কার্যকর পদক্ষেপ নিন
প্রযুক্তিকে কাজে লাগান, কার্যকর পদক্ষেপ নিন: ডি-৮ সদস্যদের অধ্যাপক ইউনূস
কীভাবে 'কাজের ক্ষেত্র' বিকশিত হচ্ছে তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং 'শিক্ষা' পুনঃউদ্ভাবনসহ কর্মমুখী উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি তরুণদের দক্ষতা ও শিক্ষার পুনর্গঠন এবং আরও বিকাশের মাধ্যমে সক্রিয় উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশের জন্য উৎসাহিত করেন।
কায়রো থেকে দেশে ফেরার পথে অধ্যাপক ইউনূস সম্মেলনের প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যুবসমাজের জন্য বিনিয়োগ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ডি-৮ দেশগুলোর তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা ও দক্ষতা উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব করেন তিনি।
ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মিশর, ইরান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও ওইসব দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করে আগামী দিনগুলোতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
১৯ ডিসেম্বর কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কার্যকর সংযোগ স্থাপনের আহ্বান জানান।
শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি অনুমোদন এবং ঢাকায় ডি-৮ ইয়ুথ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তসহ মাইলফলক অর্জনসহ তিন বছরেরও কম সময় ধরে সফল মেয়াদে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির কাছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা ডি-৮ অর্গানাইজেশনের সভাপতিত্ব হস্তান্তর করেন।
সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় অধ্যাপক ইউনূস ডি-৮ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।
তিনি কোভিড-১৯ মহামারি এবং বিশ্বকে আক্রান্ত করা বহুমুখী সংকটসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ডি-৮ সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ইউনূস ডি-৮ এর সহযোগিতামূলক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে মিশরকে সমর্থন দিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটিয়ে কায়রো ঘোষণাপত্র গ্রহণের মধ্য দিয়ে সম্মেলন সমাপ্ত হয়।
আরও পড়ুন:সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ তুগগার এবং মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী জামব্রি আবদুল কাদির অংশ নেন।
১৯ ডিসেম্বর শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক অধিবেশন শেষে মিশর সরকার এবং ডি-৮ সচিবালয় আয়োজিত 'গাজা ও লেবাননের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ অধিবেশনে' প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেন।
তিনি বিশ্ব নেতাদেরকে মানবিক সহায়তার বাইরেও গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননের পুনর্গঠনের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস ফিলিস্তিনিদের প্রতি বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।
তিনি যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তা এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসাবে আল-কুদস আল-শরিফকে নিয়ে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের উপলব্ধির উপর জোর দিয়ে সংকট মোকাবিলায় চূড়ান্ত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস গাজা ও লেবাননের পুনর্গঠনে আনুমানিক খরচের বরাদ্দ দেওয়া এবং সম্পদ আহরণের জন্য আন্তর্জাতিক কৌশল প্রণয়নের জন্য ডি-৮ এর নেতৃত্বে প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব করেন।
বিশেষ অধিবেশন শেষে ডি-৮ নেতারা ফিলিস্তিন ও লেবানন পরিস্থিতি নিয়ে একটি যৌথ ইশতেহার গ্রহণ করেন।
ডি-৮ নেতারা ছাড়াও বিশেষ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি, আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রী আলী আসাদোভ, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা এবং আরব রাষ্ট্র লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: তরুণ জনশক্তিকে দক্ষ করতে দৃষ্টিভঙ্গি-নৈতিকতার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান ড. ইউনূসের
৫ ঘণ্টা আগে