৃষি অর্থনীতি অনুষদগুলো একসাথে মিলে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে।
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর ব্রুসেলোসিস রোগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবির গবেষক দলের
২ মাস আগে
জেলেদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জেলেদেরকে যদি সুদমুক্ত ঋণ দিতে নাও পারি, তাহলে স্বল্প সুদে যাতে ঋণ দেওয়া হয় সেই ব্যবস্থা করা হবে। তবে কাজগুলো করতে আমাদের সময় দিতে হবে।
তিনি বলেন, ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে বছরে তিনবার জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হয়। এই নিষেধাজ্ঞাকালীন তাদের জন্য কিছু করা যায় কিনা বা সুযোগ সুবিধা বাড়ানো যায় কিনা সে পরিকল্পনাও রয়েছে।
আরও পড়ুন: সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে: উপদেষ্টা
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সদরের ভোলার খাল-সংলগ্ন বালুর মাঠে জেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ আয়োজিত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪’ উপলক্ষে জেলেসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনদের নিয়ে সচেতনতা সভায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের সম্পদ রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইলিশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সম্পদ। যে জেলায় ইলিশ উৎপাদন হয়, ওই জেলার মানুষ গরিব হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর নয়, ইলিশের বাড়ি ভোলায়। বাইরের জেলেদের বাংলাদেশের জলসীমায় মাছ ধরার অধিকার নেই। তাদের বিতাড়িত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মা ইলিশ রক্ষায় আইন অমান্যকারীদের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জিল্লুর রহমান, কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কমান্ডার মোহাম্মদ শাহিন মজিদ, নৌ বাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবু বক্কর সিদ্দিক, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক, নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মোল্লা এমদাদুল্লাহ।
স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব, জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ ও জেলে সর্দার বশির গাজী।
অনুষ্ঠানে জেলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ৫ শতাধিক জেলে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: প্লাস্টিক ও নদী দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: পরিবেশ উপদেষ্টা
৩ মাস আগে
আমদানিতে অনিচ্ছা, দাম কমানোতে আগ্রহী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আমদানি নয়, দেশীয় উৎপাদন বাড়ানো এবং দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াটাই বেশি জরুরি বলে মনে করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
ইউএনবিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো গোশত আমদানি করতে চাচ্ছি না। বরং গবাদিপশুর উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে গোশতের দাম কমানোর বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
ফরিদা আখতার বলেন, ‘ব্রাজিলসহ অন্যান্য দেশ থেকে নতুন করে হিমায়িত গরুর গোশত আমদানির পক্ষে একটি মহল তৎপরতা শুরু করেছে। তারা নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। আমরা কোনো গোশত আমদানি করতে চাচ্ছি না। কারণ বিদেশ থেকে এসব গোশত এসে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগবে। সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না করার কারণে অনেক ক্ষেত্রে গরুর গোশতের পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। ফলে এসব খাবারে নানা রোগ-ব্যাধি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতি বছর কোরবানির ঈদে ২০-২৫ লাখ পশু অবিক্রিত থেকে যায়। দেশে লাখ লাখ গবাদিপশুর খামারি রয়েছে। তবুও দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে গোশত আমদানি করলে প্রথমে হয়তো কম দামে পাওয়া যাবে, কিন্তু গোশতের চাবিকাঠি চলে যেতে পারে অন্য দেশের কাছে। লাখ লাখ লোক গবাদিপশু পালন করছে। এই বাজারটা নষ্ট করে ফেললে আমাদের সমাজটা কোন অবস্থায় পড়বে এটাও চিন্তা করার বিষয়।’
জনগণ যাতে স্বল্প ও ন্যায্যমূল্যে গোশত খেতে পারে এবং খামারিরা টিকে থাকতে পারে সেজন্য উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে গোশতের দাম কমানোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের মতো প্রয়োজনীয় পণ্য মানুষের কাছে সহজলভ্য করা প্রয়োজন। সেজন্য এগুলোর নিরাপদ উৎপাদন নিশ্চিত করা হবে।
সিন্ডিকেট ও করপোরেট ব্যবসায়ীদের কারণে পশু খাদ্য, গোশত-ডিমের দাম বেড়ে যায় অভিযোগ করে ফরিদা আখতার বলেন, ‘এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।’
জলাশয়ের মাছ উৎপাদনে বেশি নজর:
ফরিদা আখতার বলেন, ‘চাষের মাছ উৎপাদনে আমরা শীর্ষে বা অমুক চাষের মাছ ভালো করছে, এসব তথ্যে আমি মুগ্ধ না। আমাদের দেশি মাছ হাওর-বাঁওড় ও মুক্ত জলাশয়ের মাছ উৎপাদনের দিকে বেশি নজর দিতে চাই। দেশি তিন শতাধিক মাছ ছিল। সেগুলো ফিরিয়ে আনতে চাই। আবার মাছ, পোলট্রি ও মাংস খাতে ফিড নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন রয়েছে। এর নিরাপদ উৎপাদন নিশ্চিত করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একসময় নদী থেকেই আসত বেশির ভাগ মাছ। কিন্তু এখন মোট উৎপাদিত মাছে নদীর অংশ একেবারেই অপ্রতুল। বাংলাদেশে নদীকেন্দ্রিক জলাধার থাকলেও তা মাছ উৎপাদনে সফলভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না।নদীতে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ার পাশাপাশি কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য, নদীদূষণের কারণে মাছের উৎপাদন কমছে।’
