ভিয়েতনামের হা লং বে
ভিয়েতনামের হা লং বে দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ: ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা মেলে এশিয়া ভ্রমণে। ভ্রমণবান্ধব এই মহাদেশে ভিন্ন সংস্কৃতির জনপদ যেমন রয়েছে,ঠিক তেমনি রয়েছে ঝর্ণাস্নাত শান্ত পাহাড়,প্রাণবন্ত রেইনফরেস্ট ও আদিম সৈকত। তবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনামে এমন কিছু প্রাকৃতিক নিদর্শন রয়েছে,যা দেখার জন্য কেবল এই দেশেই বারবার ফিরে আসতে হবে। তারমধ্যে অত্যাশ্চর্য দর্শনীয় স্থানটি হলো হা লং বে,আর বিশ্ব পরিব্রাজকদের এই জনপ্রিয় গন্তব্য নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন,বিস্তারিত ভ্রমণ বৃত্তান্তের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক, ঠিক কোন বিষয়গুলো হা লং বে’কে অন্যান্য বিশ্ব পর্যটনকেন্দ্র থেকে আলাদা করেছে
হা লং বে দ্বীপপুঞ্জের ভৌগলিক অবস্থান
উত্তর-পূর্ব ভিয়েতনামের কোয়াং নিন প্রদেশে অবস্থিত হা লং বে। উপসাগরটি কোয়াং ইয়েন শহর থেকে শুরু হয়ে হা লং ও ক্যাম ফা শহর পেরিয়ে ভ্যান ডন জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ল্যান হা বে,উত্তরে হা লং শহর এবং পশ্চিমে বাই তু লং বে-এর সঙ্গে এর সীমান্ত।
১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলরেখার এই উপসাগরের প্রায় ১,৫৫৩ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে প্রায় ২ হাজার ছোট দ্বীপ রয়েছে।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
হা লং বে-এর বিশেষত্ব
উপসাগরটির বিশেষত্ব হলো এর নানান আকার-আকৃতির চুনাপাথরের কার্স্ট এবং ছোট দ্বীপগুলো। একে ঘিরে বিশাল অঞ্চলগুলোর প্রত্যেকটিরই ভূতাত্ত্বিক ও জলবায়ু সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যগুলো একই রকম।
১৯৬২ সালে ভিয়েতনামের সংস্কৃতি,খেলাধুলা ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বে’টিকে একটি ‘বিখ্যাত জাতীয় ল্যান্ডস্কেপ স্মৃতিচিহ্ন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
বিশ্ব জুড়ের শৈল্পিক মূল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ অঞ্চলটি ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। এছাড়া ২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি হা লং বেকে তার স্বতন্ত্র ভূতাত্ত্বিক মূল্যের জন্য স্বীকৃতি দেয়।
২০১২ সালে নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন আনুষ্ঠানিকভাবে উপসাগরটিকে প্রকৃতির নতুন ৭ আশ্চর্যের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
হা লং বে ভ্রমণে কি কি দেখবেন আশ্চর্য কয়েকটি গুহা
এখানকার রহস্যময় গুহাগুলোর বর্তমান আকৃতি পেতে লেগেছে লাখ লাখ বছর। দানবীয় আকার ছাড়াও,গুহাগুলোর প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে স্ট্যালাগ্মাইট এবং স্ট্যালাক্টাইট।
স্ট্যালাক্টাইট বা উষ্ণ প্রস্রবণ হলো এক ধরনের খনিজ গঠন, যা গুহার ছাদ থেকে বরফের মতো জমাট বেঁধে ঝুলে থাকে। মূলত গুহার চুনাপাথরের ছাদ থেকে পানি ঝরার সময় চুনাপাথর দ্রবীভূত হয়ে এগুলো তৈরি হয়।
অপরদিকে,স্ট্যালাগ্মাইটও একই ধরণের খনিজ গঠন;পার্থক্য শুধু এই যে,এই শিলাকৃতির গঠনগুলো গুহার মেঝে থেকে উর্ধ্বমুখী হয়ে বৃদ্ধি পায়। অনেকটা সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের মতো;তবে দেখতে বরফাকৃতির।
শুধুমাত্র এই খনিজ গঠনগুলো কাছ থেকে দেখার জন্যই এখানে ভিড় করেন দেশ-বিদেশের লাখ লাখ পর্যটক।
তন্মধ্যে,রঙিন স্ট্যালাক্টাইট দেখা যায় থিয়েন কুং গুহায়। সবচেয়ে জনপ্রিয় অত্যাশ্চর্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে সুং সট এবং ডাউ গো গ্রোটো গুহা দুটি। কায়াকিংয়ের জন্য উৎকৃষ্ট হচ্ছে লুওন গুহা। গুহার একদম ভেতর থেকে সূর্যালোক দেখতে যেতে হবে ত্রিন নু গুহায়। মেজ কেভ সত্যিই দর্শনার্থীদের গোলক ধাঁধায় ফেলে দেয়। সেই সঙ্গে গুহার দেয়ালে আলোর প্রতিফলনের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ পর্যটকদের মনস্তত্ত্বের সঙ্গে খেলা করে|
আরো পড়ুন: নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
১ সপ্তাহ আগে