পেনশনার সঞ্চয়পত্র
জুলাই ২০২৫ থেকে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফার হার: বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পুনঃনির্ধারিত রিটার্ন রেট
দেশের প্রচলিত সঞ্চয়পত্রগুলোতে লক্ষণীয় পরিবর্তন নিয়ে নতুন ভাবে প্রকাশিত হলো জাতীয় সঞ্চয় স্কিম। ২০২৫-এর জুলাই–ডিসেম্বর সময়কালের জন্য জারিকৃত এই নির্দেশনার আওতাভূক্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্কিম পেনশনার সঞ্চয়পত্র। অন্যান্য সঞ্চয় ক্যাটাগরিগুলোর মতো এই সঞ্চয়পত্রেও বার্ষিক মুনাফার হারে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন বিনিয়োগে মেয়াদের আগে ও পরে নগদীকরণে বার্ষিক হার ভিন্ন ভিন্ন। যার স্পষ্ট রেশ থাকছে গ্রাহকদের নগদায়নকালীন অর্থপ্রাপ্তিতে। চলুন, ৫ বছর মেয়াদী পেনশনার সঞ্চয়পত্রের নতুন নির্ধারিত রিটার্ন রেটের বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়কালের জন্য পেনশনার সঞ্চয়পত্রে নির্ধারিত মুনাফার হার
নতুন রেট অনুযায়ী পূর্ববর্তী ও বর্তমানের সমূদয় বিনিয়োগের রিটার্ন হিসাব হবে। ধার্যকৃত মুনাফা দেওয়া হবে মূলত দুটি বিনিয়োগসীমার বিপরীতে, সেগুলো হলো:
i) ৭ লক্ষ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০০) টাকা কিংবা তার কম
ii) ৭ লক্ষ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০০) টাকার অধিক
আরো পড়ুন: জুলাই ২০২৫ থেকে ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার: জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পুনঃনির্ধারিত রিটার্ন রেট
পেনশনার সঞ্চয় স্কিমে মেয়াদের আগে ও পরে নগদীকরণে নিম্নোক্ত রেট অনুযায়ী প্রদেয় অর্থ নিরূপণ হবে:
টেবিল: ২০২৫ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালের জন্য পেনশনার সঞ্চয়পত্রে দুটি ভিন্ন বিনিয়োগ সীমায় প্রদেয় ভিন্ন বার্ষিক মুনাফা
সময়
বিনিয়োগ
৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত
বিনিয়োগ
৭ লাখ ৫০ হাজার ১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব
মুনাফার হার (%)
১ম বছরান্তে
৯.৮৪
৯.৭২
২য় বছরান্তে
১০.৩২
১০.১৯
৩য় বছরান্তে
১০.৮৪
১০.৭০
৪র্থ বছরান্তে
১১.৩৯
১১.২৩
৫ম বছরান্তে / মেয়াদপূর্তিতে
১১.৯৮
১১.৮০
.
সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা (৭,৫০,০০০ বা তার কম) মূল্যের পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেয়াদপূর্তিতে রয়েছে সর্বাধিক মুনাফাপ্রাপ্তির সুযোগ। আর এর পরিমাণ হলো ১১.৯৮ শতাংশ (১১.৯৮%)। মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০১ বা তার বেশি) টাকা ছাড়িয়ে গেলে এই পরিমাণটি হবে ১১.৮০ শতাংশ (১১.৮০%)।
মেয়াদপূর্তির পূর্বেই নগদায়ন করা হলে মুনাফা বন্টন হবে উপরোক্ত টেবিলে উল্লেখিত হারে। এমতাবস্থায় অনুর্ধ্ব সাড়ে ৭ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ নগদায়নে প্রথম বছরে মুনাফা দাড়াবে ৯.৮৪ শতাংশ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বছরে মুনাফা পাওয়া যাবে যথাক্রমে ১০.৩২ শতাংশ, ১০.৮৪ শতাংশ এবং ১১.৩৯ শতাংশ হারে।
অপরদিকে, ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার অধিক বিনিয়োগ নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রথম বছরে মুনাফা মিলবে ৯.৭২ শতাংশ। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বছরে রিটার্ন পাওয়া যাবে যথাক্রমে ১০.১৯ শতাংশ, ১০.৭০ শতাংশ ও ১১.২৩ শতাংশ হারে।
আরো পড়ুন: জুলাই ২০২৫ থেকে ৩-মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার: বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পুনঃনির্ধারিত রিটার্ন রেট
জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়কালের জন্য থেকে কার্যকর পেনশনার সঞ্চয়পত্রের নতুন রিটার্ন রেট কারা পাবেন?
