সুন্দরবন
ফরিদপুর হয়েই চলবে বেনাপোল ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস
অবশেষে এলাকাবাসীর দাবির মুখে সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেসের রুট আপাতত পরিবর্তন করা হচ্ছে না। ট্রেন দুটি বেনাপোল ও খুলনা থেকে ছেড়ে রাজবাড়ী, ফরিদপুর ভাঙ্গা স্টেশন হয়ে ঢাকায় চলাচল করবে।
মঙ্গলবার একই দাবিতে রাজবাড়ী ও ফরিদপুর রেলস্টেশনে জেলার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে মদ্যপানে আরও এক কিশোরীর মৃত্যু
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি সমন্বয়ক আরবার ইতু বলেন, বিগত সরকারের সময় এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু করার পর সেটি লাভজনক অবস্থায় যায়। প্রতিদিনই আপডাউন ট্রেনের সিট ফাঁকা থাকে না। তাহলে কেন এই রুটের ট্রেন পরিবর্তন করতে হবে। ফরিদপুর রাজবাড়ি কুষ্টিয়াসহ আশেপাশের জেলার মানুষের কথা চিন্তা করে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই কোনোভাবেই এ রুটের ট্রেন দুইটিকে বাতিল করা চলবে না। প্রয়োজনে অন্য রুটে নতুন ট্রেন সংযোজন সংযোজন করা হোক।
ফরিদপুর রেলওয়ের সহকারী স্টেশনমাস্টার সুজাত আলী সরদার বলেন, ‘সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে এখনও আসেনি। রেল মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আমাদেরকে এখন পর্যন্ত লিখিত বা মৌখিকভাবে কোনো কিছু জানানো হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, আন অফিসিয়ালি আমরা জানতে পেরেছি যে এই রুটের বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত পূর্বের ন্যায় রুটিন অনুযায়ী বেনাপোল এক্সপ্রেস এবং সুন্দরবন এক্সপ্রেস চলাচল করবে।
এর আগে সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের রুট পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ‘রাজবাড়ী এক্সপ্রেস-১০৫’ ট্রেন রাজবাড়ী রেলস্টেশনে আটকে বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে রবিবার ‘মধুমতী এক্সপ্রেস’ ও ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ট্রেন আটকে রেখে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে ফরিদপুর-রাজবাড়ীর ওপর দিয়ে বেনাপোল ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামের দুইটি ট্রেন চলাচল শুরু করে। এতে অল্প সময়ে ঢাকায় যাওয়া-আসার সুযোগ হয় ফরিদপুরসহ আশপাশের কয়েক জেলার মানুষের।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে মদ্যপানে ২ কলেজছাত্রীর মৃত্যু
২ সপ্তাহ আগে
সুন্দরবনের বনদস্যুদের হাতে আটক ১০ জেলে উদ্ধার
মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত ১০ জেলেকে উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
রবিবার (৩ নভেম্বর) বিকেলের দিকে বনবিভাগের পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন চুনকুড়ি নদীর তক্কাখালী এলাকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
এ সময় বনদস্যুদের সঙ্গে বনবিভাগের সদস্যদের গুলি বিনিময় হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে বনদস্যুদের ফেলা যওয়া তিনটি নৌকা, একটি সোলার প্যানেল ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর জেলেদের রাতে বুড়িগোয়ালিনি স্টেশনে আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ১১টি
উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন-সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর চুনকুড়ি এলাকার আব্দুল আলিম, একই এলাকার নুর ইসলাম, রবিউল ইসলাম, ছোট ভেটখালী এলাকার হাফিজুর রহমান, একই এলাকার রাজু ফকির, শফিকুল ইসলাম, নুরনগর ইউনিয়নের দুরমুজখালী এলাকার রফিকুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর এলাকার মফিজুর, একই এলাকার মুছাক সানা ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বড় ভেটখালী এলাকার নজরুল ইসলাম।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানান, তাদের বিভিন্ন সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিপণের দাবিতে বনদস্যু মঞ্জুর বাহিনী সদস্যর অপহরণ করে। এই বাহিনীর প্রধান হিসেবে মঞ্জুর নিজেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
