চিফ প্রসিকিউটর
আলেপ-মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে গুম ও ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী এবং র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে গুম, নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। পাশাপাশি গত ১৬ বছরে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত গুম ও গুম-পরবর্তী নির্যাতনের মামলায় আলেপ উদ্দিনকে ২৬ ফেব্রুয়ারি রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসবাদের জন্য আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া সাবেক এসপি মহিউদ্দিন ফারুকীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য ২৮ মে দিন ধার্য করা হয়েছে।আরও পড়ুন: নেতাকর্মী নিহতের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ বিএনপির
এছাড়াও গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক পুলিশ প্রধান এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালকসহ ১০ কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত ২৮ মের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মুর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে এসব আদেশ দেন।
এর আগে সাবেক পুলিশপ্রধান এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালকসহ ১০ কর্মকর্তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন– সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল কাফি, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক (ওসি) আবুল হাসান, ডিএমপি মিরপুরের সাবেক ডিসি জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুর ইসলাম, ডিবি ঢাকা উত্তরের সাবেক পরিদর্শক আরাফাত হোসেন এবং ডিএমপি গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক। এছাড়া র্যাবের দুই সাবেক কর্মকর্তাকেও হাজির করা হয়। তারা হলেন– সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন ফারুকী ও বরিশাল রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন।আরও পড়ুন: সাবেক এমপি ফজলে করিমকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল
তাদের হাজির করার পর প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে পৃথক আবেদন করা হয় ট্রাইব্যুনালের কাছে। পরে এমন আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ, গাজী এম এইচ তামিম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, তারেক আব্দুল্লাহ ও ব্যারিস্টার শাইখ মাহদী।
আদেশ দেওয়ার পর চীফ প্রসিকিউটর সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনালে দ্বিতীয় মামলা ছিল র্যাবের সাবেক কোম্পানি কমান্ডার এডিশনাল এসপি মহিউদ্দিন ফারুকীর বিরুদ্ধে। তার মামলাতে আমরা তিন মাস সময় চেয়েছি। আগামী ২৮ মে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ফারুকী অসংখ্য মানুষকে গুম করার সঙ্গে জড়িত। গুমের শিকার মানুষদের তার অফিসসহ বিভিন্ন আয়নাঘরে রেখে অমানবিক পন্থায় নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের বিষয়ে তিনি একজন মাস্টারমাইন্ড। তার এ বিষয়ে স্পেশাল কোয়ালিটি আছে। আয়নাঘর উন্মোচিত হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা সাহসী হচ্ছেন। এক এক করে অভিযোগগুলো আমাদের ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসছেন। সেই অভিযোগের বিষয়ে আমরা তদন্ত কার্য পরিচালনা করছি।
চীফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘র্যাব কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে মারাত্মক। তিনি অসংখ্য মানুষকে গুম ও নির্যাতন করার সঙ্গে জড়িত। অনেককে এই আলেপ উদ্দিন গুম করে বছরের পর বছর আটকে রেখেছিল। তাদের নিষ্ঠুরতম পন্থায় নির্যাতন করেছিল। বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, চোখ বেঁধে রাখা, উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানোর অভিযোগ এই আলেপ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, একজন আসামিকে গুম করে রাখার সময়ে তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে, এমন তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। আমরা বিষয়গুলো ট্রাইব্যুনালকে জানিয়েছি। এমন নিষ্ঠুরতম অপরাধীর অপরাধের তদন্ত করতে সময় লাগবে, কারণ প্রতিদিনই ভিকটিমরা আমাদের কাছে নতুন নতুন অনেক অভিযোগ নিয়ে আসছেন। এসব তদন্ত শেষ হলে তাদের ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া যেন শুরু করা যায় সে জন্য আমাদের তদন্ত সংস্থা দিন রাত কাজ করছে।
২৮ দিন আগে
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহের মধ্যে পুনর্গঠিত হতে পারে: চিফ প্রসিকিউটর
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
