ঘূর্ণিঝড় দানা
উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’, বাংলাদেশে কমেছে প্রভাব
উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে উত্তর উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করেছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে উত্তর উড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। শুক্রবারের মধ্যে পুরী ও সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আরও পড়ুন: 'দানা'র প্রভাবে প্লাবিত হতে পারে উপকূলীয় জেলা
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়া যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে বরিশালে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ
৩ সপ্তাহ আগে
ঘূর্ণিঝড় দানা: বাগেরহাটে প্রস্তুত ৩৫৯ আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বাগেরহাটে নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বাড়ায় জেলার রামপাল, মোংলা ও মোড়লেগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের।
এছাড়া বাগেরহাটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এদিকে জেলার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৬ হাজার ৬৫১ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বাগেরহাট জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান জুমে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা করেছেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে, আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৫ পরিবার
এসময় তিনি বলেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, জেলায় মোট ৩৩৮ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৭ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া মোড়েলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি এলাকায় ২০ কিলোমিটার বাঁধের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ দশমিক ৮ থেকে ৪ মিটার। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন অনুযায়ী বাঁধের উচ্চতা ৪ দশমিক ৭ মিটার হতে হবে। জোয়ারে পানি বাড়লে ওই সব এলাকায় বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলার রামপাল ও মোংলা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো বাঁধ নেই। জোয়ারে পানি বাড়লেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদী পাড়ে ১৮৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বাঁধ নির্মাণের সম্ভ্যবতা যাচাইয়ের জন্য তাদের প্রস্তাব বর্তমানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান বলেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্ততি রয়েছে।
তিনি বলেন, জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৬ হাজার ৬৫১ জন আশ্রয় নিতে পারবেন। সেই সঙ্গে মানুষ তাদের গবাদি পশুও আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে আসতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, নগদ ১৫ লাখ টাকা ও ৮০০ মেট্রিকটন চাল, শুকনা খাবার মজুত রাখা হয়েছে। জেলাব্যাপি সিপিপি ও সেচ্ছাসেবক মিলে ৩ হাজার ৫০৫ জন সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৮৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ৯টি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের সংকেতের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু
৪ সপ্তাহ আগে