মুনাফার এই পুনঃনির্ধারিত হার পেনশনার সঞ্চয়পত্রের সেই সকল গ্রাহকরা পাবেন, যারা স্কিমটি ক্রয় করবেন ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে কিংবা তার পরে। এর আগের যাবতীয় বিনিয়োগসমূহের মুনাফা বন্টন হবে পূর্ববর্তী নীতিমালা অনুসারে।
এই সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের ছয় মাস পর মুনাফার বার্ষিক হার পুনঃনির্ধারণ করা হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে যে সঞ্চয়পত্রগুলো ইস্যু করা হবে সেগুলোর স্ব স্ব মেয়াদ ও রিটার্নের হার বহাল থাকবে। সুতরাং বিনিয়োগকারীরা তাদের সঞ্চয়পত্র ইস্যুকালীন ধার্যকৃত হার অনুসারে নির্ধারিত পুরো মেয়াদ জুড়ে মুনাফা পাবেন।
শেষাংশ
বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে সর্বোচ্চ মুনাফার হার ১১.৯৮ শতাংশ। ৭,৫০,০০০ টাকার অধিক বিনিয়োগকারীরা লাভ পাবেন ১১.৮০ শতাংশ হারে। এই মুনাফা বন্টন নীতি শুধুমাত্র ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে ও তার পরবর্তীতে ইস্যুকৃত পেন শনার সঞ্চয়পত্রের জন্য অনুসরণ করা হবে।
আরো পড়ুন: জুলাই ২০২৫ থেকে পরিবার সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফার হার: বাংলাদেশের জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের পুনঃনির্ধারিত রিটার্ন রেট
১৫৩ দিন আগে
পেনশনার সঞ্চয়পত্র ২০২৫: নতুন নির্ধারিত বার্ষিক হারে মাসিক মুনাফা
২০২৫-এর শুরুতেই জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় পেনশনার সঞ্চয়পত্রসহ অন্যান্য সঞ্চয়পত্রগুলোতে আনা হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। এখানে মেয়াদান্তে এমনকি নগদায়নের ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি পেয়েছে মুনাফার হার। এই রিটার্নটি যে মুলধনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেই বিনিয়োগের সীমাতে লক্ষ্য করা গেছে যথেষ্ট পরিব্যাপ্তি। ২১ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর উৎসে করের বিষয়ের তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করে। এর ফলে মেয়াদপূর্তি বা নগদায়নে ভিন্ন ভিন্ন বিনিয়োগকারিদের প্রাপ্য অর্থের হিসেবের একটি স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন, ২০২৫ সালে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের পরিবর্তিত মুনাফা হারের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
২০২৫ সালে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের পুনর্নির্ধারিত মুনাফার হার
নিম্নের টেবিলে ৫-বছর মেয়াদী এই স্কিমে বিভিন্ন বিনিয়োগ সীমায় নগদায়নকালে এবং মেয়াদপূর্তীতে ধার্যকৃত মুনাফা উল্লেখ করা হলো:
টেবিল: পেনশনার সঞ্চয় প্রকল্পে বিভিন্ন বিনিয়োগের বিপরীতে পুননির্ধারিত মুনাফার হার
সময়
বিনিয়োগ সীমা সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা
বিনিয়োগ সীমা ৭ লাখ ৫০ হাজার ১ টাকা হতে তদূর্ধ্ব
সর্বোচ্চ ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে উৎসে কর (%)
মুনাফার হার (%)
৫,০০,০০১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে উৎসে কর (%)
মুনাফার হার (%)
উৎসে কর (%)
মুনাফার হার (%)
১ম বছরান্তে
কোনও উৎসে কর নেই
