তরুণ নেতৃত্ব
জনমুখী আর্থিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সরকারকে তরুণ নেতৃত্বের আহ্বান
সরকারি অর্থ লোক দেখানো উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্পে ব্যবহার বন্ধ করে দেশকে বৈদেশিক ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত করা এবং সরকারি আর্থিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কাজে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ নেতৃত্বের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জনমুখী আর্থিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে তরুণ নেতৃত্ব।
সোমবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার কর্মকৌশল ২০২৫-২০৩০ প্রণয়নে ‘তরুণ নেতৃত্বের ভাবনা’ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান বক্তারা।
প্রায় ৬০ তরুণ নেতৃত্ব বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল প্রোগ্রাম টু এনাবেল সার্ভিস ডেলিভারি (এসপিএফএমএস), অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
তরুন বক্তারা টেকসই ও জনবান্ধব আর্থিক সংস্কার কার্যক্রমে ‘বাজেটপূর্ব’ আলোচনা বিষয়টি কৌশলপত্রে যুক্ত করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তরুণ নাগরিকদের পেছনে বিনিয়োগ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আহ্বান
এছাড়াও কর আদায়ের প্রচলিত পদ্ধতির ব্যাপক সংস্কার করার পরামর্শ দেন তারা। প্রয়োজনে বছর শেষে কর আদায়ের প্রচলিত পদ্ধতির বদলে দৈনিক বা সাপ্তাহিক কর আদায়ের পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন।
অর্থ সচিব ড. মোঃ খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
ড. মোঃ খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার কর্মকৌশল ২০২৫-২০৩০ প্রণয়ন করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নতুন প্রজন্ম কী চায়, তারা কীভাবে দেশ গড়তে চান, তা বিবেচনায় এনে আর্থিক সংস্কার করা হলে আর্থিক ক্ষেত্রে বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
যুব ও ক্রীড়া সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, জুলাই আন্দোলনে নিহত শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের সহায়তার জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্মমুখী দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রকল্পের উদ্যোগ নিচ্ছে।
অর্থ বিভাগ বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় তৃতীয় সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার কর্মকৌশল ২০২৫-২০৩০ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এর আগে সরকার ২০০৭-২০১২ এবং ২০১৬-২০২১ সালের জন্য দুটি আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেছে।
পিএফএম সংস্কার কৌশল অংশীজনদের পরামর্শ একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ যা আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে টেকসই, স্বচ্ছ, জবাবদিহি ও কার্যকর করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি শক্তিশালী পিএফএম ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে সম্পদ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানো এবং মানসম্মত সেবা প্রদান করা। সেই সঙ্গে মধ্যমেয়াদি বাজেটিং এবং ম্যাক্রোইকোনমিক পূর্বাভাসের প্রবর্তন করার পাশাপাশি আইবাস++ (একীভূত বাজেট এবং হিসাব ব্যবস্থা) এর মতো ই-সিস্টেমের মাধ্যমে জনসাধারণের আর্থিক ব্যবস্থাপনার ডিজিটাইজেশন, জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের অটোমেশন, পেনশন আধুনিকীকরণ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পরিচালনায় সংস্কার করা।
অনুষ্ঠানে ‘ভবিষ্যতের সরকার: অতীতের সরকার থেকে আগামীর সরকার’ বিষয় উপস্থাপন করেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকার লিড গর্ভন্যান্স স্পেশালিস্ট ও টাস্ক টিম লিডার সুরাইয়া জান্নাত।
এছাড়াও এসপিএফএমএসের জাতীয় কর্মসূচি পরিচালক অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) বিলকিস জাহান রিমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার বিষয়ে ‘তরুণ নেতৃবৃন্দের ভাবনা’ তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সামি মোহাম্মদ।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনার দ্রুত সংশোধনের দাবি তরুণ জলবায়ুকর্মীদের
তরুণরা আগামীতে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে: ভিপি নূর
১ মাস আগে