ফ্যাসিবাদের ভূত
প্রশাসন থেকে ‘ফ্যাসিবাদের ভূত’ সরানোর উপর নির্ভর করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাফল্য: ফখরুল
প্রশাসন থেকে 'ফ্যাসিবাদের ভূত' নির্মূল করা না গেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো প্রচেষ্টা সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল দেশের প্রশাসনের অবস্থা তুলে ধরেন।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে শিক্ষক-কর্মচারী ইউনিয়ন।
আরও পড়ুন: গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের মামলায় ফখরুল-রিজভীসহ ৮ জন খালাস
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে ফখরুল বলেন, প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের ‘ভূতের’ মদদেই ফ্যাসিস্ট সরকার দীর্ঘদিন ধরে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। তাদের সহায়তায় দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে। এখনো সেসব ভূত প্রশাসনে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এসব ভূত নির্মূল করতে হবে; অন্যথায় আপনি কিছুই অর্জন করতে পারবেন না।’
নির্বাচনের সময়সূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা অবশ্যই সময় দেব, তবে তা হতে হবে যৌক্তিক। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সেই সরকার অবশ্যই জাতির নেতৃত্ব দেবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিরাজনীতিকরণ সমর্থন করি না। আমরা 'মাইনাস টু' ফর্মুলার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করি, পাশাপাশি মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থানকেও প্রত্যাখ্যান করি। আমরা সত্যিকার অর্থে দেশে সুস্থ, উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাই।’
আরও পড়ুন: ফখরুলের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা-বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা
ফখরুল আরও বলেন, 'এজন্য আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই দায়িত্ব দিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা যোগ্য ও সক্ষম এবং আমরা তাদের দ্রুত গতিতে কাজ করার আহ্বান জানাই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমরা কখনো ব্যর্থ হইনি। ১৯৫২, '৬৯, '৭১ সালের যুদ্ধে এবং বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯০ সালে আমরা বিজয়ী হয়েছি। বর্তমানে আমাদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইনশাল্লাহ এবারও আমরা বিজয়ী হব।’
শিক্ষক জাতীয়করণ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, 'শুধু জাতীয়করণ দিয়ে আপনাদের সব সমস্যার সমাধান হবে না। আমাদের শিক্ষার মান বাড়াতে হবে এবং যোগ্য ব্যক্তিদের আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা উচিত নয়। তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থেকে দূরে থাকতে হবে; তা না হলে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের ভালো নাও লাগতে পারে, কিন্তু আমি জানি আওয়ামী লীগ পিয়ন থেকে শুরু করে গভর্নিং বডির সভাপতি পর্যন্ত সবকিছুতে প্রভাব বিস্তার করেছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। যারা সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংযুক্ত, শিক্ষিত এবং একটি পার্থক্য তৈরি করতে সক্ষম, তাদের আনার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। যদি এটি আন্তরিকভাবে করা হয়, তবে পরিবর্তন আসবে; অন্যথায় তা অধরাই থেকে যাবে।’
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া মানে নতুন সমস্যা তৈরি করা: ফখরুল
দেশে নতুন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমি আশাবাদী মানুষ। আমরা সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলব এবং এদেশে সত্যিকারের জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করব। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) ও তারেক রহমানের স্বপ্ন আমরা পূরণ করব।’
সভায় চৌধুরী মুগিস উদ্দিন মাহমুদ, জাকির হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুরসহ শিক্ষক-কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহে ৮৭৫ জন শহীদের মধ্যে ৪২২ জনই বিএনপির: ফখরুল
১ মাস আগে