১০.২৩
১০
১০.২৩
১০
১০.১১
২য় বছরান্তে
১০.৭৫
১০.৭৫
১০.৬২
৩য় বছরান্তে
১১.৩১
১১.৩১
১১.১৭
৪র্থ বছরান্তে
১১.৯১
১১.৯১
১১.৭৫
৫ম বছরান্তে
১২.৫৫
১২.৫৫
১২.৩৭
আরো পড়ুন: ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ২০২৫: নতুন রেটে কত মুনাফা পাবেন
সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ (৭,৫০,০০০) টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করলে মুনাফা পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ (১২.৫৫%) হারে। ৭ লাখ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০১) টাকার বেশি মূলধন জমা করলে তার বিপরীতে এই লাভের হার কমে হবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
পেনশনার সঞ্চয় ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ ৫ লাখ (৫,০০,০০০) টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে কোনও উৎসে কর কাটা হবে না। তবে ৫ লাখ টাকার বেশি (৫,০০,০০১ বা তার চেয়ে বেশি) হলে ১০ শতাংশ উৎসে কর ধার্য হবে।
মেয়াদপূর্তির আগে মূলধন উত্তোলনের ক্ষেত্রে ফেরতকৃত সুদ-আসলের মধ্যে সুদের অংশ উপরোক্ত টেবিল অনুসারে প্রতি বছর শেষে উল্লেখিত হারে হিসেব করা হবে। এই স্কিমের মুনাফা যেহেতু প্রতি মাসে দেওয়া হয়, সেহেতু ৫ বছরের জন্য কেনা সঞ্চয়পত্রে ক্রেতার নামে সর্বোচ্চ হারে মুনাফা জমা হবে। তাই সিদ্ধান্ত বদলে আগেই নগদায়ন করলে প্রদানকৃত অতিরিক্ত অর্থ মূলধন থেকে কেটে রাখা হবে।
৫ লাখ (৫,০০,০০০) টাকা পর্যন্ত মূলধন জমাকারিদের প্রথম বছর শেষে নগদায়নে প্রদেয় মুনাফা হবে বার্ষিক ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে। এখানে কোনও উৎসে কর আরোপ হবে না। একই ভাবে ২য় বছরান্তে লাভের হার দাড়াবে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ৩য় বছর শেষে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ, এবং ৪র্থ বছর পর ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ।
আরো পড়ুন: ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: মেয়াদপূর্তি ও নগদায়নে নতুন মুনাফার হার
৫ লাখ ১ টাকা থেকে ৭ লাখ ৫০ হাজার (৫,০০,০০১ - ৭,৫০,০০০) টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে নগদায়নের প্রতি বছরান্তে মুনাফার উপর উৎসে কর আরোপ হবে ১০ শতাংশ। প্রথম বছর শেষেই বিনিয়োগকৃত টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে প্রদেয় মুনাফা ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে ধার্য হবে। দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ বছর শেষে নগদায়নে মুনাফা পাওয়া যাবে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ, এবং ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ হারে।
৭ লাখ ৫০ হাজার (৭,৫০,০০১) টাকার বেশি মূলধন জমাকারিদেরও একই ভাবে ১০ শতাংশ উৎসে কর দিয়ে যেতে হবে। প্রথম বছরান্তের নগদায়ন হিসেবে বার্ষিক ১০ দশমিক ১১ শতাংশ হারে রিটার্ন দেওয়া হবে। দ্বিতীয় বছর অতিক্রান্তের পর নগদায়নে এই হার হবে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ, তৃতীয় বছর পর ১১ দশমিক ১৭ শতাংশ, এবং চতুর্থ বছর শেষে ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
