ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান
সব শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে: ড. ইউনূস
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে প্রাণ হারানো সব শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস একথা বলেন।
ভাষণের শুরুতেই এদিন মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহিদ, গত জুলাই-আগস্ট মাসের অভ্যুত্থানে নিহত সকল শহিদ এবং অভ্যুত্থানে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অভ্যুত্থানে হতাহতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সব শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। একজনও বাদ যাবে না। পাশাপাশি সব আহত শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবে সরকার।’
আরও পড়ুন: সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন ২৭ দেশের রাষ্ট্রদূত
আহতদের দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘প্রতিটি শহিদ পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ লাখ টাকা দেয়া হচ্ছে। যারা বুলেটের আঘাতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, তাদের চিকিৎসার জন্য নেপাল থেকে কর্নিয়া আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাদের প্রয়োজন তাদের সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য বিদেশেও পাঠানো হচ্ছে।’
‘জুলাই অভ্যুত্থানের কোনো শহিদ এবং আহত ছাত্র ও শ্রমিক চিকিৎসা সেবা ও পুনর্বাসন পরিকল্পনা থেকে বাদ যাবে না। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকার।’
তিনি জানান, অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মৃতি ধরে রাখতে গঠিত ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ বেশ পাকাপোক্তভাবে তাদের কাজ শুরু করেছে। এই ফাউন্ডেশনে সরকার ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।
এছাড়া জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহিদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি বরাদ্দ প্রস্তাব অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে
২ ঘণ্টা আগে
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ পালিয়ে গেলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়ে। সেই সময় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা একথা বলেন।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ে আমাদের কোনো লুকোছাপা নেই: ড. ইউনূস
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, বাংলাদেশ তখন সম্পূর্ণ অরক্ষিত একটা দেশ। এসময় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে অহেতুক আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে তারা সহিংসতারও শিকার হয়েছেন। কিন্তু এটা নিয়ে যেসব প্রচার-প্রচারণা হয়েছে তা ছিল সম্পূর্ণ অতিরঞ্জিত।’
তিনি বলেন, ‘অল্প যে সমস্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর মূল কারণ ছিল রাজনৈতিক। কিন্তু এসব ঘটনাকে ধর্মীয় আবরণ দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা হয়েছে।’
সবার সহযোগিতায় দৃঢ়ভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছেন বলে দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শক্তি ভয় দেখিয়েছিল, তারা ক্ষমতা ছাড়লে দেশে লাখ লাখ লোক মারা পড়বে। অথচ, টানা ৭ দিন পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় থাকার পরও ব্যাপক আকারে সহিংসতা এড়ানো গেছে।’
আরও পড়ুন: ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার করব: অধ্যাপক ইউনূস
মুহাম্মদ ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাসের মাথায় দেশের প্রায় ৩২ হাজার পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে নির্বাহী আদেশে একদিন অতিরিক্ত ছুটি ঘোষণা করা হয় যা উৎসবের আমেজকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
তার ভাষ্যে, ‘দূর্গাপুজা ঘিরে আমরা ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেই। যার ফলে, দেশের হিন্দু সম্প্রদায় নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করেছে। আমরা দায়িত্বে আসার পর যে অল্প কিছু ক্ষেত্রে তারা সহিংসতার শিকার হয়েছেন, আমরা তার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করছি।’
শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ই নয়, দেশের কোনো মানুষই যাতে কোনো রকম সহিংসতার শিকার না হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে এবং সবসময় তা করে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
আরও পড়ুন: অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করেই নির্বাচন আয়োজন করব: প্রধান উপদেষ্টা
২ ঘণ্টা আগে