এসব সমস্যার সমাধান পেতে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সামগ্রিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হবে বলে জানান মৎস্য উপদেষ্টা।
পশুখাদ্যের দাম কমানোর উদ্যোগ:
উপদেষ্টা বলেন, ‘খামারিদের খরচ কমাতে পশুখাদ্যের দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিলে কৃষি খাতের মতো ভর্তুকির বিষয়েও আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলছি। এই খাতের প্রান্তিক চাষি ও উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হবে। উন্নত জাত লালন-পালনকে সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি দেশীয় জাতের পশু টিকিয়ে রাখতে করণীয়গুলোও নির্ধারণ করা হবে।’
গবাদিপশুর চিকিৎসা:
ফরিদা আখতার বলেন, ‘ভেটেরিনারি হাসপাতালে মানুষ গবাদিপশুর চিকিৎসা সঠিকভাবে না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বলে শোনা যায়। এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। গবাদিপশুর চিকিৎসক সঠিক তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবহেলা অভিযোগ থাকলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাণিসম্পদ খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ:
উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে আমরা কঠোর। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হচ্ছে। এই সরকারের সময় কেউ দুর্নীতি করলে পার পাবে না। তাই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবে না। কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দেশের চাহিদা মেটানোর পর হবে ইলিশ রপ্তানি:
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রপ্তানি হবে সেটা হতে পারে না। ফলে এবার দুর্গাপূজায়ও ভারতে যাতে কোনো ইলিশ না যায় তার জন্য আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়েই ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বিশ্বের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ইলিশ বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে। ইলিশ নিয়ে গর্বের পাশাপাশি আমাদের এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ অবস্থায় ইলিশের প্রজননস্থল ও অভয়াশ্রমগুলোর নিরাপত্তা ও সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে না পারলে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রজনন মৌসুমে মা মাছ ও জাটকা ইলিশের সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। স্বল্পমেয়াদি উদ্যোগ হিসেবে আমরা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। সেখানে আমরা দেখছি, প্রচুর মাছ অবৈধভাবে পাচার হচ্ছে। বেশিরভাগই যাচ্ছে ভারতে। সেটি বন্ধে আমরা আরও কঠোর হচ্ছি। অবৈধ পথেও যাতে কোনো ইলিশ যেতে না পারে সে বিষয়ে সীমান্ত এলাকায় কঠোর থাকতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।’
স্বল্প সময়ের মধ্যে ইলিশের দাম মানুষের সাধ্যের মধ্যে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান ফরিদা আখতার।
পোলট্রি খামারিদের সহযোগিতা:
উপদেষ্টা বলেন, ‘পোলট্রি খাতে এক দিনের বাচ্চার যে দাম, সেটি কয়েকটি কোম্পানির হাতে সীমাবদ্ধ। বড় কোম্পানিগুলোর একচ্ছত্র আধিপত্য থাকায় ছোট ও ক্ষুদ্র খামারিদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে না। খামারিদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এসব খাতে নারীরা জড়িত রয়েছেন বেশি। ফলে তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারলে দেশের নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।’
বন্যায় প্রাণিসম্পদের ক্ষয়ক্ষতি:
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ঋণের কিস্তি তিন মাস স্থগিত রাখার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি বন্যাদুর্গত কুমিল্লা জেলা সরেজমিনে গিয়ে খামারিদের সাথে কথা বলেছি। এ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গবাদিপশুর আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের বিষয় আমরা ভাবছি। আকস্মিক বন্যায় মৎস্য খাতে ১ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা এবং প্রাণিসম্পদ খাতে ৪১১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পর পশুপাখির নানা ধরনের রোগ হয়। তাই প্রয়োজনীয় ওষুধ ও আর্থিক সুবিধা দিতে না পারলে খামারিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।
এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বেশ কিছু কার্যক্রম ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান ফরিদা আখতার।
তিনি আরও বলেন, ‘পশুখাদ্য সরবরাহ ও বিতরণ, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির রোগ প্রতিরোধে টিকা প্রদান এবং ঘাসের কাটিং বিতরণ করবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অধিদপ্তর। একইভাবে মৎস্য খাতেও চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পুনর্বাসন কার্যক্রম করা হবে।’
এছাড়াও সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, মৎস্য খামারগুলোকে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সহায়তা এবং চাষিদের মধ্যে পোনা বিতরণ করা হবে বলেও জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।
৪ মাস আগে