জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সফর
প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সফর অত্যন্ত সফল ও ঐতিহাসিক: প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে অংশগ্রহণকে 'অত্যন্ত সফল, ঐতিহাসিক এবং অত্যন্ত ইতিবাচক মাইলফলক' হিসেবে বর্ণনা করেছে সরকার।
সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, 'এটি একটি সফল ও ঐতিহাসিক সফর। আমি বলব এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই ইতিবাচক মাইলফলক।’
এ সময় উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
নিউইয়র্কে চার দিনের সংক্ষিপ্ত অবস্থানে শফিকুল আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বের শীর্ষ ১২টি শীর্ষ নেতার সঙ্গে অন্তত ৫০টি বৈঠক হয়েছে।
ছয়টি সংস্কার কমিশন ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে কিনা জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদ সংস্কারের কাজ শুরু করার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্রুত বসতে চায়।
শফিকুল আলম বলেন, ছয়টি কমিশন ১ অক্টোবর থেকে কাজ করার কথা থাকলেও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আরেক দফায় আলোচনা করে তাদের মতামত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ
যেহেতু এসব কমিশনের ছয়জন প্রধান আছেন, সেহেতু কিছুটা হলেও কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, নিউইয়র্কে তাকে (অধ্যাপক ইউনূস) একজন ‘রকস্টার’-এর মতো সমাদর করা হয়। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কোনো শীর্ষ নেতার সঙ্গে দেখা হলে তারা হাত বাড়িয়ে এমনভাবে জড়িয়ে ধরতেন যে তিনি নড়াচড়া করতে পারতেন না।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক বৃত্তে, তিনি শীর্ষ তারকা ছিলেন এবং তিনি ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিপ্লব এবং এর লক্ষ্য সম্পর্কে কথা বলার জন্য একটি মুহূর্তও মিস করেননি।
এটি কেন একটি মাইলফলক এবং ঐতিহাসিক সফর ছিল তা ব্যাখ্যা করে প্রেস সচিব গত চার দশকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশের নেতাদের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করেন, যখন কিছু আঞ্চলিক নেতার সঙ্গে খুব কম বৈঠক দেখা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এবার প্রধান উপদেষ্টা অনেকগুলো উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন।
প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি যেসব বিশ্ব নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তারা সকলেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন এবং তারা সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশে পরিকল্পিত সংস্কারকে সমর্থন করেন এবং তারা জানেন যে ব্যাপক সংস্কার করতে সময় লাগবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, কেউ সময়সীমা জানতে চায়নি কারণ তারা জানে সংস্কার পরিকল্পনা বিবেচনায় নিতে সময় লাগবে।
আলম বলেন, সংস্কারের পর বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের ফলপ্রসূ সফর শেষে রবিবার ভোরে ঢাকায় আসেন প্রধান উপদেষ্টা।
নিউইয়র্কে চার দিন অবস্থানকালে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ৫০টি বড় ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ ১৬টি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সবার জন্য স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে 'নতুন বাংলাদেশ'-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৯তম অধিবেশনে প্রদত্ত ইউনূসের ভাষণে এই আহ্বান জানানো হয়।
বাংলায় দেওয়া ভাষণে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণরা দেখিয়েছে যে, ভেদাভেদ ও মর্যাদা নির্বিশেষে মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখা শুধু উচ্চাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। এটা সবার প্রাপ্য।'
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা গভীর করার জন্য বিশ্বের সকল দেশকে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
'এটি একটি যুগান্তকারী বক্তব্য' উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ভাষণে বাংলাদেশের সমস্যা ছাড়াও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডিসি নিয়োগে হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলা করায় ১৭ উপসচিবকে শাস্তির সুপারিশ
১ মাস আগে