রবিবার দুপুরে হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে চিফ প্রসিকিউটর বেলা ১১টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের দেখতে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যান। পরিদর্শন শেষে দুপুর ২টার পর হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে ব্রিফিং করেন তিনি। এ সময় প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা মহানগরের নতুন পাবলিক প্রসিকিউটর এহসানুল হক
ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে গত সপ্তাহে আইন উপদেষ্টার আলোচনা হয়েছে।...উনি (আইন উপদেষ্টা) আশ্বস্ত করেছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্ভবত পুনর্গঠন (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) হবে। আদালত পুনর্গঠিত হলে বিচারের যে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, সেটি শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিমের কার্যক্রম চলমান থাকলেও ট্রাইব্যুনালে বিচারপতি না থাকায় বিচার কার্যক্রম থমকে আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার গত ১৩ জুলাই অবসরে গেছেন। অন্য এক সদস্য বিচারপতি হাইকোর্টে ফিরে গেছেন। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে কোনো বিচারপতি নেই। নতুন বিচারপতি নিয়োগের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হবে।
বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর সময়কাঠামো (টাইম ফ্রেম) প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আদালত এখনো গঠিত হয়নি।...ছয়জনমাত্র তদন্তকারী কর্মকর্তা এখন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।...প্রসিকিউশনে ২০ থেকে ২৫ জন প্রসিকিউটর দরকার। আমরা মাত্র এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি, চারজন যোগদান করেছেন।…এর বাইরে তথ্যপ্রমাণ (এভিডেন্স) সংগ্রহের ব্যাপার রয়েছে।’ তিনি বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুর সময়কাঠামো নিয়ে এত তাড়াতাড়ি মন্তব্য করা যায় না।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর গত ১৮ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটরসহ ১৩ জন প্রসিকিউটর একযোগে পদত্যাগ করেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর তাজুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের প্রসিকিউশন টিম গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন মন্ত্রণালয়। এ টিমের সদস্য সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। এদিকে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ১০ জন কর্মকর্তা ছিলেন। এর মধ্যে ৪ জন ছিলেন চুক্তিভিত্তিক। সরকার পরিবর্তনের পর তাদের চুক্তি বাতিল হয়। বর্তমানে ৬ জন তদন্ত কর্মকর্তা আছেন। যারা গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত করছেন। জানা গেছে, শিগগির তদন্ত সংস্থায় আরও কয়েকজন তদন্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা চাইলে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন: চিফ প্রসিকিউটর
১৮৬ দিন আগে
শেখ হাসিনা চাইলে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেন: চিফ প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নবনিযুক্ত চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ আসামিরা বিচারের সময় লড়তে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন।
তিনি আশ্বস্ত করেন যে প্রসিকিউশন দল এই বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন করবে না। নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে প্রসিকিউশন টিম যা যা করা দরকার তা করবে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, 'প্রসিকিউশন টিম বেশ কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে এবং তথ্য সংগ্রহ করছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। আরও হাসপাতাল পরিদর্শন করা হবে।’
আরও পড়ুন: ফেনীতে ৮ হত্যা মামলায় হাসিনাসহ আসামি ৩০৩৭ জন
তদন্তের স্বার্থে জেলা, গণমাধ্যম, হাসপাতাল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জেলা প্রশাসকদের কাছে ভিডিও ও ছবি চেয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনো সংশয় না থাকে, সেই স্বচ্ছতার সঙ্গে তদন্ত করতেই এই উদ্যোগ। ভুক্তভোগীরা গণহত্যার বিচারের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, এবং প্রত্যক্ষদর্শীরাও আগ্রহী। সাক্ষ্য-প্রমাণ নতুন থাকা অবস্থায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা চলছে।’
এই বিচারে সরকারের কোনও রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নেই বলেও জোর দেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই, ছাত্র ও জনসাধারণের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে, তার বিচার পাওয়া, যেখানে কোনো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ জড়িত থাকবে না।
আরও পড়ুন: তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শাহজাহান রাজধানীতে গ্রেপ্তার
১৯২ দিন আগে