পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন
অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের কাছে নতুন বাংলাদেশকে তুলে ধরবেন আজ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন আজ (২৭ সেপ্টেম্বর)। এই ভাষণের মাধ্যমে জনগণ বিশেষ করে যুবসমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে নতুন বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, অধ্যাপক ইউনূস শুক্রবার নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা) সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় ভাষণ দেবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে বক্তব্য রাখবেন অধ্যাপক ইউনূস।
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের স্বপ্ন ও ভূমিকার পাশাপাশি অধ্যাপক ইউনূস তার সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরবেন। যে সংস্কার এজেন্ডার মাধ্যমে বাংলাদেশিদের জন্য ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে দেশকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যেতে কাজ করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখবে: অধ্যাপক ইউনূস
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে অধ্যাপক ইউনূসের যে ব্যাপক পরিসরে সম্পৃক্ততা, তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত তার সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরা সহজ হয়েছে। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করতে কোন ক্ষেত্রগুলোতে সহায়তা করতে পারে সে বিষয়ে পরিকল্পনার একটি বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছে এবং এ বিষয়ে তারা বিশ্বকে জানাতে চান যাতে বাংলাদেশে কী ঘটেছিল সে নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ না থাকে।
তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত সম্মানিত এবং সব দেশ তার বক্তব্য গুরুত্বের সঙ্গে নেবে।
অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থান এবং আগামী দিনে জনমুখী, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে তার দৃঢ় প্রত্যয়ের বিস্তারিত তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে জ্বালানি ও ট্রানজিট সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করলেন অধ্যাপক ইউনূস-প্রধানমন্ত্রী ওলি
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান; জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব এবং জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা; বৈশ্বিক সংঘাত; রোহিঙ্গা সংকট; টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জটিলতা; উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদ পাচার রোধ; নিরাপদ অভিবাসন এবং অভিবাসীদের মৌলিক সেবাসমূহে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতকরণ; প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তর বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ফিলিস্তিনের কথা উঠে আসতে পারে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এই অধিবেশন জাতিসংঘ বা বিশ্বমঞ্চে নতুন বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন পদক্ষেপ। এই অধিবেশনে বৈষম্যহীন ও ন্যায়ভিত্তিক এই বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার দারুণ সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে।’
গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রায় ১৫টি বৈঠকে অংশ নেন অধ্যাপক ইউনূস।
শুক্রবার রাতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে অন্তত ৬টি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সংস্কারে ৩.৫ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক: অজয় বাঙ্গা
১ মাস আগে