ব্রাইটন
অবশেষ জয়যাত্রা থামল সিটির
হারতে যেন ভুলেই গিয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। গত মৌসুম থেকে টানা অপরাজিত থেকে আরও একবার প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা জাগাচ্ছিল ছিল তারা। তবে বোর্নমাউথের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের।
ভাইটাইলিটি স্টেডিয়ামে শনিবার সন্ধ্যায় প্রিমিয়ার লিগের দশ রাউন্ডের ম্যাচে সিটিকে ২-১ গোলে হারিয়েছে বোর্নমাউথ।
ঘরের মাঠে ম্যাচের নবম মিনিটে আন্সো সেমেনিয়ো গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে বোর্নমাউথের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইভানিলসন। এরপর ৮০তম মিনিটে ইয়োশকো গেভার্দিওল একটি গোল শোধ করেন। পরে স্বাগতিকদের চেপে ধরেও হার এড়াতে ব্যর্থ হয়েছে গার্দিওলার দল।
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত জয়ে নিজেদের রেকর্ড ছুঁয়েছে সিটি
চোটজর্জর দল নিয়ে এদিন সিটি খেলতে নামার পর শুরু থেকেই এই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে থাকে বোর্নমাউথ; যার ফলও তারা পেয়েছে। ম্যাচে শেষে একই কথা ঝরেছে গার্দিওলার কণ্ঠেও।
‘ম্যাচের রাশ বারবার টেনে ধরতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছি আমরা। আজকে ওদের (প্রতিপক্ষের) গতি ছিল অন্যরকম। আমরা চেষ্টা করেও ওই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারিনি।’
এই হারে প্রিমিয়ার লিগে টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর হরের মুখে দেখল সিটি। এটি অবশ্য লিগে সর্বোচ্চ সংখ্যক ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড। গত ৫ অক্টোবর ফুলহ্যামকে ৩-২ গোলে হারিয়ে নিজেদেরই ৩০ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পর্শ করে দলটি। এরপর উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স ও সাউথহ্যাম্পটনের বিপক্ষে জিতে রেকর্ডটি আরও উঁচুতে তোলে তারা। তবে ৩২ ম্যাচ পর আর তা লম্বা করা হয়ে উঠল না গার্দিওয়ালার শিষ্যদের।
এই হারে লিগের পয়েন্ট টেবিলেও অবনমন হয়েছে সিটির। দশ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেমে গেছে তারা। আর একই দিন একই সময়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ব্রাইটনকে হারিয়ে সিটির চেয়ে ২ পয়েন্টে এগিয়ে গিয়ে শীর্ষে উঠেছে লিভারপুল।
আরও পড়ুন: নিউক্যাসলের বিপক্ষে হেরে পিছিয়ে পড়ল আর্সেনাল
দিনের অপর ম্যাচে নিউ ক্যাসলের মাঠে হেরে শিরোপার দৌড় থেকে খানকিটা পিছিয়ে পড়েছে আর্সেনাল। তবে চমক দেখিয়ে ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডকে ৩-০ গোলে হারিয়ে টেবিলের তিনে উঠেছে ইউলেন লোপেতেগির নটিংহ্যাম ফরেস্ট।
রবিবার একে অপরের মুখোমুখি হবে টটেনহ্যাম হটস্পার ও অ্যাস্টন ভিলা এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসি।
১ মাস আগে
ক্যারাবাও কাপ: এক রাতে বিদায় সিটি, ভিলা ও চেলসির
ইংলিশ ফুটবল লিগ বা লিগ কাপ বা ক্যারাবাও কাপের চতুর্থ রাউন্ডে টটেনহ্যাম-ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচটি ছাড়া প্রিমিয়ার লিগে আধিপত্য দেখানো বাকি সবগুলো দলই পেয়েছিল তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ। কিন্তু মাঠের খেলায় এলোমেলো হয়ে গেছে তাদের অনেকেই।
বুধবার রাতে ক্যারাবাও কাপে ঘটেছে তিনটি অঘটন। এর মধ্যে বড় খবর হলো টটেনহ্যামের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে সিটি।
এছাড়া চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় দাপট দেখানো অ্যাস্টন ভিলা এবং এনসো মারেসকার অধীনে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া চেলসিকেও বিদায় নিতে হয়েছে চতুর্থ রাউন্ড থেকেই।
