ই-রিটার্ন
অনলাইনে আয়কর পরিশোধের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
অনলাইনে ই-রিটার্ন ও আয়কর প্রদানে উৎসাহিত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জনগণের দেওয়া করই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।
এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আপনার আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার অভিজ্ঞতা এখন থেকে মসৃণ ও ঝামেলা মুক্ত হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা অনলাইনে কীভাবে আয়কর জমা দিতে পারেন তা তাদের আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধুবান্ধবদের দেখানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
কর প্রদানে জনগণকে নানা ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় স্বীকার করে তিনি সবাইকে ই-রিটার্ন দাখিল ও অনলাইনে আয়কর প্রদানের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জরুরি আন্তর্জাতিক সম্মেলন চান অধ্যাপক ইউনূস
তিনি বলেন, 'আমি তরুণদের অনুরোধ করছি, করদাতাদের এ ব্যাপারে সহযোগিতা করুন। ভবিষ্যতের উদ্যোক্তা হওয়ার প্রস্তুতি এখান থেকেই শুরু করা যেতে পারে। আমরা পর্যায়ক্রমে অনলাইনে সব কর আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এখন থেকে আয়কর দিতে ব্যাংকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না বা আয়কর রিটার্ন জমা দিতে কর অফিসে যেতে হবে না।
তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে আয়কর রিটার্ন জমা দিন। এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
এখন থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর মহানগরীর সব সরকারি কর্মকর্তা এবং সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর ও বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস দেশের অন্যদের অনলাইনে ই-রিটার্ন জমা এবং আয়কর প্রদানের আহ্বান জানান।
তিনি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের জন্য জেলা ও শহর পর্যায়ে কর্মকর্তাদের ই-রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতার বিষয়ে উৎসাহ দেন।
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল বিজয়ী নিহন হিদানকিওতে অধ্যাপক ইউনূসের অভিনন্দন
৩ সপ্তাহ আগে
ই-রিটার্ন ব্যবস্থার প্রচারের নির্দেশ এনবিআর চেয়ারম্যানের
ই-রিটার্ন পদ্ধতি সহজ, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব উল্লেখ করে এর প্রচারণার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে নতুন ই-রিটার্ন সার্ভিস সেন্টার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন,‘এতে সময় ও খরচ কমাচ্ছে।’
এনবিআর চেয়ারম্যান করদাতাদের সুবিধার্থে অনলাইনে ফাইল করতে উৎসাহিত করেন।
নতুন চালু হওয়া ই-রিটার্ন সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে করদাতারা কর অফিসে না গিয়েও টিআইএন সার্টিফিকেট প্রিন্ট না করেই পরিষেবা নিতে পারবেন।
এটি ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক পদ্ধতি উল্লেখ করে রহমান বলেন, বিস্ময়কর হলো যে সেবাটি ২০২১ সালে চালু হলেও বিগত ৪ বছরে এক কোটিতেও পোঁছায়নি।
২০২১ সালে সেবা চালুর পর চার বছরে ই-রিটার্নের সংখ্যা এক কোটিতে না পৌঁছায় বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি একটি ব্যবহার উপযোগী পদ্ধতি।
তিনি বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের প্রচেষ্টায় সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, সকল স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জনে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, 'আমরা বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ ক্ষেত্রে এনবিআর অবদান রাখতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
বাংলাদেশে ইইউ ডেলিগেশনের হেড অব কোঅপারেশন মাইকেল ক্রেজার সঙ্গে নিয়ে এই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন আব্দুর রহমান।
এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের সময়সীমা সম্পর্কে জানতে চাইলে রহমান স্বীকার করেন যে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। বলেন, 'আমরা ধীরে ধীরে সবকিছু ঠিকঠাক করছি।’
যেসব করদাতা অপ্রদর্শিত অর্থ বাতিলের বিধান বাতিলের আগে বৈধ করেছেন, তাদের আইনের আওতায় সুরক্ষিত করা হবে বেলে আশ্বাস দেন রহমান। তিনি বলেন, 'যতদিন আইন বলবৎ ছিল, ততদিন এই সুবিধা বৈধ ছিল।’
তিনি করদাতাদের মোবাইল ফোনের সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন এবং আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করার আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ১ দশমিক ০৪ কোটি করদাতার মধ্যে প্রায় ৪৪ লাখ নিয়মিত রিটার্ন জমা দেন। তিনি বলেন,‘আমরা এই সংখ্যা বাড়াতে চাই এবং অনলাইনে ফাইল করা তাদের জন্য এটি আরও সহজ করে তুলবে।’
আরও পড়ুন: এনবিআরের কর্মকর্তাদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি
তিনি করদাতাদের উদ্বুদ্ধ করেন তারা যেন যেকোনো সমস্যা অনলাইন ব্যবস্থায় তুলে ধরতে ধরেন, যাতে এনবিআর দ্রুত এর সমাধান করতে পারে।
কর ফাঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, এনবিআর সেসব ঘটনার ওপর গুরুত্ব দেয়, যেখানে তারা সুনির্দিষ্ট তথ্য বা গোয়েন্দা তথ্য পায়। ‘একবারে সবকিছু মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে ঘটনাগুলোকে অগ্রাধিকার দিই এবং প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি, বিশেষ করে কর্পোরেট করদাতাদের সঙ্গে।’
ট্যাক্স ফাইল অডিট নিয়ে এনবিআরের ইমেজ সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে এবং মানুষের হস্তক্ষেপ কমাতে বাছাই প্রক্রিয়াটি ডিজিটালাইজড করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তিনি বলেন, 'আমরা প্রায়ই করদাতাদের কাছ থেকে এই প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি পাই। আমরা যেকোনো উদ্বেগ এড়াতে একটি ডিজিটালাইজড সিস্টেমের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
এনবিআর বিভিন্ন পণ্যের শুল্কও পর্যালোচনা করছে, যা বাজেট প্রক্রিয়া চলাকালীন সমাধান করা হবে। রহমান জোর দিয়েছিলেন যে রাজস্ব খাতের সংস্কারগুলো একবারে বাস্তবায়নের পরিবর্তে ধীরে ধীরে করা হবে।
বিদ্যমান করমুক্ত আয়সীমা সম্পর্কে রহমান সতর্ক করে বলেন, এটি বাড়ানো হলে করদাতাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নেট থেকে সরে যাবে। ভারতে যেখানে ২৩ শতাংশ মানুষ কর দেন, আর বাংলাদেশে মাত্র ৫ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ কর দেন। এই সংখ্যা আরও কমাতে পারলে কর আদায় কমে যাবে।
হাইকোর্টের নতুন বেঞ্চ গঠন এবং বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) উদ্যোগের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে কর সংক্রান্ত মামলার জট কমাতে সরকারের আন্তরিকতার কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: শহীদ আবু সাঈদকে 'বীরশ্রেষ্ঠ' বললেন এনবিআর চেয়ারম্যান
১ মাস আগে