কদমতলা ফরেস্ট স্টেশনের এসও সোলায়মান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুন্দরবনের চুনকুড়ি নদীর তক্কাখালী এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় বনদস্যু বাহিনীর সদস্যরা বনবিভাগের সদস্যদের লক্ষ করে গুলি ছোড়ে।
জবাবে বনবিভাগের সদস্যরাও পাল্টা ৫ রাইন্ড গুলি ছোড়ে। একপর্যায় প্রতিরোধের মুখে বনদস্যুরা জিম্মি করে রাখা জেলেদের রেখে বনের মধ্যে পালিয়ে যায়।
এ সময় বনদস্যুদের একটি আস্তানা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে অপহৃত ১০ জেলে, তিনটি নৌকা, একটি সোলার প্যানেল, ১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে বন্যপ্রাণীর লোকালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে নাইলনের বেড়া
২ সপ্তাহ আগে
সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ১১টি
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালের তুলনায় চলতি বছরের জরিপে ১১টি বাঘ বেশি পাওয়া গেছে।
একই সঙ্গে বাঘের ঘনত্ব ও শাবকের সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে 'সুন্দরবন বাঘ জরিপ-২০২৪' এর ফলাফল ঘোষণা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।
জরিপে দেখা যায়, ২০১৮ সালের জরিপে ১১৪টি বাঘ পাওয়া গিয়েছিল, নতুন জরিপে ১১টি বেড়ে ১২৫টি বাঘ পাওয়া গেছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সার্বিক বিচার বিশ্লেষণে ২০২৩-২০২৪ সালে সুন্দরবনে পরিচালিত বাঘ জরিপে বাঘের সংখ্যা ১২৫টি পাওয়া যায় এবং প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটার বনে বাঘের ঘনত্ব পাওয়া যায় ২ দশমিক ৬৪।
তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে এবং ২০১৫ সালের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা নির্ণয়ের জন্য সর্বপ্রথম ২০১৫ সালে আধুনিক পদ্ধতি ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ জরিপ করা হয়। সেই জরিপে বাঘের সংখ্যা পাওয়া যায় ১০৬টি এবং প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ১৭। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের বাঘ জরিপে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায় এবং প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে বাঘের ঘনত্ব ছিল ২ দশমিক ৫৫। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে বাঘ বেড়েছে ৮টি এবং বাঘ বাড়ার শতকরা হার ছিল প্রায় ৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাঘ সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৪ পালন
তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে তৃতীয় পর্যায়ে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা, খুলনা, চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জে চালানো বাঘ জরিপে বাঘের ছবি পাওয়া যায় ৭ হাজার ২৯৭টি। এত বিপুলসংখ্যক বাঘের ছবি এর আগে পাওয়া যায়নি।
২০২৩-২৪ সালের বাঘ জরিপে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, তবে বাঘ শাবকের সংখ্যা জরিপের ফলাফলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারণ ছোট থেকে পূর্ণবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাঘ শাবকের মৃত্যুর হার অনেক বেশি হয়ে থাকে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৩-২৪ সালের বাঘ জরিপে ২১টি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গেছে, যেখানে ২০১৫ ও ২০১৮ সালের বাঘ জরিপে মাত্র ৫টি করে বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া গিয়েছিল।
বাঘ সংরক্ষণে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম নিয়েছে বলে জানান রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, বাঘসহ সুন্দরবনের অন্যান্য বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও প্রজননের উদ্দেশ্যে বনের ৫৩ দশমিক ৫২ শতাংশ এলাকাকে রক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখান থেকে সব ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ নাইলনের ফেন্সিং তৈরি করা হচ্ছে।