অন্যদিকে, দুর্দান্ত জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভুগতে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আর রোমাঞ্চের পর রোমাঞ্চ ছড়িয়ে শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টারে উঠেছে লিভারপুল। আর্সেনালও কোয়ার্টার নিশ্চিত করেছে, তবে জিততে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি তাদের।
টটেনহ্যামের কাছে সিটির হার
স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড ও গোলরক্ষক এদেরসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ছাড়াই এদিন মাঠে নামে সিটি। চোটের কারণে দলে ছিলেন না কেভিন ডি ব্রুইনে-রদ্রিরাও।
অন্যদিকে, চোটের কারণে এই ম্যাচে খেলা হয়নি টটেনহ্যামের তারকা ফরোয়ার্ড হিউং মিন-সনেরও।
ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই টিমো ভের্নারের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ২৫তম মিনিটে টটেনহ্যামের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মিডফিল্ডার পেপে মাতার-সার। এরপর যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে বিরতিতে যায় সিটি।
দ্বিতীয়ার্ধেও টটেনহ্যামকে চেপে ধরে পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা, কিন্তু শট লক্ষ্যে রাখতে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন ম্যাথুস নুনেস-বের্নার্দো সিলভারা। শেষদিকে সমতায় ফেরার জোর চেষ্টা চালালেও টটেনহ্যামের রক্ষণ ভেদ করতে তা যথেষ্ট ছিল না। তাই ২-১ ব্যবধানেই শেষ হয় ম্যাচ।
এর ফলে, গত মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও এবার কোয়ার্টারেও পৌঁছানো হলো না গার্দিওলার শিষ্যদের।
নিউক্যাসলের মাঠে জোড়া গোল হজম চেলসির
ঘরের মাঠে ম্যাচের ২৩তম মিনিটে আলেকজান্ডার ইসাকের গোলে এগিয়ে যায় নিউক্যাসল ইউনাইটেড। এর তিন মিনিট পরই আক্সেল দিসাসির আত্মঘাতী গোলে আরও পিছিয়ে পড়ে চেলসি।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর নিউক্যাসলের ওপর রীতিমতো শাসন করা শুরু করে চেলসির খেলোয়াড়রা। গোলের জন্য হন্যে হয়ে যায় তারা। কিন্তু ৬৬ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে মোট ১৭টি শট নিয়ে একবারের জন্যেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি মারেসকার শিষ্যরা। ফলে দুর্দান্ত চেলসিকে ২-০ গোলে রুখে দিয়ে জয়ের হাসি হাসে এডি হাউইর দল।
ঘরের মাঠে হেরে ভিলার বিদায়
অ্যাস্টন ভিলার গল্পটি অনেকটা সিটির মতোই। ম্যাচের একেবারে শুরুতেই (অষ্টম মিনিটে) এবেরেচি এজের গোলে পিছিয়ে পড়লেও অপ্রতিরোধ্য জন ডুরানের নৈপুণ্যে ২৩তম মিনিটেই সমতায় ফেরে উনাই এমেরির শিষ্যরা।
ম্যাচজুড়ে বলের দখল, আক্রমণ, গোলের সুযোগ তৈরি- সবকিছুতেই প্যালেসের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকে অ্যাস্টন ভিলা। তাই মনে হচ্ছিল ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়বে তারা। কিন্তু দাইচি কামাদার গোলে দ্বিতীয়ার্ধে ফের এগিয়ে যায় প্যালেস। এরপর রক্ষণে দেওয়াল তুলে স্কোরলাইন রক্ষা করে অলিভার গ্লেসনারের দল।
ফলে ২-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ক্রিস্টাল প্যালেস।
জিতল যারা
বড় দলগুলোর অনেকেই ব্যর্থ হলেও রুড ভ্যান নিস্টরলয়ের অধীনে প্রথম ম্যাচেই দারুণ এক জয় তুলে ক্যারাবাও কাপের কোয়ার্টারে উঠেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে লেস্টার সিটির বিপক্ষে ৫-২ গোলে জিতেছে ম্যানচেস্টারের লাল দলটি।
ইউনাইটেডের হয়ে জোড়া গোল করেন কাসেমিরো ও ব্রুনো ফের্নান্দেস; অপর গোলটি আসে আলেহান্দ্রো গারনাচোর পা থেকে। অপরদিকে, লেস্টারের গোলদুটি করেন বিলাল এল খানুস ও কনর কোডি।
এদিকে, ঘরের মাঠে লিভারপুলের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত হেরে গেছে ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়ন। প্রতিযোগিতার সেরা দলটির বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরেছে ফাবিয়ান হুয়ের্সেলারের দল।
