তুর্ক
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের নৃশংসতার প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার আশা তুর্কের
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেছেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত নৃশংসতার তদন্তকারী জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বুধবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ কথা বলেন।
এ সময় তুর্ক ঢাকায় জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের কাজ এবং উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, সংস্কার কমিশনের প্রধান, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠক সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জাতিসংঘের টিম স্বাধীনভাবে তাদের কাজ করছে এবং এ বিষয়ে তাদের কোনো প্রভাব নেই।
শফিকুল আলম আরও বলেন, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে এবং পরে তারা প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টাদের কাছেও হস্তান্তর করবেন।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পরিবেশ উপদেষ্টা
সংবাদ সম্মেলনে প্রেস উপসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বক্তব্য দেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাজ নিয়েও আলোচনা করেন, যা এখন দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থবহ সংস্কার পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠন করেছ। এটি বিপ্লবের সময় সংঘটিত জঘন্য অপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করছে।
স্বৈরশাসনের সময় গুমের শত শত ঘটনা তদন্তকারী তদন্ত কমিশনের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেন জানিয়ে তুর্ক বলেন, 'অনেকগুলো আছে, যা নির্দিষ্ট করা দরকার।’
তুর্ক বলেন, তার অফিস তদন্ত কমিশনকে সহযোগিতা করছে।
তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে 'স্বাধীন' ও 'পূর্ণাঙ্গ কার্যকরী' করে শক্তিশালী করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ঢাকায় তাদের উপস্থিতি জোরদার করতে চায়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানকে বাংলাদেশে সফর এবং বিপ্লবের সময় তার সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানান। ‘আপনাদের সফরে বাংলাদেশের মানুষ খুশি। তারা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তার সরকার প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এবং উন্নয়ন ও মানবাধিকার যাতে একসঙ্গে চলতে পারে তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, তার সরকার আগের সরকারের ভুল ও অপরাধের পুনরাবৃত্তি করবে না।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা সংকট বিশেষ করে মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া নতুন করে হাজার হাজার রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ নিয়েও আলোচনা করেন।
তুর্ক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আরও আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং সংকট সমাধানে অব্যাহত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপদ অঞ্চল গঠনে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন, যাতে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজন তাদের বাড়ির কাছাকাছি থাকতে পারে।
উভয় বিশিষ্ট ব্যক্তি এই আঞ্চলিক ইস্যুটির দ্রুত টেকসই সমাধানের জন্য ‘কিছুটা গতিশীলতা’ আনার লক্ষ্যে জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: যেকোনো হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হওয়া উচিত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান
১ ঘণ্টা আগে