হ্যারিস
গণতন্ত্রে প্রভাবিত হ্যারিস সমর্থক, আর মুদ্রাস্ফীতি ও অভিবাসনে ট্রাম্প সমর্থকরা
মঙ্গলবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট প্রদানকারী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোটারদের কাছে গুরুত্বের বিষয় ছিল সম্পূর্ণরূপে আলাদা। যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সমস্যাগুলো নিয়ে জাতির মধ্যে একটি বৃহত্তর বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠে এ নির্বাচনে।
দেশজুড়ে ১ লাখ ১৫,০০০ এরও বেশি ভোটার নিয়ে পরিচালিত জরিপ এপি ভোটকাস্টে দেখা গেছে, গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ হ্যারিসের সমর্থকদের জন্য প্রধান অনুপ্রেরণা। প্রচারের শেষ দিকে ট্রাম্পকে ধারাবাহিকভাবে ফ্যাসিবাদী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন হ্যারিস। সেটিই সম্ভবত কার্যকর হয়েছে।
এতে আরও দেখা গেছে, দেশটি নেতিবাচকতা ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় ডুবে রয়েছে। ট্রাম্পের সমর্থকরা মূলত অভিবাসন ও মুদ্রাস্ফীতির উপর ফোকাস করছিলেন—দুটি সমস্যা যা সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট তার প্রচারণার শুরু থেকেই তুলে ধরেছেন।
ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিদেশি পণ্যে শুল্ক আরোপের। এতে স্থানীয় কারখানার কর্মসংস্থান বাড়বে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ তেল উৎপাদন বাড়িয়ে দাম কমিয়ে আনবে।
সামগ্রিকভাবে, জাতি, শিক্ষা ও সম্প্রদায়ের ধরনের উপর ভিত্তি করে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের জোটগুলো ২০২০ সালের ফলাফলের সঙ্গে মূলত একই রকম দেখা গেছে।
প্রাথমিক এপি ভোটকাস্টের ফলাফলে দেখা গেছে, কিছু ডেমোগ্রাফিক গোষ্ঠীর মধ্যে পরিবর্তনের ইঙ্গিত রয়েছে, যা চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে তরুণ, কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিক ভোটারদের মধ্যে।
মূল অগ্রাধিকারের বিষয়ে ভোটারদের পরস্পরবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা গেছ। বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত যিনিই জয়ী হবেন তার জন্য এটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। ভোটাররা একেক প্রার্থীর গুণাবলীকে একেকভাবে দেখেছেন। তারা হ্যারিসের চেয়ে ট্রাম্পকে একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে বর্ণনা করছেন। তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হিসেবে হ্যারিসকে এগিয়ে রেখেছেন ভোটাররা।
আরও পড়ুন: শুরুতেই ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও দোদুল্যমাণ রাজ্যগুলোর ফলাফল এখনো ঘোষণা হয়নি
হ্যারিস ও ট্রাম্পের ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে একমত হতে পারেননি।
হ্যারিসের ভোটারদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বলেছেন, গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ তাদের ভোটের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উচ্চ মূল্য, গর্ভপাত নীতি, দেশে বাক স্বাধীনতার ভবিষ্যৎ বা প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাবনা- অন্য কোনো বিষয় তার সমর্থকদের জন্য এত বড় বিষয় ছিল না।
অন্যদিকে ট্রাম্পের ভোটাররা অর্থনৈতিক ইস্যু ও অভিবাসন নিয়ে বেশি উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। প্রায় অর্ধেক ভোটার বলেন, উচ্চ মূল্য তাদের নির্বাচনি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল। যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে এমনটাই বলেছেন অনেকে। ট্রাম্পের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ ভোটার বলেছেন, গণতন্ত্র তাদের ভোটের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।
