ডুব: নো বেড অফ রোজেস
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সেরা কাজগুলো: চলচ্চিত্র, ধারাবাহিক ও নাটক
২১ শতকে যে নির্মাতার হাত ধরে বাংলাদেশের নাট্য ও চলচ্চিত্রাঙ্গনে ভিন্ন ধারার অবতারণা হয়েছে তিনি হলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছকে বাধা লিখিত চিত্রনাট্যের বাইরে থেকে গল্পকে নাট্যরূপ দেওয়ার ধারা শুরু হয়েছে তার মাধ্যমে। চিরাচরিত প্রথাকে পাশ কাটিয়ে জীবনের অনেক সমসাময়িক প্রেক্ষাপটকে অনবদ্যভাবে উপস্থাপন করেছেন এই শক্তিমান নির্মাতা। আলোচনার পাশাপাশি সমালোচনা থাকলেও এই নতুনত্বকে সাদরে গ্রহণ করেছে সর্বস্তরের দর্শক। শুধু তাই নয়, শুরু থেকেই তার কাজগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে। চলুন, মেধাবী এই পরিচালকের সেরা কিছু সিনেমা এবং নাটকের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সেরা ১০টি কাজ
.
ব্যাচেলর / ২০০৪
কমেডি ও রোমান্টিক ঘরানার এই ছবিটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে সিনেমা পরিচালনা শুরু করেন ফারুকী। মূল কাহিনী লিখেছিলেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। নানা আঙ্গিকে হাস্যরসের মধ্য দিয়ে এখানে প্রকাশ পেয়েছিলো তদানীন্তন তরুণ প্রজন্মের জীবনধারণের কথা। তরুণ সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল কয়েকজন বিভিন্ন বয়সের ব্যাচেলর বন্ধুকে। এদের নিত্যদিনের জীবনাচরণ, প্রেম, ও আবেগ নিয়ে এগোতে থাকে চলচ্চিত্রের গল্প।
এখানে অভিনয় করেছিলেন হুমায়ুন ফরীদি, ফেরদৌস আহমেদ, শাবনূর, ও আহমেদ রুবেলের মতো তারকারা। ‘ব্যাচেলর’-এর মাধ্যমে ফিল্ম ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে অপি করিম, জয়া আহসান, আরমান পারভেজ মুরাদ, সুমাইয়া শিমু, মৌটুসি বিশ্বাস, হাসান মাসুদ, এবং মারজুক রাসেলের মতো তারকাদেরও।
আরো পড়ুন: ভূতের গল্পে পর্দায় আসছেন সত্যম, সন্দীপ্তা ও সুহত্র
চলচ্চিত্রটির অর্জনের মধ্যে রয়েছে নিউ জার্সি ইন্ডিপেন্ডেন্ট সাউথ এশিয়ান সিনে ফেস্ট, মুম্বাইয়ের থার্ড আই আইএফএফ, এবং ইতালির এশিয়াটিকা ফিল্মমিডিয়ালে অফিসিয়াল সিলেকশন।
মেড ইন বাংলাদেশ / ২০০৬
ফারুকী এই রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক ছবিটি বানিয়েছিলেন আনিসুল হকের ‘জিম্মি’ উপন্যাস অবলম্বনে। পুরো ছবিটি মূলত রাষ্ট্রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক বেকার তরুণের দীর্ঘ দিনের সুপ্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
খোরশেদ নামের এই বেকার যুবকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জাহিদ হাসান। তারকা নির্ভর এই সিনেমায় আরও ছিলেন শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, তারিক আনাম খান, শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি, তানিয়া আহমেদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, হাসান মাসুদ, মারজুক রাসেল, ফজলুর রহমান বাবু এবং রেদওয়ান রনি।
ছবিটি ২০০৮ সালে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর জুরি বোর্ডে স্পেশাল মেনশন পেয়েছিল।
আরো পড়ুন: সুজিত সরকারের সঙ্গে অভিষেক বচ্চনের নতুন ছবি 'আই ওয়ান্ট টু টক'
ক্যারাম- ১ ও ২ / ২০০৬
দুই পর্বের এই টেলিফিল্মটির স্ক্রিপ্ট লিখেছিলেন ফারুকী এবং কচি খন্দকার।
আঙ্গুলে সমস্যা থাকা শফিকুলের ক্যারাম খেলা নিয়ে বেজায় বিড়ম্বনা। এ জন্য পাড়ায় প্রায় তাকে হাসির পাত্র হতে হয়। তাকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া হয় যে, সে যদি তপনকে ক্যারাম খেলায় হারাতে পারে, তাহলে তাকে নিয়ে আর কেউ হাসি-ঠাট্টা করবে না।
এমনি মজার গল্প নিয়ে ফারুকী পরিচালনা করেছিলেন টেলিফিল্মটি, আর এর মাধ্যমে সর্বপ্রথম লাইমলাইটে আসেন অভিনেতা মোশাররফ করিম।
এতে তার সহ অভিনয়শিল্পীরা ছিলেন নুসরাত ইমরোজ (তিশা), রিফাত চৌধুরী, কচি খন্দকার, বাপ্পি আশরাফ, ও ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল।
আরো পড়ুন: মার্চে মুক্তি পাচ্ছে সি শঙ্করন নায়ারকে নিয়ে নির্মিত অক্ষয় ও করণ জোহরের ছবি
৪২০ / ২০০৭-২০০৮
ছোট পর্দায় ফারুকীর মাস্টারপিস হচ্ছে এই পলিটিক্যাল কমেডি সিরিজটি। ধারাবাহিক নাটকটিতে ছোট্ট পরিসরে হাস্যরসের নেপথ্যে দেখানো হয়েছে বাংলদেশের রাজনীতিবিদদের উত্থান-পতন। নাটকের গল্পে দেখা যায় চুরি করে গ্রাম থেকে পালিয়ে শহরে আসা দুই ভাই ঘটনাক্রমে জড়িয়ে পড়ে রাজনীতিতে। নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে ক্রমশ তারা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হয়। কিন্তু তাদের আভিজাত্য বেশি দিন স্থায়ী হয় না।
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন মোশাররফ করিম ও লুৎফর রহমান জর্জ। এছাড়াও গোটা ধারাবাহিক জুড়ে ছিলেন তিশা, সোহেল খান, মারজুক রাসেল, রিফাত চৌধুরী, কচি খন্দকার, এবং সিদ্দিকুর রহমান।
সিক্সটি নাইন / ২০০৮-২০০৯
রচয়িতা আনিসুল হক এবং নির্মাতা ফারুকীর সমন্বয়ে নির্মিত জনপ্রিয় মেগাসিরিজগুলোর একটি এই ফ্যামিলি ড্রামা। এটি বাবা-মা এবং ছয় সন্তান বিশিষ্ট এক পরিবারের গল্প। নিজস্ব অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে থাকার পরেও, একসঙ্গে সুন্দর সময় কাটানোর জন্য তারা কখনোই একত্রিত হতে পারে না।
এখানে শ্রেষ্ঠাংশে ছিলেন তিশা, শহীদুজ্জামান সেলিম, হাসান মাসুদ, জয়া আহসান, শ্রাবন্তী দত্ত তিন্নি, ফজলুর রহমান বাবু, আহমেদ রুবেল, মারজুক রাসেল, এবং রিফাত চৌধুরী।
আরো পড়ুন: অস্কারে যাচ্ছে লাপাতা লেডিস
১ দিন আগে