ফুকেট
থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
যে কোনো মৌসুমেই শীত ও উষ্ণতার আরামপ্রদ মেলবন্ধন খুঁজে পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে সমুদ্র সৈকত। রৌদ্রস্নান বা রোদের আলোয় চকচকে পানিতে নৌকা নিয়ে উন্মত্ত জলরাশির বুকে ভেসে যাওয়া এক অনন্য জীবনের স্বাদ দেয়। এই দুঃসাহসিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সাগর পাড়ের জনপদগুলোর স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। বিশ্বজুড়ে এমন শত শত গন্তব্য থাকলেও সৌন্দর্য্য ও প্রাণবন্ততায় সেগুলোর সঙ্গে একদমই মেলানো যাবে না থাইল্যান্ডের ফুকেটকে। আন্দামান সাগরের বুকে টুকরো ভূ-খণ্ডগুলো যেন একেকটা চোখ ধাঁধানো বৈচিত্র্যের উপাখ্যান। চলুন, সৈকত পরিব্রাজকদের প্রিয় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এই পর্যটনকেন্দ্রটির ভ্রমণ বিষয়ক বিস্তারিত তথ্যাবলি জেনে নেওয়া যাক।
ফুকেটের অবস্থান
আন্দামান সাগরে থাইল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি প্রদেশ ফুকেট। প্রদেশের অন্তর্গত ৩২টি ছোট ছোট দ্বীপের মধ্যে প্রধান ও বৃহত্তম দ্বীপটির নাম ফুকেট। এর দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ফুকেট শহরটি গোটা প্রদেশের রাজধানী।
ফুকেটের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
পুরো দ্বীপাঞ্চলটিকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে এর ছোট-বড় সৈকতগুলো। শহরে অত্যাধুনিক পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে এলেও পর্যটকরা সৈকতে একবার ঢুঁ মেরে যেতে একদমই ভোলেন না। তাছাড়া এই বালিয়াড়ির স্বর্গরাজ্যগুলোর আশেপাশেই রয়েছে মনোমুগ্ধকর কিছু জায়গা। চলুন, সেগুলোর মধ্য থেকে সর্বাধিক আকর্ষণীয় স্থানগুলোর ব্যাপারে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
ফি ফি আইল্যান্ড
মনোরম পরিবেশের এই দ্বীপটির দুটি ভাগে বিভক্ত: একটি ফিফি ডন ও আরেকটি ফিফি লে। নীলচে সবুজ পানির ওপর দিয়ে প্রতিদিনই এই দ্বীপে যাতায়াত করে ফুকেটের ক্রুজ। ক্রুজে চড়ার পাশাপাশি এখানে সুযোগ রয়েছে স্কুবা ডাইভিং, স্নোরকেলিং, সার্ফিং ও এনেমনে রীফসহ নানা ধরনের রোমাঞ্চকর রাইডের।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনাম ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ফাং এনগা বে
৪২টি দ্বীপের এই অগভীর উপসাগরটি ফুকেটের সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ জায়গাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর বনাঞ্চলের জলাভূমিতে রয়েছে নানা প্রজাতির ম্যানগ্রোভ, সমুদ্র ঘাসের বিছানা ও প্রবাল প্রাচীর। এগুলোর সঙ্গে চারপাশের গুহাগুলো যেন কতক রহস্যের পসরা সাজিয়ে রেখেছে।
জেমস বন্ড আইল্যান্ড
ফাং এনগা বের প্রধান আকর্ষণ এই দ্বীপটি। আসল নাম খাও ফিং কান। ১৯৭৪ সালের বিখ্যাত জেমস বন্ড মুভি ‘দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান’-এর কিছু দৃশ্যের শুটিং এখানে হয়েছিল। সেই থেকে দ্বীপটি জেমস বন্ডের নামেই অধিক পরিচিতি লাভ করে। এখানে পর্যটকদের জন্য সাঁতার কাটা, সেইলিং ও কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
ফুকেট সৈকত
দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে বৃহত্তম দ্বীপ হওয়ায় ফুকেটের সৈকতে দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকে অনেক বেশি। এখানে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ থাকে সান বাথ, সাঁতার, স্নোরকেলিং, জেট স্কাইং, প্যারাসেইলিং, বানানা বোট ও হবি ক্যাট সেইলিংয়ের দিকে।
বিগ বুদ্ধা
দ্বীপের দক্ষিণে গেলে চোখে পড়বে নক্কার্ড পাহাড়ের চূড়ায় সাদা মার্বেলে গড়া বিশাল বুদ্ধের মূর্তি। এর উচ্চতা ৪৫ মিটার ও প্রস্থ ২৫ দশমিক ৪৫ মিটার। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার পর উত্তরে দেখা যাবে ফাং এনগা থেকে পুরো চালং উপসাগর। দক্ষিণে দৃষ্টিপটে বিস্ময়ের খোরাক যোগাবে কাতা সমুদ্র সৈকত। নিচে যাওয়ার পথে প্যানোরামিক বারগুলো থেকে চোখে পড়বে বার ক্যারন সৈকতে পাখিদের ঝাঁক।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ফুকেট অ্যাকোয়ারিয়াম
সাঁতার জানা নেই অথচ পানির নিচের জগৎ দেখার অগাধ স্পৃহা। এমন পর্যটকদের জন্য সেরা গন্তব্য হচ্ছে এই ফুকেট অ্যাকোয়ারিয়াম। এখানে দর্শনার্থীরা বড় এক সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে একটু সামনে এগোতেই সম্মুখীন হন সামুদ্রিক প্রাণীদের।
থাইল্যান্ডের পর্যটন ভিসার আবেদন পদ্ধতি ও খরচ
ফুকেট ভ্রমণে যেতে হলে প্রথমে থাই ট্যুরিস্ট ভিসা নিতে হবে। এর জন্য একক এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করা যেতে পারে, যার মেয়াদ থাকবে ৩ মাস পর্যন্ত। ভ্রমণের জন্য সম্ভাব্য তারিখের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে থেকে এই আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা জরুরি। একক এন্ট্রি ক্যাটাগরির জন্য ভিসা আবেদন ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং ভিসা হাতে পেতে সময় লাগতে পারে সাধারণত ৭ কার্যদিবস।
আবেদন করার ফর্ম পাওয়া যাবে https://thaivisabd.com/forms/NewVisaApplicationForm.pdf-এই লিংকে।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
৩ সপ্তাহ আগে