ট্রাম্পের প্রায় অর্ধেক সমর্থক দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে অর্থনীতি ও চাকরির বিষয়কে উল্লেখ করেছেন। প্রায় এক তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হচ্ছে অভিবাসন।
এদিকে, হ্যারিসের সমর্থকরা সেই তুলনায় আরও বিস্তৃত সমস্যা নিয়ে মনোযোগী ছিলেন। প্রায় ৩ জনের মধ্যে একজন অর্থনীতিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রায় দুইজনের মধ্যে একজন বলেছেন গর্ভপাত এবং প্রায় ১০ জনের মধ্যে একজন স্বাস্থ্যসেবা অথবা জলবায়ু পরিবর্তনকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
২ সপ্তাহ আগে
শুরুতেই ট্রাম্প এগিয়ে থাকলেও দোদুল্যমাণ রাজ্যগুলোর ফলাফল এখনো ঘোষণা হয়নি
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দোদুল্যমাণ রাজ্য নর্থ ক্যারোলাইনায় জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ এই রাজ্য জয় করেই ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে চেয়েছিলেন কমলা হ্যারিস।
নির্বাচনি প্রচারের শেষ তিন দিনে এ রাজ্য সফর করেছিলেন ট্রাম্প। এ রাজ্যে হ্যারিসকে পরাজিত করার উদ্দেশ্যেই তিনি এ সফর করেন।
কমলা হ্যারিসের প্রচার শাখার চেয়ারম্যান জেন ও'ম্যালি ডিলন এক নির্দেশনায় কর্মীদের বলেছেন, মিশিগান, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনের 'নীল দেয়াল' এখন ডেমোক্র্যাটদের জয়ের 'পরিষ্কার পথ’।
আরও পড়ুন: কমলা হ্যারিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন টিম ওয়ালজ
সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস যথাক্রমে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট অঙ্গরাজ্যগুলোতে আগাম জয় পেয়েছেন।
পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, মিশিগান, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, নর্থ ক্যারোলাইনা ও নেভাদায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।
সাম্প্রতিক নির্বাচনে রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকে পড়া এক সময়ের দোদুল্যমাল রাজ্য ফ্লোরিডায় জয়ী হয়েছেন ট্রাম্প। টেক্সাস, সাউথ ক্যারোলাইনা ও ইন্ডিয়ানার মতো রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্যগুলোতে আগাম জয় পেয়েছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে নিউইয়র্ক, ম্যাসাচুসেটস ও ইলিনয়ের মতো ডেমোক্র্যাটদের শক্ত ঘাঁটি দখল করেছেন কমলা হ্যারিস।
এপির ভোটকাস্ট অনুযায়ী, গত চার বছরে কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিনো ভোটাররা যেভাবে জো বাইডেনকে সমর্থন দিয়েছিলেন, তার তুলনায় এসব ভোটারের সমর্থন হ্যারিসের প্রতি খানিকটা কম বলে মনে হয়েছে। ২০২০ সালের তুলনায় ট্রাম্পের সমর্থন ওই ভোটারদের মধ্যে কিছুটা বেড়েছে।
দেশজুড়ে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি ভোটারের ওপর চালানো একটি জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেসির ভবিষ্যৎ হ্যারিসের সমর্থকদের জন্য প্রধান অনুপ্রেরণা। প্রচারের শেষ দিকে ট্রাম্পকে র ধারাবাহিকভাবে ফ্যাসিবাদী হিসেবে অভিযুক্ত করেছিলেন হ্যারিস। সেটিই সম্ভবত কার্যকর হয়েছে।
এতে আরও দেখা গেছে, দেশটি নেতিবাচকতা ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষায় ডুবে রয়েছে। ট্রাম্পের সমর্থকরা মূলত অভিবাসন ও মুদ্রাস্ফীতির উপর ফোকাস করছিলেন—দুটি সমস্যা যা সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট তার প্রচারণার শুরু থেকেই তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন: রোল কল ভোটে ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নির্বাচিত কমলা হ্যারিস
২ সপ্তাহ আগে