প্রাণীজগৎ
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রকৃতি, প্রাণীজগৎ ও পরিবেশের সুরক্ষা করতে হবে: রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রকৃতি, প্রাণীজগত ও পরিবেশের সুরক্ষার দিকে নজর দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় মানবজাতির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং দায়িত্বশীল আচরণ অত্যন্ত জরুরি। বন্যপ্রাণী নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে বা লড়াই করতে পারে না; তাই তাদের অধিকার ও প্রকৃতির অধিকার রক্ষা আমাদের দায়িত্ব।
প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই আমাদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত রাখতে পারে বলে মনে করেন রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিশ্ব 'ওয়ান হেলথ ডে ২০২৪' উদযাপন উপলক্ষে ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: ঢাকার নদী ও খালগুলোকে বাঁচাতে হলে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এক স্বাস্থ্য ধারণা একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি, যা মানব স্বাস্থ্য, প্রাণী স্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত সুস্থতার অভিন্ন সংযোগকে চিহ্নিত করে। তাই এদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে জনগণকে যুক্ত করতে হবে। এক স্বাস্থ্য ধারণার ওপর বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।’
এসময় পরিবেশ উপদেষ্টা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এক স্বাস্থ্য মডেল কার্যকর করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এই লক্ষ্য অর্জনে সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার সেন্টমার্টিন এবং পর্যটন শিল্পকে একসঙ্গে রক্ষা করতে চায়। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোনো অবকাশ নেই বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ওয়ান হেলথ-এর মধ্যে শুধু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থাকলেই হবে না, এখানে কৃষি, শিল্প মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
কৃষিতে পেস্টিসাইড, হার্বিসাইড ব্যবহারের ফলে দেশের উৎপাদিত কৃষিপণ্য মানুষ ও প্রাণী স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, ‘আমরা খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন বাড়িয়েছি কিন্তু নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে যথেষ্ট পরিমাণ গুরুত্বারোপ করি নাই। ওয়ান হেলথ এপ্রোচের মাধ্যমে মানুষ, প্রাণী ও কৃষি উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা হলে মানব স্বাস্থ্য রক্ষা হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম. এ. আকমল হোসেন আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর; বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি ডা. রাজেশ নারওয়াল, এফএওর প্রতিনিধি ঝিয়াওকুন শি, ইউএসএইডের মিশন পরিচালক রিড জে. আইশলিম্যান; ওয়ান হেলথ বাংলাদেশের জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. নীতীশ চন্দ্র দেবনাথ এবং ওয়ান হেলথ সেক্রেটারিয়েট সমন্বয় কমিটির চেয়ার অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন।
অনুষ্ঠানে ওয়ান হেলথ প্রতিযোগিতা ২০২৩ ও ২০২৪-এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পানি ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণে সহায়তা বাড়াবে চীন: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
২ সপ্তাহ আগে