এছাড়াও ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় বাঘ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ের জন্য বনের ভিতরে ১২টি মাটির উঁচু কিল্লা বা ঢিঁবি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ বলেন, বাঘের প্রজননের জন্য সুন্দরবনের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আগামীতে বাঘের সংখ্যা আরও বাড়বে।
এই জরিপে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মোহসিন হোসেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে সুন্দরবনের শিশু-কিশোরদের নিয়ে ওয়াইল্ডটিমের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান
১ মাস আগে
সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা: জরিপের ফলাফল ঘোষণা ৮ অক্টোবর
১ হাজার ২০০’র বেশি ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে এ গণনা শেষ হয়েছে। আগের তুলনায় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিবেশ রক্ষাবিষয়ক সংগঠন বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, খুলনা ফরেস্ট অফিস ২০১৫ ও ২০১৮ সালের পর তৃতীয়বারের মতো সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু করেছিল ২০২২ সালে। ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন বছরে বাঘ গণনা ও সংরক্ষণবিষয়ক দুইটি মেগা প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। আমরা জেনেছি বাঘের সংখ্যা সুন্দরবনে বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন বেস্টের প্রধান নির্বাহী পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আমরা এখন অপেক্ষায় আছি কবে ফলাফলটা পাব। আশা করি এবার বাঘ বাড়বে। বাঘ সুন্দরবনসহ প্রকৃতিকে রক্ষা করছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের খাল থেকে মৃত বাঘ উদ্ধার
তিনি আরও বলেন, সচেতনতার কারণেই বাড়ছে বাঘের সংখ্যা। তবে প্রতি তিন বছর অন্তর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বাঘ গণনা না করে এই টাকা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে কাজ করলে আরও উপকৃত হবে। প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী আইনজীবী মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, প্রতি তিন বছর অন্তর বাঘ গণনার জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। এখানে বড় ধরনের অর্থ অপচয় হচ্ছে। বাঘ গণনার নামে লুটপাট হচ্ছে দেশের কোটি টাকা। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন বাঁচাতে ১০ বছর পর পর একবার গণনা করলে সুন্দরবনের উপর চাপ কমবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এর আগে বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘ জরিপ হলেও, এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরার ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এছাড়া ঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বাঘকে রক্ষার জন্য বাঘের কেল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে সুন্দরবনে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে ছিল ১১৪টি।
আরও পড়ুন: বাঘ সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব বাঘ দিবস ২০২৪ পালন
সুন্দরবন থেকে বাঘের মরদেহ উদ্ধার
১ মাস আগে
সুন্দরবনের কটকা সমুদ্র সৈকত: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক ভ্রমণ খরচ
বঙ্গোপসাগরের ফেনিল প্রান্তরে ‘ব’ আকৃতির দ্বীপের প্রাণকেন্দ্রে এক টুকরো বাংলাদেশের নাম সুন্দরবন। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলটি সারা বিশ্বের কাছে এর প্রাকৃতিক নৈসর্গ ও অনন্য জীববৈচিত্র্যের জন্য ব্যাপকভাবে সমাদৃত। যতই গভীরে যাওয়া যায়, বনটি তার রহস্য ঘেরা নান্দনিকতা ততই যেন মেলে ধরে। তেমনি এক অত্যাশ্চর্য এলাকা কটকা, যার আদিম প্রকৃতি ও রোমাঞ্চের অভূতপূর্ব সন্নিবেশ বিমোহিত করে পর্যটকদের। চলুন, সুন্দরবনের কটকা সমুদ্র সৈকত এলাকাটিতে ভ্রমণ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
