চার দিন
সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও তার ছেলের চার দিনের রিমান্ড
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বাড্ডায় রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ও তার ছেলে আসিবুর রহমানের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক শফিউল আলম পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
রিমান্ড শুনানি চলাকালে আদালতে কেঁদেছেন সাবেক এই নৌমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আদালতে তিনি বলেন, ‘পিপি সাহেব বলেছেন, আন্দোলনে পুলিশ গুলি করেছে। সে অর্ডার তো দিতে পারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গুলি চালানোর অর্ডার তো আমি দিতে পারি না। আমি জড়িত না।’
আরও পড়ুন: মাগুরায় শিশু ধর্ষণ: মধ্যরাতে শুনানি, চার আসামি রিমান্ডে
কেন আমার বিরুদ্ধে এ মামলা হলো প্রশ্নে রেখে শাজাহান খান বলেন, ‘শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। সে এখন জেলে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাজাহান খান বলেন, ‘পাঁচ মাস ধরে আমার ছেলের সঙ্গে দেখা নেই। আমার ছেলে কী করেছে? আমি ঢাকায় থাকলেও ছেলে থাকত মাদারীপুরে। আপনি এখনই চেক করতে পারেন। আর সিরাজুল ইসলাম কে?’
তখন জবাবে বিচারক বলেন, ‘আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন।’ তবু, শাজাহান খান দুই হাত জোর করে কথা বলার জন্য সময় চান: ‘একটু সময় দিন। তারা (আইনজীবী) ভালোভাবে বিষয়টা বলতে পারেননি ।’
‘সিরাজুল চেয়ারম্যান ছয়টা হত্যা মামলার আসামি। আমি তার পক্ষে ছিলাম না। তাই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলা দিয়েছে,’ অভিযোগ তার।
এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে টিস্যু দিয়ে দুই চোখ মুছতে থাকেন শাজাহান খান। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করলে তিনি বলেন, ‘কথা বলা নিষেধ? কথা তো বলতে হবে। গণতান্ত্রিক দেশ।’
আরও পড়ুন: বাড়ি দখল করা কথিত সেই নারী সমন্বয়ক ৪ দিনের রিমান্ডে
এরপর শাজাহান খান বলেন, ‘এ দেশের মায়েরা, বোনেরা এখন রাস্তায় নামছেন উপদেষ্টার পদত্যাগের জন্য।’ এরপর পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত হাজতখানায় নিয়ে যান।
গত বছরের ১৯ জুলাই বাড্ডা থানাধীন উত্তর বাড্ডা বিসমিল্লাহ হোটেলের পাশে রফিকুল ইসলাম গুলিতে আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের মামা পরিচয়ে লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।
শাজাহান খানের আইনজীবীরা আদালতে অভিযোগ করেছেন, ‘মামলার বাদীকে চিনেন না রফিকুল ইসলামের মা ও স্ত্রী। তাকে দেখেনও নাই। তাদের বাড়ি শাজাহান খানের সংসদীয় আসন এলাকায়।’
৩২ দিন আগে
নিখোঁজের চার দিন পর বন্ধুর বাসায় মিলল রিকশাচালকের লাশ
নিখোঁজের চারদিন পর ফরিদপুরে চুনাঘাটা মডেল টাউন এলাকায় বন্ধুর বাসা থেকে রিকশাচালক হালিম শেখের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে বাসার ভেতর থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
হালিম শেখ শহরের আলিপুর গোরস্থান এলাকার মৃত আব্দুর রব শেখের ছেলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, হালিমের বন্ধু রনি মোল্যা রিকশা চুরির লোভে বন্ধু হালিমকে হত্যা করে বাড়ির ভেতরে মাটি চাপা দিয়ে রাখেন।
রনি মোল্যা নরসিংদী জেলার রায়পুরের আব্দুল মতিনের ছেলে। দেড় মাস আগে তিনি চুনাঘাটা মহল্লার ওই ভাড়াবাড়িতে ওঠেন।
নিহতের বোন সাথী আক্তার জানান, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি হালিম। এ ব্যাপারে শুক্রবার কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়। নিখোঁজের আগে হালিমকে রনির সঙ্গে স্থানীয়রা দেখেছিল বলে জানান তিনি।
হালিমের পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার সকালে মো. মোখলেসুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া রনির বাসায় গিয়ে ভেতর থেকে গেট আটকানো দেখতে পাওয়া যায়। একপর্যায়ে গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে হালিমের রিকশাটি তারা দেখতে পান। এরপর ওই ঘরের পেছনে বালি-মাটি দিয়ে কিছু ঢেকে রাখা দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মাটি খুঁড়ে পুঁতে রাখা প্লাস্টিকের বস্তা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় হালিমের লাশটি উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: গাংনীতে ওয়ার্ড যুবদল সভাপতির গলাকাটা লাশ উদ্ধার
রিকশার মালিক নূর ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার হালিম তাকে ফোনে জানান, রাতে গ্যারেজে ফিরবেন না, তিনি এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন; পরেরদিন ফিরবেন। একপর্যায়ে তারা (মালিক) জানতে পারেন, হালিমের বন্ধু রনি তাকে ভাড়া করে নিয়ে যান, পরে রনির বাড়িতেই তার লাশ পাওয়া গেল।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রনির স্ত্রীকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লাশের ঘাড়ে কোপের চিহ্ন রয়েছে। তাকে কুপিয়ে হত্যার পরে এখানে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রনিকে গ্রেপ্তার করা হলে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
১০৪ দিন আগে