পেনশনার সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফার হার কারা পাবেন
১লা জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখ ও তার পর থেকে যারা পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনবেন শুধুমাত্র তারাই এই পুনর্নির্ধারিত হারে মুনাফা পাবেন।
আরো পড়ুন: পরিবার সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফা হার: প্রতি লাখে ধার্য করা মাসিক মুনাফা
কারা পেনশনার সঞ্চয় স্কিম কিনতে পারবেন
· অবসরপ্রাপ্ত স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি, ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারী
· সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত মাননীয় বিচারপতি
· সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য
· মৃত চাকরিজীবীর স্বামী, স্ত্রী, বা সন্তান যারা ইতিপূর্বে পেনশনের সুবিধা পেয়ে এসেছেন
পেনশনার সঞ্চয়পত্রের অন্যান্য সুবিধা
· মাসিক মুনাফা প্রদানের নিয়ম
· উত্তরাধিকার নিয়োগের সুবিধা
· বিনিয়োগকারির মৃত্যুর পর নিয়োগকৃত উত্তরাধিকার মেয়াদ উত্তীর্ণের পর সুদাসল তুলতে পারবেন। এছাড়া উত্তরাধিকার চাইলে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেও নগদায়নপূর্বক প্রাপ্য মুনাফা-আসল তুলে ফেলতে পারবেন।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফা হার, জানুন ২০২৫ সালে কোন স্কিমে আপনি কত পাবেন!
পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা
ভবিষ্য তহবিলের চূড়ান্ত অর্থ ও প্রাপ্ত আনুতোষিক বা গ্রাচুইটি সব মিলিয়ে একক নামে অনুর্ধ্ব ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা যাবে।
পরিশিষ্ট
২০২৫ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্রেতারা এই পুনর্নির্ধারিত মুনাফা হারের সুবিধা পাবেন। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফা দেওয়া হবে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হারে। আর সাড়ে ৭ লক্ষাধিক টাকা বিনিয়োগকারিদের প্রদেয় মুনাফার হিসেব হবে ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে। এর মধ্যে ৫ লাখের জন্য কোনও কর দিতে হবে না, তবে এর বেশি মূলধনের জন্য আরোপকৃত উৎসে করের পরিমাণ ১০ শতাংশ।
উপরন্তু, অন্যান্য সঞ্চয় স্কিমগুলোর মতো এই প্রকল্পেও নগদায়নকালে প্রাপ্ত রিটার্ন বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি হবে।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
২৭৭ দিন আগে
সঞ্চয়পত্রে নতুন মুনাফা হার, জানুন ২০২৫ সালে কোন স্কিমে আপনি কত পাবেন!
২০২৫ সালে নতুনভাবে নির্ধারিত হলো সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার। এতদিন জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে মেয়াদান্তে সর্বনিম্ন ১১.০৪ থেকে সর্বোচ্চ ১১.৭৬ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যেতো। নতুন নিয়মে মুনাফা ১২ শতাংশের অধিক রাখা হয়েছে, যেখানে সর্বনিম্ন হার ১২.২৫ আর সর্বোচ্চ ১২.৫৫। জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর সব সঞ্চয়পত্রে পাওয়া যাবে এই বাড়তি মুনাফা। চলুন, সরকারি সঞ্চয় স্ক্রিমগুলোর সদ্য প্রণয়নকৃত এই মুনাফা ব্যবস্থা সম্বন্ধে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