সুন্দরবনের কটকা সৈকতের ভৌগলিক অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণের জেলা খুলনার কয়রা উপজেলার কয়রা ইউনিয়নের একটি উপকূলবর্তী এলাকা কটকা। সুন্দরবনের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণগুলোর একটি। মোংলা বন্দর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগর ঘেষা কটকা অভয়ারণ্য সুন্দরবন ইকো-ট্যুরিজমের প্রাণকেন্দ্র।
কটকার ইতিহাস
বিগত দশকে সুন্দরবনের ভূতাত্ত্বিক কাঠামো নিয়ে একটি গবেষণা করে জার্মানির ব্রেম্যান বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণায় এই কটকা অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া যায় বহু যুগ আগের লবণ তৈরির কয়েকটি চুল্লি ও পাত্র। এগুলোর মধ্যে একটির বয়স এক হাজার বছর, তিনটির ২৫০ থেকে ৩০০ বছর, এবং দুটির ৬০০ বছর।
আরও পড়ুন: ট্রেকিং, হাইকিং, ক্যাম্পিং ও ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে নিরাপদে থাকার উপায়
কটকায় আরও পাওয়া যায় টাইগার হিল নামের একটা ঢিবি। যেখানে ছিল পানি পরিশোধনের ছাঁকনি এবং বর্জিত পানি নিষ্কাশনের নালা। গবেষকদের মতে, এটি মূলত লবণ তৈরির উন্নত প্রযুক্তির নিদর্শন। ২৫০ থেকে এক হাজার বছর আগে এখান থেকে উৎপাদিত লবণ রপ্তানি করা হতো ইউরোপ ও পূর্ব এশিয়ায়।
কটকার সমুদ্র সৈকত কটকাবাসীদের কাছে জামতলা সমুদ্র সৈকত নামেই অধিক পরিচিত।
ঢাকা থেকে সুন্দরবনের কটকা সমুদ্র সৈকত যাওয়ার উপায়
সুন্দরবনের গহীনে অবস্থিত হওয়ায় কটকা পর্যন্ত যাওয়ার জন্য নৌপথ ব্যবহার করতে হয়। ঢাকা থেকে প্রথমে চলে যেতে হবে খুলনা বা বাগেরহাট জেলায়। খুলনা থেকে রুপসা অথবা বাগেরহাটের মোংলা, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা থেকে সুন্দরবনগামী নৌযানগুলো কটকা নিয়ে যায়।
ঢাকার সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে খুলনা বা সরাসরি বাগেরহাটগামী বাস পাওয়া যায়। এগুলো সাড়ে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বাসের কোম্পানি ও মানভেদে ভাড়া নিতে পারে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা। এসি কোচের টিকেটের দাম ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া সেমি চেয়ার কোচ ননএসি বাসগুলো ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে সরাসরি মোংলায় পৌঁছে দেয়। পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা থেকে বাসে করে খুলনা বা মোংলায় যেতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে সুউচ্চ ঝর্ণা-পাহাড়ে হাইকিং ও ট্রেকিং: ঝুঁকির কারণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা
যারা ট্রেনে যেতে চান, তাদেরকে কমলাপুর থেকে খুলনাগামী ট্রেনে উঠতে হবে। সিটের ধরণভেদে ভাড়া পড়তে পারে ৫০৫ থেকে ২ হাজার ১৬৮ টাকা।
দ্রুত যাতায়াতের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট হচ্ছে আকাশপথ। এর জন্য প্রথমে বিমানে ঢাকা থেকে যশোর যেতে হবে। এখানে মানভেদে বিমান ভাড়া বাবদ খরচ হতে পারে ৪ হাজার ২১৮ থেকে ৪ হাজার ৯০৮ টাকা। অতঃপর এয়ারলাইন্সের বাসে যশোর থেকে খুলনা যাওয়া যাবে। তবে বিকল্প হিসেবে গাড়ি রিজার্ভ করে সরাসরি মোংলা পর্যন্ত যাওয়া যায়। আর ইন্টারসিটি বাসে গেলে যশোর থেকে প্রথমে খুলনা, তারপর বাস বদল করে আরেক বাসে খুলনা থেকে মোংলা যেতে হবে।
মোংলা বন্দর থেকে নেওয়া নৌযান কটকা খালের পশ্চিম পাড়ের জেটিতে নামিয়ে দেবে। জেটি থেকে উপরে উঠলেই দেখা যাবে বন কার্যালয়। সেখান থেকে খানিকটা পশ্চিম দিকে হেঁটে গেলেই পড়বে ইট বাঁধানো রাস্তা, যেটি সোজা গিয়ে শেষ হয়েছে সমুদ্রে।
আরও পড়ুন: মহেশখালী ভ্রমণ গাইড: বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপে যাওয়ার উপায়, আনুষঙ্গিক খরচ
সুন্দরবনের কটকা ভ্রমণে কি কি দেখবেন
