সান্তিয়াগো হিমেনেস
এসি মিলানকে প্লে-অফ থেকে বিদায় করে শেষ ষোলোয় ফেয়েনুর্ড
১৯৬৯-৭০ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই অবিস্মরণীয় ফাইনালের কথা এখনও মনে আছে কারও কারও। সেবারের দুই লেগের ফাইনালে প্রথমে ঘরের মাঠে ২-০ গোলে জিতে সান সিরোতে এসি মিলানের বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগ খেলতে গিয়েছিল ফেয়েনুর্ড। এরপর মিলানের বিপক্ষে তাদের মাঠেই ১-১ গোলে ড্র করে নিজেদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল ডাচ ক্লাবটি। ৫৫ বছর পর সেই সান সিরোতে মিলানের বিপক্ষেই আরও একবার সুখস্মৃতি ফিরিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) নতুন ফরমেটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফের দ্বিতীয় লেগে মিলানের ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করেছে ফেয়েনুর্ড। প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকায় ২-১ অগ্রগামিতায় আরও একবার শেষ ষোলোয় উঠেছে দলটি।
এদিন ম্যাচ শুরু হতে না হতেই দুই সপ্তাহ আগে এই ফেয়েনুর্ড থেকেই মিলানে যোগ দেওয়া মেক্সিকান স্ট্রাইকার সান্তিয়াগো হিমেনেসের গোলে অগ্রগামিতায় সমতা টানে মিলান। এমনকি ম্যাচের প্রথম পঞ্চাশ মিনিটে জিতে শেষ ষোলো নিশ্চিতের আভাসও দেয় তারা একাধিকবার। তবে ৫১তম মিনিটে থেও এরনান্দেসের দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার ঘটনা সবকিছু ওলট-পালট করে দেয়। একটি হলুদ কার্ডের খড়গ মাথায় নিয়েও শুধু শুধু ডাইভ দিয়ে ফাউল আদায়ের চেষ্টা করতে গিয়ে অতি চালাকির শাস্তি পেতে হয় এই উইংব্যাকের।
অন্যদিকে, একজন বেশি নিয়ে খেলার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৭৩তম মিনিটে হুলিয়ান কারান্সার গোলে মিলানকে বিদায় করে ২৫ বছর পর ফের ইউরোপের এলিট দলগুলোর সেরা ১৬-তে স্থান করে নিয়েছে ফেয়েনুর্ড।
এর আগে, ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে সবশেষ শেষ ষোলোতে উঠতে সক্ষম হয় ডাচ দলটি। সেবার শেষ ষোলোতে চেলসিকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালেও ওঠে তারা। তবে সেখানে বার্সেলোনার কাছে হেরে থামে তাদের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান।
অপরদিকে, গত এক দশকে মাত্র একবার গ্রুপ পর্ব অতিক্রম করতে পেরেছে মিলান। সেটিও ২০২২-২৩ মৌসুমে। সেবার সেমিফাইনালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টারের কাছে অগ্রগামিতায় ৩-০ গোলে হেরে ফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের।
দিনের অপর ম্যাচে ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে আলফন্সো ডেভিসের গোলে সেল্টিককে কাঁদিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
আরও পড়ুন: ডেভিসের শেষ মুহূর্তের গোলে সেল্টিকের হৃদয় ভেঙে শেষ ষোলোয় বায়ার্ন
আসরের শুরুর কয়েক ম্যাচ অপরাজিত থেকে দীর্ঘ এক যাত্রার ইঙ্গিত দিলেও প্রথমে শুরুর আট দল থেকে ছিটকে যাওয়া এবং তারপর প্লে-অফে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-২ ব্যবধানে হেরে প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে গাস্পেরিনির আতালান্তাকে। একইসঙ্গে প্রথম লেগে ২-১ গোলে জেতার পর দ্বিতীয় লেগেও দুর্দান্ত ৩-১ গোলের জয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে ক্লাব ব্রুজ।
এছাড়া ম্যাচের মোড়ের পর মোড় ঘুরিয়ে শেষ পর্যন্ত ৩-৩ গোলের ড্রয়ে শেষ হয়েছে বেনফিকা ও মোনাকোর মধ্যকার দ্বিতীয় লেগ। তবে প্রথম লেগে মোনাকোর মাঠ থেকে ১-০ গোলে জিতে থাকায় ৪-৩ অগ্রগামিতায় শেষমেষ শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে বেনফিকাই।