ম্যাচের সবগুলো গোলই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। লিভারপুলের তিন গোলের প্রথম দুটি আসে ৪৬ ও ৬৩তম মিনিটে, কোডি গাকপোর পা থেকে; আর ৮৫তম মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন লুইস দিয়াস।
মাঝে ৮১তম মিনিটে প্রথম গোল পেয়ে ব্রাইটনের ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা জাগান সিমোন আদিংগ্রা। চার মিনিট পর দিয়াসের গোলে লিভারপুল ফের ব্যবধান দ্বিগুণ করলে ৯০তম মিনিটে গিয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন তারিক ল্যাম্পটি। এরপর দুই মিনিট অতিরিক্ত খেলার সুযোগ দেওয়া হলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাইটন। ফলে স্বাগতিকদের হতাশ করে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল।
এছাড়া, দ্বিতীয় বিভাগের দল প্রেস্টন নর্থ এন্ডের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় তুলে নিয়েছে মিকেল আর্তেতার আর্সেনাল। গোল তিনটি করেন গাব্রিয়েল জেসুস, ইথান নোয়ানেরি ও কাই হাভার্টস।
চতুর্থ রাউন্ডের অপর ম্যাচগুলোতে জয় পেয়েছে ব্রেন্টফোর্ড ও সাউথহ্যাম্পটন।
১ মাস আগে
চার গোল করে ইতিহাসের পাতায় পালমার
প্রিমিয়ার লিগে শনিবার ব্রাইটনের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে চেলসি। আর তাতে একাই চার গোল করে অনন্য এক কীর্তি গড়েছেন ব্লুসদের ইংলিশ মিডফিল্ডার কোল পালমার।
প্রিমিয়ার লিগে শনিবার স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়নকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে চেলসি।
চেলসির চারটি গোলই করেছেন ২২ বছর বয়সী ইংলিশ প্রতিভা কোল পালমার। মাত্র দশ মিনিটের ব্যবধানে হ্যাটট্রিক করার পর ২০ মিনিটের মধ্যে ওই চার গোল করেন তিনি।
পালমারের চারটি গোলই এসেছে বিরতির আগে। আর তাতেই ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিয়েছেন এই প্রতিভাবান তরুণ।
প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে প্রথমার্ধে চার গোল করার রেকর্ড আর কারও নেই। লিগের ৩২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো ফুটবলার এই কীর্তি গড়ল বলে জানিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের পরিসংখ্যান প্রকাশকারী সাইট অপটা।
আরও পড়ুন: পালমারের চার গোল, চেলসিতে বিধ্বস্ত ব্রাইটন
এদিন ম্যাচের ২১, ২৮, ৩১ ও ৪১তম মিনিটে গোলগুলো করেন পালমার। এর মধ্যে তার দ্বিতীয় গোলটি আসে পেনাল্টি থেকে।
অবশ্য ওই চার গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোলের দেখা পায়নি চেলসি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল পায়নি ব্রাইটনও। ফলে ৪-২ গোলে জিতে ম্যাচ শেষ করে চেলসি।
এর আগে, গত মৌসুমেও প্রিমিয়ার লিগে চার গোল করেন পালমার। এভারটনের বিপক্ষে চলতি বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচটি ৬-০ গোলে জেতে চেলসি।
এদিকে, আজকের হ্যাটট্রিকের ফলে লিগে তার মোট হ্যাটট্রিক সংখ্যা হলো তিনটি। এর মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে তিন হ্যাটট্রিক করা চেলসির চতুর্থ ফুটবলার হিসেবে দিদিয়ের দ্রগবা, ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড ও জিমি ফ্লয়েডের পাশে বসলেন তিনি।
আজকের পারফরম্যান্সের পর লিগে ৬ ম্যাচে পালমারের গোলসংখ্যা হলো ৬টি। এর পাশাপাশি চারটি অ্যাসিস্টও করেছেন তিনি।
দশ গোল নিয়ে লিগে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা ম্যানচেস্টার সিটির আর্লিং হালান্ড। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন পালমার। আর সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের তালিকায় লেস্টার সিটির উইলফ্রেদ এনদিদি ও লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহর সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন তিনি। ৬ অ্যাসিস্ট নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন আর্সেনালের ইংলিশ উইঙ্গার বুকায়ো সাকা।
২ মাস আগে