পর্যটকদের জন্য কটকার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে কটকা অভয়ারণ্য। কেননা এখান থেকে নিরাপদেই দর্শন পাওয়া যায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের। এমনকি সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় পাখি হিসেবে পরিচিত মদনটাক দেখার জন্য উপযুক্ত স্থান হচ্ছে এই কটকা। এ ছাড়াও চোখে পড়বে চিত্রা হরিণের দল, বানর, বনবিড়াল, উদবিড়াল, বন মোরগ, এবং বন্য শুকর। শীতকালে অতিথি পাখির পাশাপাশি ভীড় করে নানান প্রজাতির পাখি। সেই সঙ্গে দেখা যাবে লোনা পানিতে কুমিরের রোমাঞ্চকর দৃশ্য।
এখানে বন বিভাগের অধীনে পরিচালিত একটি রেস্ট হাউস আছে। খুব কাছেই একটি কাঠের জেটি থাকায় লঞ্চ থেকে নেমে কিছু দূর হাঁটলেই রেষ্ট হাউসে প্রবেশ করা যায়। রেস্ট হাউসের আশেপাশে এঁকেবেকে ছড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি ছোট বড় খাল। এগুলোতে নৌকা নিয়ে দীর্ঘক্ষণ ভেসে বেড়ানো যায়। এ সময় মাঝে মধ্যে শোনা যায় বাঘের গর্জন।
বন বিভাগ কার্যালয়ের পেছনে সোজা পশ্চিমমুখী কাঠের তৈরি একটি ট্রেইল রয়েছে। এর উত্তর পাশের খালে ভাটার সময় দেখা যায় সুন্দরী গাছের ঘন শ্বাসমূল। ট্রেইলটির উত্তরে কেওড়া বনের ভেতরে ঢোকার সময় সন্তর্পণে হাঁটতে হবে। কেননা খুব কাছেই দেখা পাওয়া যাবে অনিন্দ্য সুন্দর চিত্রা হরিণের।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ট্রেইলের পূর্ব দিকটায় রয়েছে ঘন বন আর মিঠা পানির পুকুর। এই পুকুরই এখানকার স্থানীয়দের পানির একমাত্র উৎস। ঘন বনের দক্ষিণে হেঁটে গেলে পরপর তিনটি টাইগার টিলা পড়বে। এই টিলাগুলো দেখে নিমেষেই শরীরে শিহরণ বয়ে যেতে পারে, কেননা এগুলোতে প্রায়ই বাঘের পায়ের ছাপ থাকে।
কটকার আরও একটি জনপ্রিয় স্থান হচ্ছে এর ৪০ ফুট উঁচু চারতলা বিশিষ্ট ওয়াচ টাওয়ারটি। স্থানীয়দের কাছে এটি জামতলা ওয়াচ টাওয়ার নামে পরিচিত। এখান থেকে জীববৈচিত্র্যসহ সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।
এই টাওয়ারের পরে উত্তরে পথটি সোজা গিয়ে মিশেছে জামতলা সমুদ্র সৈকতে। সৈকতটি বেশ পরিচ্ছন্ন এবং নিরিবিলি। বেলাভূমি জুড়ে যতদূর চোখ যায় শুধুই কাঁকড়াদের আঁকিবুকি। পূর্ব দিকে সৈকতের শেষ প্রান্তরেখা যুক্ত হয়েছে কচিখালি এলাকায়।
আরও পড়ুন: ঈশা খাঁ'র জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ভ্রমণ গাইড, আনুষঙ্গিক খরচ
২ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর স্বাভাবিক হচ্ছে সুন্দরবন
গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি নতুন করে অঙ্কুরিত হতে শুরু করায় বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন তার স্বাভাবিক রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে।
বর্ষার প্রভাবে বন ও এর আশপাশের সুন্দরী, গরান, গোলপাতাসহ নানা গাছে ভরে উঠেছে এ বন।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারণে লবণাক্ত হয়ে যাওয়া মিঠা পানির পুকুরগুলো সম্প্রতি মৌসুমি বৃষ্টির কারণে আবারও মিঠা পানিতে ভরে গেছে। ফলে সুন্দরবন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
পর্যটক, জেলে, কাঠুরে ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ বিধিনিষেধের কারণে, সুন্দরবনে অনেকটা নীরবতা বিরাজ করছে। এতে মাছ ও বন্যপ্রাণী উৎপাদন বৃদ্ধি, তাদের অবাধ চলাচল, প্রজনন কার্যক্রম এবং নতুন উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহজ হচ্ছে।
ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি বর্ণনা করে সুন্দরবনের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো ইউএনবিকে বলেন, ২৬ মে রিমালের ক্ষয়ক্ষতি আগের ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডরকে ছাড়িয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় শতাধিক মিঠা পানির পুকুর লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায়, যার ফলে শতাধিক হরিণ ও বিভিন্ন প্রাণী মারা যায়।
এছাড়া অসংখ্য সুন্দরী, গরান ও গোলপাতাসহ অন্যান্য উদ্ভিদ প্রজাতির গাছ ধ্বংস হয়ে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য কেড়ে নিয়েছে।