এর ফলে শেষ ষোলোর ১২ দল নিশ্চিত হয়েছে। বুধবার রাতে অবশিষ্ট চার ম্যাচ থেকে বাকি চার দল চূড়ান্ত হবে। এই দিনের সবচেয়ে বড় আর্ষণ থাকবে রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির মধ্যকার লড়াই।
৫১ দিন আগে
বায়ার্নকে হারিয়ে ফেয়েনুর্ডের চমক
ম্যাচজুড়ে ৮০ শতাংশ সময় বলের দখল রেখে ৩০টি শট নিয়েও গোলের দেখা পেল না বায়ার্ন মিউনিখ। অপরদিকে, আটটি শট নিয়ে তিনবার বল জালে পাঠিয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিল ডাচ ক্লাব ফেয়েনুর্ড।
বুধবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সপ্তম রাউন্ডের ম্যাচে শক্তিশালী বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ফেয়েনুর্ড।
দলটির হয়ে মেক্সিকান ফরোয়ার্ড সান্তিয়াগো হিমেনেস জোড়া গোল করেন, আর তৃতীয় গোলটি করে দলের জয় নিশ্চিত করেন জাপান ফরোয়ার্ড আয়াসে উয়েদা।
পুরো ম্যাচে স্বাগতিকদের ওপর ছড়ি ঘোরালেও শুরু থেকে কিছুটা এলোমেলো খেলতে থাকে ভিনসেন্ট কোম্পানির দল। এই সুযোগে বায়ার্নকে চমকে দিয়ে ২১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন হিমেনেস।
নিজেদের অর্ধ থেকে খেইস স্মালের উঁড়ন্ত পাস নামিয়ে নিয়ে দুর্দান্ত এক শটে জাল খুঁজে নেন ২৩ বছর বয়সী মেক্সিকান ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন: দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে সিটিকে বাদ পড়ার শঙ্কায় ফেলে জিতল পিএসজি
এরপর সমতায় ফিরতে আরও মরিয়া হয়ে ওঠে বায়ার্ন। বারবার আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণ তটস্থ করে রাখে তারা। তবে লো-ব্লক ডিফেন্সে ব্যবধান ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে ফেয়েনুর্ডের খেলোয়াড়রা।
এরই ধাবাহিকতায় প্রথমার্ধের যোগ করা নবম মিনিটে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি দিয়ে বসেন বায়ার্নের পর্তুগিজ লেফট ব্যাক রাফায়েল গেরেইরো। এরপর স্পট কিক থেকে নিখুঁত শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বিরতিতে যায় হিমেনেস অ্যান্ড কোং।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে আরও আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে মিউনিখের দলটি। একের পর এক আক্রমণ আর শটে প্রতিপক্ষকে একেবারে কোণঠাসা করে রাখে তারা, কিন্তু ফেয়েনুর্ডের জমাট রক্ষণ ভেঙে কোনোভাবেই লক্ষ্যভেদ করতে পারছিলেন না হ্যারি কেইন- জামাল মুসিয়ালারা। সেইসঙ্গে গোলপোস্টে অসাধারণ পারফর্ম করেন ডাচদের গোলরক্ষক জাস্টিন বাইলোভ।
বায়ার্নের আক্রমণের হলকা সামলে ম্যাচের ৮৯তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে দলটির সমতায় ফেরার আশাও শেষ করে দেন উয়েদা। আন্তোনি মিলাম্বোর কাছ থেকে বল পেয়ে ঠান্ডা মাথায় ঠিকানা খুঁজে নেন এই জাপানি ফরোয়ার্ড।
আরও পড়ুন: ভাগ্যের পালাবদলের রাতে ৯ গোলের থ্রিলারে শেষ হাসি বার্সেলোনার
এই জয়ে সাত ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট (৪ জয়, ১ ড্র) নিয়ে টেবিলের ১১তম স্থানে উঠে এসেছে ফেয়েনুর্ড। সেইসঙ্গে বাঁচিয়ে রেখেছে প্লে-অফ এড়িয়ে সরাসরি শেষ আট নিশ্চিতের আশা। অপরদিকে, ম্যাচটি হেরে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে নেমে গেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে আগামী বুধার ফরাসি ক্লাব লিলের মোকাবিলা করবে ফেয়েনুর্ড, আর স্লোভাকিয়ার ক্লাব স্লোভান ব্রাতিস্লাভার বিপক্ষে মাঠে নামবে ভিনসেন্ট কোম্পানির শিষ্যরা।
দিনের অপর ম্যাচে পিএসজির বিপক্ষে ২-০ এগিয়ে গিয়েও ৪-২ গোলে হেরেছে ম্যানচেস্টার সিটি। এছাড়া প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ, ইন্টার মিলান, এসি মিলান ও আর্সেনাল।
৭৮ দিন আগে