সঞ্চয়পত্রের স্কিমগুলোতে নতুন মুনাফার হার
জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের মুনাফা প্রদানের জন্য দুটি ভিন্ন বিনিয়োগ পরিসীমা ঠিক করা হয়েছে।
বিনিয়োগ পরিসীমা-১: অনুর্ধ্ব সাড়ে ৭ লাখ টাকাবিনিয়োগ
বিনিয়োগ পরিসীমা-২: সাড়ে ৭ লাখ টাকার অধিক
প্রথমটিতে প্রদেয় মুনাফা অপেক্ষা দ্বিতীয় ক্যাটাগরির মুনাফার শতাংশ কম হবে। তবে এই শতাংশ আগের তুলনায় বেশি। শুধু তাই নয়, মেয়াদের প্রথম বছর থেকে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত প্রতি বছরের ধার্যকৃত মুনাফার শতাংশগুলোও আগের থেকে বেশি। এই হার ৫ ও ২ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের গড় সুদের হার অনুসারে প্রতি ৬ মাস অন্তর পুনঃনির্ধারিত হবে।
আরো পড়ুন: ই-রিটার্ন: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
সরকারি সঞ্চয় পরিষেবার আওতাভূক্ত প্রতিটি স্কিম নির্ধারিত রিটার্নসহ নিম্নোক্ত সারণীতে উল্লেখ করা হলো:
সারণী: ২০২৫ সালে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাবদ লাভের পরিমাণ
বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয় স্কিমে বছরান্তে প্রতি লাখে মুনাফার হার (শতাংশ)
বিনিয়োগের পরিমাণ (টাকা)
সময়
পেনশনার সঞ্চয়পত্র
(৫ বছর মেয়াদি)
পরিবার সঞ্চয়পত্র
(৫ বছর মেয়াদি)
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
(৫ বছর মেয়াদি)
৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
(৩ বছর মেয়াদি)
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদি হিসাব
(৩ বছর মেয়াদি)
সাড়ে ৭ লক্ষ পর্যন্ত
১ম বছর
১০.২৩
১০.২০
১০.১৩
১১.৪
১১.৪
২য় বছর
১০.৭৫
১০.৭২
১০.৬৪
১১.৬৫
১১.৬৫
৩য় বছর
১১.৩১
১১.২৮
১১.১৯
১২.৩০
১২.৩০
৪র্থ বছর
১১.৯১
১১.৮৭
১১.৭৮
-
-
৫ম বছর
১২.৫৫
১২.৫০
১২.৪০
-
-
সাড়ে ৭ লক্ষাধিক
১ম বছর
১০.১১
১০.১১
১০.১১
১১
১১
২য় বছর
১০.৬২
১০.৬২
১০.৬২
১১.৬১
১১.৬১
৩য় বছর
১১.১৭
১১.১৭
১১.১৭
১২.২৫
১২.২৫
৪র্থ বছর
১১.৭৫
১১.৭৫
১১.৭৫
-
-
৫ম বছর
১২.৩৭
১২.৩৭
১২.৩৭
-
-
পেনশনার সঞ্চয়পত্র
এই স্কিমে সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই নগদায়নের ক্ষেত্রে বছরান্তে মুনাফা শুরু হবে ১০.২৩ শতাংশ থেকে। ২য় বছরে ১০.৭৫, ৩য় বছরে ১১.৩১, এবং ৪র্থ বছরে ১১.৯১ শতাংশ। ৫ বছর মেয়াদপূর্তির পর মুনাফা দাড়াবে ১২.৫৫ শতাংশ, যা এখন থেকে প্রযোজ্য রিটার্নগুলোর মধ্যে সর্বাধিক।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে নগদায়ন বা পুনরায় চালু করার উপায়
সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগে ১ম বছরে মুনাফা থাকছে ১০.১১। এটি বছরান্তের হিসেবে নতুন ব্যবস্থার সবচেয়ে কম পরিমাণ রিটার্ন। উপরন্তু, ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৫ শতাংশ। ৫ বছর শেষে মেয়াদ উত্তীর্ণকালে এই শতাংশটি পৌঁছবে ১২.৩৭-এ।
পরিবার সঞ্চয়পত্র
সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা এই সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিতে পাবেন সাড়ে ১২ শতাংশ। মেয়াদ উত্তীর্ণের আগেই স্কিম নগদায়ন করলে বছর শেষে রিটার্ন শুরু ১০.২০ শতাংশ থেকে। ২য় বছরে নগদায়নের ক্ষেত্রে লাভের হার দেওয়া হবে ১০.৭২, ৩য় বছরে ১১.২৮ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৮৭ শতাংশ।
