ব্ল্যাক আউট
সিলেটের ৮ উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ‘ব্ল্যাক আউট’, ৩ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক
পল্লী বিদ্যুতের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং মামলায় আসামি করার প্রতিবাদে সিলেটের ৮ উপজেলায় প্রায় তিন ঘণ্টা পল্লী বিদ্যুৎ শাটডাউন করে রেখেছিল বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন ২৬টি সাবস্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে বিপাকে পড়েন অন্তত সাড়ে ৪ লাখের বেশি গ্রাহক।
পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তর থেকে আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শাটডাউন তুলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো কোনো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও দক্ষিণসুরমা উপজেলা পুরোপুরি শাটডাউন করে দেয় পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন আরও ৫টি উপজেলায় শাটডাউন করা না হলেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল বিভিন্ন এলাকা। লোডশেডিংও ছিল দিনভর।
সিলেট পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, নিম্নমানের মিটার ও মালামাল ক্রয়, লোকবল সংকট, অনিয়মিত কর্মকর্তাদের নিয়মিত করাসহ কয়েকটি দাবি নিয়ে কয়েকদিন আগে থেকে আন্দোলন করছিলেন পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এই বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে গঠিত একটি কমিটি কাজ করছিল।
এরইমধ্যে বুধবার সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার পদমর্যদার কয়েকজন কর্মকর্তাকে একটি পক্ষ চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়। আরও কয়েকজনকে মামলার আসামি করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে সিলেটেও কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রতিবাদ করছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সিলেটের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারীরা। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন বিদ্যুতের সিনিয়র কর্মকর্তারা। আলোচনা চলাকালেই বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর আওতাধীন ২৬টি সাব-স্টেশন বন্ধ করে দেয়। যার ফলে ৮টি উপজেলার প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
এদিকে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করায় বিপাকে পড়েন গ্রাহকরা। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল হক বলেন, বিকাল ৪টার পর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। উপজেলার কোথাও বিদ্যুৎ ছিল না। এতে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণিখাই এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসাইন বলেন, হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যায়। কোনো নোটিশ করা হয়নি আগে। পরে জানতে পারলাম বিদ্যুতের লোকজন আন্দোলন করছেন। এজন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মুনতাসীর মজুমদার বলেন, বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তার আওতাধীন ২৬টি সাব স্টেশনের মধ্যে সবকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হয়।
এদিকে সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সাবস্টেশনগুলো শাটডাউন করা না হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গ্রাহকরা। সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অধীনে ৮টি সাবস্টেশন রয়েছেন। এই সাবস্টেশনগুলো থেকে ৫টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।
১ মাস আগে