গাজরের বীজ
বাকৃবিতে কৃষকদের বিনামূল্যে টমেটোর চারা ও গাজরের বীজ বিতরণ
বাকৃবিতে ৩৫ জন কৃষককে দেশি ও বিদেশি জাতের টমেটোর ৩ হাজার চারা ও জনপ্রতি ১০০ গ্রাম গাজরের বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) বাকৃবির উদ্যানতত্ত্ব খামারে বাকৃবি এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের উদ্যোগে বীজ ও চারা বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, ইন্ডিয়ান ও দেশি জাতসহ মোট ৪০টি জাতের গাজরের জার্মপ্লাজমের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। বীজগুলো থেকে প্রচলিত রঙের বাইরে লাল, বেগুনি, হলুদ ও সাদা গাজর পাওয়া যাবে।
এছাড়া যুক্তরাজ্য, ভারতীয়, ইতালীয়, দেশি ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রায় ২০ জাতের টমেটোর জার্মপ্লাজমের চারা বিতরণ করা হয়। এতে করে লাল ও কালো রঙয়ের টমেটো পাওয়া যাবে।
এছাড়া উপস্থিত কৃষকদের বিতরণ করা বীজ ও চারা থেকে গাজর ও টমেটো উৎপাদন পদ্ধতি ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়।
আরও পড়ুন: ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু বাকৃবি প্রশাসনের
এসময় গাজর ও টমেটো গবেষণার প্রজেক্ট ইনভেস্টিগেটর ও বাকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ ইউএনবিকে বলেন, ‘প্রতিকূল পরিবেশ, বিশেষ করে খরা বর্তমানে বাংলাদেশের একটি উদীয়মান হুমকি। যা গাজর ও টমেটোর উৎপাদনশীলতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে। বর্তমান বাজারে গাজর ও টমেটোর চাহিদা বৃদ্ধির তুলনায় কম প্রাপ্যতার কারণে দৈনন্দিন খাবারের পুষ্টিমানে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি’র ঘাটতি থেকে যায়। সুতরাং, বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রতিকূল পরিবেশে পুষ্টিসমৃদ্ধ রঙিন গাজর ও টমেটোর উন্নয়ন ও প্রসারণই এই প্রকল্পের সামগ্রিক লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন, প্রায় সাড়ে ৩ কেজি গাজরের বীজ দেওয়া হয়েছে যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। তবে কৃষকদের দেওয়া বীজ থেকেই তারা পরবর্তীতে আবারও বীজ উৎপাদন করতে পারবে।
তিনি বলেন, এটি তাদের অর্থনৈতিক লাভ নিশ্চিত করবে। কৃষকদের বর্তমান পুষ্টিগত তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। যাতে ফসল উৎপাদনের পর সেটি গ্রহণে তাদের শরীরের পুষ্টিগত পার্থক্যও পরিমাপ করা যায়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক।
এসময় তিনি বলেন, এই দুটি রঙিন সবজির বাজার মূল্য ও চাহিদা অত্যন্ত বেশি। এদের চমৎকার পুস্টিগুণ। কৃষকদের এই সবজি দুইটি থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে এমন কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলগুলোকে আরও অধিকতর সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে।
শেষ মোড় এলাকার কৃষক আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, বিনামূল্যে উন্নত জাতের গাজর ও টমেটোর বীজ ও চারা পেয়ে ভালো লাগছে। স্যারেরা চাষাবাদ সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আশা করি বিভিন্ন রঙয়ের ফলন পেলে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারব।
সুপারিবাগান এলাকার কৃষাণী ছালমা আক্তার বলেন, গাজর যে এত রঙয়ের হয় সেটি জানা ছিলো না। প্রশিক্ষণে বিভিন্ন রঙয়ের গাজরের ও টমেটোর নানান ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি। আমি নিজে এগুলোর চাষাবাদ করব ও পাশাপাশি অন্যদেরকে উৎসাহিত করব।
বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো গোলাম রাব্বানী। এছাড়াও বাকৃবির স্মার্ট এগ্রিকালচারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো সহিদুজ্জামান এবং স্ট্যান্ডার্ড চ্যাটার্ড ব্যাংকের সহকারী পরিচালক দেবাশীষ ভট্টাচার্যসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর ব্রুসেলোসিস রোগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবির গবেষক দলের
২ সপ্তাহ আগে