শত কোটি টাকার ফুল বিক্রি
গদখালীতে শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা চাষিদের
ফুলের রাজ্যখ্যাত যশোরের গদখালী অঞ্চলে ব্যাপক কর্মব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে দিন পার করছেন ফুলচাষিরা।
মূলত এই অঞ্চলে বছরজুড়ে ফুলচাষ হলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাস ফুলের মূল মৌসুম। সাধারণত বিজয় দিবস, ইংরেজি নববর্ষ, বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, মহান স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশে ফুলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। আর এসব দিবস কেন্দ্র করেই গদখালীর চাষিরা ফুলের আবাদ করেন।
চলতি বছরে অতি তাপমাত্রা আর অতিবৃষ্টির ধকল কাটিয়ে এবার মৌসুমে চাষিরা অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন।
গদখালি পাইকারি বাজারে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরেই চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে তাদের উৎপাদিত ফুল নিয়ে এসেছেন। ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে জমজমাট ফুলবাজার। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুই পাশে বিভিন্ন জাতের ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুল বিক্রেতারা।
বাজারে দেখা গেছে, প্রতিটি গোলাপের দাম ৬ থেকে ৭ টাকা, রজনীগন্ধার স্টিকের দাম ৮ টাকা। রঙিন গ্লাডিওলাস প্রতিটির দাম মানভেদে ১৪ থেকে ১৬ টাকা, জারবেরা ১৩ থেকে ১৪ টাকা।
ফুল বাঁধাইয়ের জন্য কামিনীর প্রতি আঁটি পাতার দাম ৫৫ টাকা, জিপসির আঁটি ১০০ টাকা।
১০০টি চন্দ্রমল্লিকার ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ১০০০ হাজার গাঁদার দাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, রড স্টিক প্রতি বান্ডিল ২০০ টাকা।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্যমতে, যশোরে প্রায় ৬ হাজার পরিবার ফুলচাষের সঙ্গে রয়েছেন। তারা অন্তত ১২০০ হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেন। প্রতি বছর উৎপাদন করা হয় ১৫০ কোটি টাকার ফুল। দেশের মোট চাহিদার ৭০ ভাগ ফুল সরবরাহ করেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, নির্বাসখোলা ও হাড়িয়া অঞ্চলের ফুলচাষিরা। মৌসুমের শুরুতে ফুলের দামও উঠতে শুরু করেছে।
বছরের অন্যান্য সময় ফুলের দাম পাওয়া গেলেও বর্ষাকালে সেগুলো তেমন বাজারে বিক্রি হয় না। তখন শ্রমিকের খরচ না ওঠায় চাষিরা ফুল গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন।
গদখালীরপটুয়াপাড়া গ্রামের সোহাগ দুই বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, এ বছর অসময়ে বর্ষা হয়েছে। এখন জমিতে বাড়তি পরিচর্যা করছি। সামনের অনুষ্ঠানে দাম ভালো পেলে লাভ হবে।
চাষি হেমায়েত বলেন, দেড় বিঘা জমিতে রঙিন গ্লাডিওলাস চাষ করেছি। বৃষ্টিতে অনেক গাছ মারা গেছে। প্রতি বিঘায় দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। দাম ভালো না পেলে আমাদের ক্ষতি হয়ে যাবে।
দেলবার হোসেন বলেন, ফুলখেতে নতুন করে নিড়ানি দিয়ে সার ও কিটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। এখন শুধু সেচ দিতে হবে। বাজার ভালো গেলে এবছর অনেক লাভ হবে।
জারবেরা চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, দুই বিঘা জমিতে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এ বছর সাত থেকে আট লাখ টাকার জারবেরা ফুল বিক্রির আশা করছেন তিনি।
১ সপ্তাহ আগে