দুদকের তদন্ত শুরু
পরমাণু প্রকল্প দুর্নীতি: শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের পাঁচজন কর্মকর্তার একটি বিশেষ দল পুরো তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘অতিরিক্ত মূল্যের’ ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলারের মধ্যে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, পুরো পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সংক্রান্ত সন্দেহজনক ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এসব লোক মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অফশোর অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে
ঘুষ, অব্যবস্থাপনা, অর্থ পাচার এবং ক্ষমতার সম্ভাব্য অপব্যবহারের অভিযোগ প্রকল্পের সততা এবং সরকারি তহবিলের ব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য উদ্বেগকে তুলে ধরা হয়েছে অভিযোগে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের হাওরের পানি নিষ্কাশনে ধীরগতি, বিপাকে কৃষক
টিউলিপের পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা টিউলিপের চাচা তারেক আহমেদ সিদ্দিক, তার স্ত্রী ও মেয়ে প্রচ্ছয়া লিমিটেড নামের একটি ভুয়া কোম্পানির অংশীদার (ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট নম্বর সি-৭৫৬৫৯/০৯, তারিখ ২৫ মার্চ ২০০৯) রয়েছে।
ডেসটিনি গ্রুপ নামের একটি স্ল্যাশ ফান্ড চিট ফান্ড কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০ কোটি ডলার পাচার করে যুক্তরাজ্যে জুমানা ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেড [ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট নম্বর ৭৪ ১৭৪১৭ তারিখ ২৫ অক্টোবর, ২০১০] নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছে যুক্তরাজ্যে।
যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন পত্রিকায় দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর থেকে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক মস্কোর সঙ্গে গোপন যোগাযোগ বজায় রেখেছেন।
শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ৩০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, ২০১৪ সালে রিজভী আহমেদ বনাম যুক্তরাষ্ট্র মামলায় অর্থ পাচারের সন্দেহজনক আসামি হিসেবে জয়ের নাম প্রথম উঠে আসে।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জয়ের সঙ্গে জড়িত গুরুতর আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি উদঘাটিত হয়।
বিশেষ করে হংকং ও কেইম্যান আইল্যান্ডের বিভিন্ন অফশোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্কের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি স্থানীয় মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাও তাদের লন্ডন প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং জয়ের গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস স্পেশাল এজেন্ট লা প্রেভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০ কোটি ডলার জমা হয়েছে।
৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি
শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, ছোট বোন শেখ রেহানা এবং ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে নতুন করে অনুসন্ধান শুরু করেছে কমিশন।
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ ৯টি প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন কার্যালয় এবং বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর থেকে প্রাথমিক পরিচয়পত্রের নথিপসমূহ সংগ্রহ করেছে দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান টিম।
সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নামে চলমান অফশোর ব্যাংক হিসাবের প্রাসঙ্গিক নথি ও বিবরণী সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) একটি বিশেষ চাহিদা প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ
২ ঘণ্টা আগে