মানবদেহ
‘অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে উপকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হচ্ছে’
মানবদেহের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে অনেক সময় আমাদের শরীরে বসবাসকারী উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, ‘তার চেয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য হলো, আমরা যে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছি তা আবার পরিবেশে ফিরে যাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে কেউ ভাবছে না, এটি যে ভাববার বিষয়, তা আমাদেরই ঠিক করতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) জনসচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ওয়ান হেলথ বলতে যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয় তাহলে তারা শুধু তাদের বিষয় নিয়েই কাজ করবে।’
ওয়ান+ওয়ান= ওয়ান হবে, নাকি ওয়ান বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বুঝাবে তা ভেবে দেখা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
আরও পড়ুন: রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ফরিদা আখতার বলেন, ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সের ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপারে অত্যন্ত দেরি হয়ে গেছে। এখনই কাজ করার সময়, প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে বোঝার ক্ষেত্রে এখনও ঘাটতি রয়েছে। এখন সময় এসেছে দায়িত্ব নেওয়ার।’
কোন কাজ কোথায় করব তা জেনে বুঝে করা অতীব জরুরি বলে মনে করেন ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে। এর অর্থ এই নয় যে স্বাস্থ্যের দিকে আমরা উন্নত। আমরা বেঁচে আছি, তবে ভালোভাবে বাঁচছি না। এখনও অনেক মানুষ অসুখ হলেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করছে।’
‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হওয়ার ফলে মানুষ তথা রাষ্ট্রের খরচ বাড়ছে। আর মানুষ অসুস্থ থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।’
তাই সুস্থতার জন্য ওষুধের ওপর নির্ভর নয়, বরং ওষুধ ছাড়া আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হবে বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।
‘নিরাপদ খাদ্য’ কথাতেই আপত্তি রয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘খাদ্য অনিরাপদ নয়, খাদ্য নিরাপদই হতে হবে। স্কুল-কলেজ পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে।’
‘জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে প্রমাণ হয়েছে, তরুণরাই এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। খাদ্যকে অনিরাপদ করার জন্য বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে, অথচ সেদিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এখানে আমাদের কাজ করতে হবে।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব এটিএম মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, ফ্লেমিং ফান্ড গ্রান্ট বাংলাদেশের টিম লিড প্রফেসর ড. শাহ্ মনির হোসেন, সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং ফর ওয়ান হেলথের চিফ অব পার্টি অধ্যাপক ড. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ, বাংলাদেশে নিযুক্ত খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কান্ট্রি টিম লিডার ড. ইরিখ ব্রুম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান; প্রাণির স্বাস্থ্য খাতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধ ক্ষমতার তথ্য উপস্থাপনা করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. মো. শাহীনুর ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. নূর আসাদ উজ জামান।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করছে সরকার: আইন উপদেষ্টা
১ দিন আগে