ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান
ডিসেম্বর পর্যন্ত সারের পর্যাপ্ত মজুদ আছে: কৃষি সচিব
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, দেশে ইউরিয়া-নন ইউরিয়া সারের যে মজুদ রয়েছে তা দিয়ে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো সংকট হবে না।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সার নিয়ে কোনো চিন্তার কারন নেই।
রবিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় বিএআরএফের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সবুজ, সাধারণ সম্পাদক কাওসার আজম, অর্থ সম্পাদক আয়নাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ফারুক আহমাদ আরিফ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক শওকত আলী পলাশ, কার্যনির্বাহী সদস্য মুন্না রায়হান ও হরলাল রায় সাগর উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হিলিতে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়ছে পেঁয়াজের
কৃষি সচিব বলেন, ‘সারের বর্তমান মজুদ দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মেটানো যাবে। তবে সার আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে এখনো কিছুটা সংকট রয়েছে, যেটা আমরা সমাধানে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।’
সভায় জানানো হয়, দেশে ১০ লাখ ৬৩ হাজার টন নন ইউরিয়া সার মজুদ আছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কয়েকটি ধাপে প্রণোদনা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলেও জানান কৃষি সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।
তিনি বলেন, আমরা কৃষকদের সহায়তার জন্য এখন পর্যন্ত ১৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যা কয়েকটি ধাপে কৃষি পুনর্বাসনে ব্যবহার করা হবে।
তিনি বলেন, ২৩ টি জেলার ১৪ লাখের বেশি কৃষক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মূলত ১১টি জেলায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রণোদনার বেশিরভাগই এই জেলাগুলোর কৃষকদের টার্গেট করেই দেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব জেলা এবং আশপাশের জেলাগুলোর কৃষি বিভাগের যত অব্যবহৃত জায়গা রয়েছে সব জায়গায় রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যা আমন চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: হিলিতে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম
পুনর্বাসনের আওতায় নয়টি জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৮০ হাজার কৃষককে এক বিঘা জমি চাষের জন্য বিনামূল্যে রোপা আমনের উফশী জাতের বীজ, সার সহায়তা (১০ কেজি) এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে ১ হাজার করে নগদ টাকা দেওয়া হবে বলে জানান সচিব।
তিনি বলেন, বসতবাড়িতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষের জন্য ২২টি জেলায় দেড় লাখ কৃষককে বিভিন্ন জাতের সবজির বীজ ও এক হাজার করে নগদ টাকা দেওয়া হবে।
উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা ভারী বর্ষণে গত ১৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৯ জন। যে পরিমাণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে তাতে করে ধান, সবজি, ফলমূল সহ প্রায় ১০ লাখ মে টন উৎপাদন নষ্ট হয়েছে। টাকার অংকে এই ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। বন্যায় মোট ৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ধানের বীজ, চারা, সার ও নগদ অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে সেই অনুযায়ী পূনর্বাসনের জন্য আর কী কী কর্মসূচি নেওয়া যায় তা ঠিক করা হবে বলে জানান কৃষি সচিব।
আরও পড়ুন: শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষি সচিব
বন্যার কারণে দেশে খাদ্য ঘাটতিতে পড়বে কি না-জানতে চাইলে সচিব বলেন, আগামী মৌসুমে বোরো উৎপাদনে কোনো সমস্যা না হলে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংকট হবে না। তাই এখন আমাদের টার্গেট আগামী বোরো মৌসুমে ভালো উৎপাদন করা।
২ মাস আগে