পূর্ববর্তী অনুষ্ঠানগুলোর মতো, বন বিভাগ এরই মধ্যে নতুন করে গাছপালা জন্মানো এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজননের জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণ এবং জেলে, কাঠুরে ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ফলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার এক মাসের মধ্যেই সুন্দরবন তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে পেতে শুরু করেছে।
এই ম্যানগ্রোভ বনে ৩৫০ প্রজাতির পাখি, ২৯০ প্রজাতির প্রাণী, ৩০-৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৮-১০ প্রজাতির উভচর এবং ২০০ প্রজাতির মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২টি নদী ও খালের তীরে পুনরুদ্ধার করা হবে ম্যানগ্রোভ বন
`সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে
৪ মাস আগে
`সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে
'সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের আবেদন পর্যালোচনা করে প্রাপ্ত তথ্যাদি জার্নাল আকারে প্রস্তুত করে বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে। জার্নাল প্রকাশের তারিখ থেকে দুই মাস সময়ের মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষের আপত্তি বা বিরোধিতা না পাওয়া গেলে পণ্যটিকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু, দুশ্চিন্তায় সংশ্লিষ্ট পেশার মানুষ
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক 'সুন্দরবনের মধু' পণ্যটিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট আবেদন দাখিল করেন। ডিপিডিটি ওই আবেদন পরীক্ষা করে আবেদনে উল্লিখিত বিষয়ে আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য আবেদনকারীকে অনুরোধ জানায়। ডিপিডিটি'র অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দরবনের মধুর পুষ্টিগুণ বিষয়ে বিএসটিআই একটি পরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ডিপিডিটিকে প্রদান করে। এছাড়াও চাওয়া অন্যান্য তথ্যাদি না পাওয়ায় ওই বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। সেসব তথ্যাদি আবেদনকারী ২৭ জুন আবার দাখিল করে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১২৭টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩২
৪ মাস আগে
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মোশাররেফ হোসেন গাজী নামে এক মৌয়ালের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) ঢাংমারী নদীতে ঘটনাটি ঘটে।
মৃত মৌয়াল মোশাররেফ হোসেন গাজী খুলনার দাকোপ উপজেলার ঢাংমারী গ্রামের আমির আলী গাজীর ছেলে।
আরও পড়ুন: যশোরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যুর অভিযোগ
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে চারজন মৌয়াল শনিবার দুপুরে একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে ঢাংমারী নদী দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় হঠাৎ করে একটি কুমির নৌকা থেকে মোশারফেকে টেনে নদীতে নিয়ে যায়। পরে তার সঙ্গীরা করমজল এলাকার খাল থেকে মোশারেফের লাশ উদ্ধার করে।
প্রসঙ্গত সুন্দরবনে নদী-খালে মাছ এবং বনে বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পযন্ত তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ।
এই তিন মাস জেলে-বাওয়ালি, মৌয়াল ও পর্যটকসহ সবার সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধি রয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু
৫ মাস আগে
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১২৭টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩২
রিমালের আঘাতে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩২টিতে।
মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত বন থেকে ১২৭টি হরিণ ও ৪টি বন্য শুকরের মৃতদেহসহ একটি অজগর উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলার চর, নারিকেল বাড়িয়া ও নীলকমল থেকে মৃত প্রাণীগুলো উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১১১টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১১৬
