২ জনের যাবজ্জীবন
ফারুক হত্যাকাণ্ড: ২ জনের যাবজ্জীবন, খান পরিবারের সবাই খালাস
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক বছর করে বিনাশ্রাম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ খান তার পরিবারের সবাই এই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. মাহমুদুল হাসান এ রায় দেন।
আসামিরা হলেন— টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিসিক তারুটিয়া গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে কবির হোসেন কবির ও শহরের দক্ষিণ কলেজপাড়ার মো. রমজান ড্রাইভারের ছেলে মোহাম্মদ আলী। তারা দুজনেই পলাতক রয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন— সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার অপর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, বাবু ওরফে দাঁতভাঙ্গা বাবু, আলমগীর হোসেন চান, নাসির উদ্দিন নুরু, ছানোয়ার হোসেন ছানু, মাসুদুর রহমান ও ফরিদ আহাম্মেদ।
রায় ঘোষণার সময় মুক্তি, দাঁতভাঙ্গা বাবু ও নাসির উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সহিদুর রহমান খান মুক্তি অন্য একটি মামলায় জেলহাজতে থাকায় এই মামলায় মুক্তি মিললেও রায় ঘোষণার পর আবার তাকে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের অতিরিক্ত পিপি সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, এ মামলায় ২৭ জন সাক্ষি আদালতে সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জেরা করেন। এরপর বিজ্ঞ আদালত দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ জনকে খালাস দিয়েছেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে যাওয়ার বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তিনদিন পর ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নারীসহ দুইজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
২০১৪ সালের অগাস্টে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে টাঙ্গাইলের প্রভাবশালী খান পরিবারের চার ভাই আমানুর রহমান খান রানা, সহিদুর রহমান খান মুক্তি, জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সানিয়াত খান বাপ্পার নাম উঠে আসে। তখনই তারা আত্মগোপনে চলে যান।
একপর্যায়ে আমানুর রহমান খান রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিন বছর পর জামিনে মুক্ত হন। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর তিনি আবার আত্মগোপনে চলে যান। এছাড়া তার অপর দুই ভাই কাকন ও বাপ্পা ২০১৪ সাল থেকেই বিদেশে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়।
২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল ডিবির তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মাহফীজুর রহমান চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে দুই আসামি আনিছুর রহমান ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ সমির কারাগারে মারা যান। মামলা চলাকালে বাদী নাহার আহমেদেরও মৃত্যু হয়।
৫০ দিন আগে
মেহেরপুরে হেরোইনের মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মেহেরপুরে হেরোইন রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাহারুল ও চঞ্চল নামের ২ মাদক ব্যবসায়ীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে শাহারুল ও চঞ্চলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকাল দিকে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মনজুরুল ইমাম এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ইলিশ শিকারের দায়ে ১৪ জেলের কারাদণ্ড
শাহরুল ইসলাম গাংনীর গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামের পঞ্চাতন শেখের ছেলে এবং চঞ্চল হোসেন মেহেরপুরের কালীগাংনী গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মেহেরপুরের কামদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশের গলি থেকে শাহারুল, চঞ্চল এবং শাব্দুল হোসেনের নামের ৩ জনকে আটক করেন। ওই সময় শাহারুল ইসলামের প্যান্টের পকেট থেকে ১০০ গ্রাম ওজনের হিরোইন এবং চঞ্চল হোসেনের গেঞ্জির পকেট থেকে ৫০ গ্রাম করে হেরোইন জব্দ করা হয়।
ঐ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
পরে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ৮ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেন।
এতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাহারুল ও চঞ্চলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ভারপ্রাপ্ত পিপি আসাদুজ্জামান, আসামি শাহারুলের পক্ষে সেলিম রেজা কল্লোল এবং চঞ্চলের পক্ষে আলম হোসেন আইনজীবী হিসেবে ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইলিশ ধরায় ৯ জেলের কারাদণ্ড
১৪৬ দিন আগে