বিনিয়োগ সাড়ে ৭ লাখ টাকার অধিক হলে ১ম বছরের মুনাফা ১০.১১ শতাংশ, যা ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে হবে ১১.৭৫ শতাংশ। সর্বপরি, ৫ বছর কিস্তি পূরণ করলে লাভের হার ১২.৩৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র
সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মেয়াদপূর্তিতে লাভের পরিমাণ ১২.৪০ শতাংশ। মেয়াদ পূর্ণ না করলে ১ম বছরে ১০.১৩, ২য় বছরে ১০.৬৪, ৩য় বছরে ১১.১৯ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৮ শতাংশ।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
যারা সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তাদের ১ম বছরে নগদায়নে মুনাফা পড়বে ১০.১১ শতাংশ। ২য় বছরে ১০.৬২, ৩য় বছরে ১১.১৭ এবং ৪র্থ বছরে ১১.৭৫ শতাংশ। ৫ বছরের আগে স্কিম না ভাঙলে লাভের হার দাড়াবে ১২.৩৭ শতাংশে।
৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
এই সঞ্চয় স্কিমে যারা সর্বোচ্চ সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করবেন, তাদের মেয়াদ শেষে রিটার্ন আসবে ১২.৩০ শতাংশ। অন্যথায় মেয়াদ পূর্ণ করা না হলে ৩ বছর মেয়াদি এই সঞ্চয়পত্রে ১ম বছরে মুনাফা পাওয়া যাবে ১১.০৪ এবং ২য় বছরে ১১.৬৫ শতাংশ।
অপরদিকে, সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের পর ১ম বছরের পরেই বিনিয়োগ করা টাকা তোলার ক্ষেত্রে মুনাফা মিলবে ১১ শতাংশ। ২য় বছরে পাওয়া যাবে ১১.৬১ আর মেয়াদপূর্তি করতে পারলে লাভের অংশ হবে ১২.২৫ শতাংশ।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক-মেয়াদি হিসাব
উপরোক্ত প্রধান চার স্কিমের বাইরে ডাকঘর সঞ্চয় হিসাবে উভয় বিনিয়োগ ক্যাটাগরি থেকে প্রাপ্ত রিটার্নের হার হবে ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের অনুরূপ।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফার হার কাদের জন্য প্রযোজ্য
যেহেতু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রেই উল্লেখযোগ্য হারে মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সকল শ্রেণির গ্রাহকরাই এর আওতাভূক্ত। সুতরাং জানুয়ারি ২০২৫ থেকে যারা সঞ্চয়পত্র কিনবে তারা নতুন এই বর্ধিত মুনাফার সুবিধা পাবেন।
পরিশিষ্ট
২০২৫-এ নতুন নিয়মে প্রণীত সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের প্রতিটি ক্যাটাগরিতে পরিবর্তন এসেছে। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে কমপক্ষে ১২.৩০ শতাংশ মুনাফা রয়েছে ৩ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্র দুটোতে। সাড়ে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগে সর্বোচ্চ ১২.৫৫ শতাংশ হারে রিটার্নের সুযোগ থাকছে পেনশনার ব্যবস্থায়। সাড়ে ৭ লক্ষের অধিক টাকা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৫ বছর মেয়াদি সবগুলো স্কিমেই সর্বাধিক রিটার্ন ১২.৩৭ শতাংশ। আর ৩ বছর মেয়াদি ব্যবস্থাগুলোতে থাকছে ১২.২৫ শতাংশ, যা এই পরিবর্তিত সঞ্চয় প্রক্রিয়ার সর্বনিম্ন মাত্রার মুনাফা।
আরো পড়ুন: নতুন বছরে সঞ্চয় বাড়ানোর কয়েকটি উপায়
৩১২ দিন আগে