ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া মানে নতুন সমস্যা তৈরি করা: ফখরুল
সেনাবহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার মানে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি করা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমাদের মতে তখনই এ ক্ষমতা দেওয়া দরকার, যখন মনে হবে সংবিধান নিয়মের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু এ সংবিধান এখনও ভালো আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতা কর্মীরাই সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, সেখানে সেনাবহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মানে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি করা। সে কারণে আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করব বিষয়টি তারা পুনর্বিবেচনা করবেন এবং কখনই তারা এমন কোনো ব্যবস্থা নেবেন না, যাতে রাজনৈতিক বা সমগ্র দেশের মানুষের অকল্যাণ বয়ে আনে।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভিশন স্পষ্ট: ফখরুল
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাব ভিআইপি হলরুমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও আহতদের সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা সবাই অত্যন্ত আশাবাদী, এই অন্তবর্তীকালীন সরকার সব জঞ্জালকে দূর করে দেশে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যে পরিবেশে সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের একটা পার্লামেন্ট তৈরি হবে। সংস্কার আমরা চাই। আমরা মানুষের উপর যাতে অন্যায়-অত্যাচার না হয় সে অবস্থা দেখতে চাই। এখানে আর যেন শিশুদের উপর গুলি করে হত্যা করা না হয়। আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের তালিকা তৈরি করে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, বিষয়টি আমার কাছে খুবই হৃদয় বিদারক। আজকে এ অনুষ্ঠানে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে আহত ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আছেন। অনেক বাবা এসেছেন যারা তাদের সন্তানদের হারিয়েছেন। তারা জানেনা যে তাদের ছেলে কী কারণে শহীদ হয়েছেন। এখানে অনেকেই আছেন যাদের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। কারো পা কেটে ফেলতে হয়েছে। এই স্বাধীন দেশে আমাদের এ বিষয়টি দেখতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহে ৮৭৫ জন শহীদের মধ্যে ৪২২ জনই বিএনপির: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় এখন নেই। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায়। তারা চেষ্টা করছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এসব বিষয়ের বিচার করতে। এ অপরাধের যিনি মূল হোতা শেখ হাসিনা, যার নির্দেশে হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। ২০১২ সাল থেকে এ জাতীয় হত্যাকাণ্ড শুরু হয়েছে। আমরা প্রায় ১৫ বছর ধরে এ অবস্থার মোকাবিলা করছি। আমাদের দলের প্রায় সাত শতাধিক মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। হাজার-হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এখানে যারা বসে আছেন কেউ বাদ নেই যাদের নামে ৮/১০টি মামলা হয়নি। আমি ১১ বার জেলে গিয়েছি। আমাদের দলের সভানেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজাপ্রাপ্ত করিয়ে দেশের বাইরে রেখেছেন।
শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কতজনকে ব্যবসা হারাতে হয়েছে, জমি হারাতে হয়েছে। চাকরি হারাতে হয়েছে তার হিসাব নেই। নতুন অন্তবর্তীকালীন সরকার বিষয়গুলো উপলব্ধি করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহসভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুরসহ আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে ও খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি ফখরুলের আহ্বান
জেলা বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পরিবারের সদস্য ও আহতদের মাঝে ১৫ লাখ টাকার সাহায্য দেন মির্জা ফখরুল।
১ মাস আগে