সফর রাজ হোসেন
৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে জানাতে হবে পরিবারকে: সফর রাজ হোসেন
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন বলেছেন, ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে।
তিনি বলেন, কার্যবিধির ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয় সেটির ক্ষেত্রেও হাইকোর্টের নির্দেশনা মানতে হবে। ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে ফোনে জানাতে হবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা বেশকিছু বিষয়ে একমত হয়েছি। এছাড়া দুটি কড়া আইন রয়েছে। ৫৪ ধারা অনুযায়ী পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার করতে পারে। আরেকটি ১৬৭ ধারায় যেখানে পুলিশ রিমান্ডে নেয়। এ দুটি ক্ষেত্রে আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক নই। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মালিক না। এটা সিআরপিসি। আইন মন্ত্রণালয়ের আইন।
আরও পড়ুন: কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গণমাধ্যম সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে: তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, এসব বিষয়ের কারণে আমরা আইন মন্ত্রণালয় থেকেও একজন যুগ্ম সচিবকে এই সংস্থার কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করেছি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি দীর্ঘদিন হলো এসব বিষয় নিয়ে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। ব্লাস্ট নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ড. কামাল হোসেন এ বিষয়ে একটি রিট করেছিলেন। ওই রিটে হাইকোর্ট বলেছিলেন এই আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, এ ক্ষেত্রে অনেকগুলো গাইডলাইন দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে এই বিষয় নিয়ে সরকার আপিল বিভাগে যায়। সেখান থেকে বলা হয়, এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা আগেই দেওয়া আছে। অর্থাৎ আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারের সংস্থাগুলোকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে অবশ্যই তার পরিবারের লোকজনকে সেটা জানাতে হবে। এটা হাইকোর্টের একটি রায়। আপনারা জানেন হাইকোর্টের রায় আইনের একটি অংশ।
পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এক নম্বর শত্রু হচ্ছে দুর্নীতি৷ কোনো বিভাগের দুর্নীতি কমে গেলে সেখানে কর্মদক্ষতা বাড়ে, আইনের প্রতি মানুষ শ্রদ্ধাশীল হয়। এছাড়া আমাদের দেশের বড় সমস্যাই দুর্নীতি৷ আমরা পুলিশের বেতন নিয়ে আলোচনা করেছি, আগামীকাল আরও আলোচনা হবে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশসহ সরকারের সকল বিভাগকে রাজনীতিমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। আমাদের গত ১৫ বছরের নিকট অতীতে দেখেছি পুলিশসহ অন্যান্য বিভাগগুলোতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন। এছাড়া অনেকে দুর্নীতি করেছে এবং পদোন্নতি নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এটি বন্ধে সুপারিশের কাজ চলছে। সাদা পোশাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সুপারিশ করিনি, তবে এ বিষয় একটি নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পুলিশ ভেরিফিকেশনে থাকছে না রাজনৈতিক বিবেচনা: সফর রাজ হোসেন
শুধুমাত্র নির্বাচন দেওয়াই এই সরকারের কাজ নয়: উপদেষ্টা নাহিদ
৪ দিন আগে
পুলিশ ভেরিফিকেশনে থাকছে না রাজনৈতিক বিবেচনা: সফর রাজ হোসেন
পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন।
তিনি বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। অক্টোবরের ৬ তারিখ থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ দপ্তরে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর কমিশনের রিপোর্ট দাখিল করার কথা রয়েছে। আমরা মোটামুটি মধ্য সময় এসেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে বেশকিছু কাজ করেছি। এটাকে একটা খসড়ার চূড়ান্ত রূপ বলা যায়।
আরও পড়ুন: পুলিশ বাহিনীর নিজেদের প্রমাণ করার এখনই সময়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সফর রাজ হোসেন বলেন, আমরা যেসব সুপারিশ করছি এর কিছু কিছু বিষয় স্বল্প সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজন। কিছু ক্ষেত্রে সরকার আইন ও বিধিবিধান পাল্টাতে হবে৷ আমরা এগুলো সুপারিশ করছি৷ আমরা শুধু সুপারিশ করার মালিক। এছাড়া সরকারি, আধা সরকারি কিংবা ব্যাংকের চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়। এই পদ্ধতি ১৯২৮ সাল থেকে হয়ে আসছে। এটা প্রায় ৯৬ বছর ধরে চলছে বলে জানান সফর রাজ হোসেন।
তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশ আইনের ম্যানুয়াল অনুযায়ী এখানে কয়েক ধরনের প্রশ্ন এবং তদন্ত করা হয়। এতে অনেক সময় অনেক চাকরিপ্রার্থী বাদ পড়ে। আরেকটি বিষয় আছে আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে কেউ রাজনীতি করে কিনা এবং রাষ্ট্রবিরোধী কেউ আছে কিনা। এটা ব্রিটিশদের আঙ্গিকে চিন্তা করা হতো। সম্প্রতি একটি অভিযোগ এসেছে যে, কারও আত্মীয়-স্বজন রাজনীতি করে কিন্তু সরকারি দল করে না, তাদের ক্ষেত্রে এসব যুক্তি দেখে চাকরি দেওয়া হয়নি৷ দেখা গেছে রাজনৈতিকভাবে তাদের খালা, ফুফা বা অন্য কেউ রাজনীতিতে জড়িত৷ পরিবারের কেউ না হলে চাকরি বঞ্চিত হয়েছেন৷ আমরা এই প্রথাকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছি।
আরও পড়ুন: ২৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি
তিনি বলেন, ব্যাংকের গার্ড থেকে ক্লার্ক সবার চাকরি গুরুত্বপূর্ণ৷ অনেক সময় নাম পরিচয় পরিবর্তন করে কেউ চাকরিতে ঢুকতে পারে৷।পরবর্তীতে দেখা যায় সে অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং ভেরিফিকেশন জরুরি।
তিনি আরও বলেন, যেভাবেই হোক এ পুলিশ ভেরিফিকেশনে যাতে ভোগান্তি না হয় সেই বিষয়ে সুপারিশ করেছি। সুতরাং পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে কিন্তু সেখানে আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক বিবেচনা আমলযোগ্য হবে না।
আরও পড়ুন: পুলিশ-জনগণের সম্পর্ক পুনঃস্থাপন জরুরি: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
৪ দিন আগে