পাশাপাশি ১৮টি হরিণ অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বনে ছেড়ে দিয়েছে বন বিভাগ।
এদিকে বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে।
তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মঙ্গলবার থেকে সুন্দরবনে তল্লাশি করে প্রতিদিন তারা মৃত অবস্থায় হরিণ উদ্ধার করছে। শুক্রবারও বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা ৩১টি মৃত হরিণ উদ্ধার করে। এর মধ্যে কয়েকটি হরিণের দেহ অনেকাংশে পচে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এনিয়ে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত তারা ১২৭টি মৃত হরিণ, ৪টি বন্য শূকর ও একটি অজগর উদ্ধার করে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে নদীতে ভাসতে থাকা জীবিত ১৮টি হরিণ উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে। এখনও বনের মধ্যে বন বিভাগের সদস্যরা তল্লাশি করছে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে লবণ পানি বনের মধ্যে আটকে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বনের কোথাও আর কোনো বন্যপ্রাণী মরে পড়ে আছে কি না তা ঘুরে দেখছে বন বিভাগের সদস্যরা। তালিকা পাওয়ার পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে আরও ৪৫টি মৃত হরিণ উদ্ধার
সুন্দরবনে আরও মৃত ১২টি হরিণসহ ২ দিনে ৫১টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার
৫ মাস আগে
সুন্দরবনে ৩ মাসের জন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ।
শনিবার (১ জুন) খেকে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) পর্যন্ত সুন্দরবনে এ নিষেধাজ্ঞা কর্যকর হবে। এই সময়ে বনজীবী, সাধারণ জনগণ ও দর্শনার্থীরা বনে প্রবেশ করতে পারবে না।
সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানসের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর এ সিদ্ধান্ত নেয় বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: আজিজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী সরকার, সেনাবাহিনীর সুনাম কলঙ্কিত: ফখরুল
এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী-খালের মাছের প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এই সময়ে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ ছাড়া এই সময়ে বন্য প্রাণীদেরও প্রজনন মৌসুম।
তাই সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকত।
পরে ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় আইআরএমপির সুপারিশ অনুযায়ী আগামী তিন মাস সুন্দরবনে সব ধরনের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এই সময়ে জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের পাশও বন্ধ থাকবে। কোনোভাবে অবাঞ্চিত কেউ বনে প্রবেশ করতে পারবে না। নিষেধাজ্ঞার সময়ে বনে যাতে কোনো প্রকার অন্যায় অপরাধ সংগঠিত হতে না পরে, সেজন্য বন বিভাগ সতর্ক থাকবে।
বন বিভাগের মতে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে নানা নাম ও আকারের ৩৪৪ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরী ও গেওয়া গাছ বেশি।
এছাড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বানর, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৯০ প্রজাতির পাখি, ১২০ প্রজাতির মাছ, ৩৫টি সরীসৃপ, ৮টি প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে।
এর মধ্যে মধ্যে ২ প্রজাতির উভচর, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৫ প্রজাতির পাখি এবং ৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে।
আরও পড়ুন: শিল্পী সমিতির সম্পাদক পদে ডিপজলের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত
আর্থিক অভিজাতদের সহায়তা করতে সাংবাদিকদের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা: সিপিডি
৫ মাস আগে