নিষেধাজ্ঞার আদেশ
শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রকাশ
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই বিচারপতির সইয়ের পর এ আদেশ প্রকাশ করা হয়।
আদেশের অনুলিপি বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা লন্ডনে ভার্চুয়ালি যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিদ্বেষমূলক কিনা, তা খতিয়ে দেখে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন প্রসিকিউশন।
এর আগে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ ডিসেম্বর জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে লন্ডনের আইনজীবীর মামলা
একইসঙ্গে শেখ হাসিনা আগে যত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তা সব মাধ্যম থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেওয়া হয়। তথ্য সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ আদেশ এখন থেকেই বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
সেদিন ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেছিলেন, শেখ হাসিনা গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার পলাতক আসামি। তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি পলাতক থাকা অবস্থায় বিদেশে বসে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ভিকটিম ও সাক্ষীরা ভয়-ভীতির মধ্যে রয়েছে। এতে বিঘ্ন হচ্ছে তদন্তকাজ।
এ সময় শেখ হাসিনার দুটি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন প্রসিকিউটর তামিম।
একটি বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন যারা বেশি বাড়াবাড়ি করছে তারা ভালো থাকবে না। ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখ। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমার বিরুদ্ধে তো ২২৭টি মার্ডার কেস হয়েছে। ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছি। এক মামলায় যে শাস্তি, ২২৭ জনের মামলায়ও একই শাস্তি। এবার এলে আর ডেভেলপমেন্ট করব না, করব সংস্কার।’
এ ধরনের বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থি। এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, এসব বক্তব্য শেখ হাসিনার কিনা?
তখন প্রসিকিউটর বলেন, অনেক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার এই বক্তব্য এসেছে। ভিডিও রেকর্ডও আছে। পরে ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
গত ১৮ নভেম্বর জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
তদন্ত শেষ করে আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া আদালতে হাজির হওয়া আনিসুল হকসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে আদেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
১ সপ্তাহ আগে