সুন্দরবন
ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর স্বাভাবিক হচ্ছে সুন্দরবন
গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি নতুন করে অঙ্কুরিত হতে শুরু করায় বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন তার স্বাভাবিক রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে।
বর্ষার প্রভাবে বন ও এর আশপাশের সুন্দরী, গরান, গোলপাতাসহ নানা গাছে ভরে উঠেছে এ বন।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারণে লবণাক্ত হয়ে যাওয়া মিঠা পানির পুকুরগুলো সম্প্রতি মৌসুমি বৃষ্টির কারণে আবারও মিঠা পানিতে ভরে গেছে। ফলে সুন্দরবন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
পর্যটক, জেলে, কাঠুরে ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ বিধিনিষেধের কারণে, সুন্দরবনে অনেকটা নীরবতা বিরাজ করছে। এতে মাছ ও বন্যপ্রাণী উৎপাদন বৃদ্ধি, তাদের অবাধ চলাচল, প্রজনন কার্যক্রম এবং নতুন উদ্ভিদের বৃদ্ধি সহজ হচ্ছে।
ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি বর্ণনা করে সুন্দরবনের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো ইউএনবিকে বলেন, ২৬ মে রিমালের ক্ষয়ক্ষতি আগের ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডরকে ছাড়িয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় শতাধিক মিঠা পানির পুকুর লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায়, যার ফলে শতাধিক হরিণ ও বিভিন্ন প্রাণী মারা যায়।
এছাড়া অসংখ্য সুন্দরী, গরান ও গোলপাতাসহ অন্যান্য উদ্ভিদ প্রজাতির গাছ ধ্বংস হয়ে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য কেড়ে নিয়েছে।
পূর্ববর্তী অনুষ্ঠানগুলোর মতো, বন বিভাগ এরই মধ্যে নতুন করে গাছপালা জন্মানো এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজননের জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণ এবং জেলে, কাঠুরে ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ফলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার এক মাসের মধ্যেই সুন্দরবন তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে পেতে শুরু করেছে।
এই ম্যানগ্রোভ বনে ৩৫০ প্রজাতির পাখি, ২৯০ প্রজাতির প্রাণী, ৩০-৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৮-১০ প্রজাতির উভচর এবং ২০০ প্রজাতির মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২টি নদী ও খালের তীরে পুনরুদ্ধার করা হবে ম্যানগ্রোভ বন
`সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে
`সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে
'সুন্দরবনের মধু' বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের আবেদন পর্যালোচনা করে প্রাপ্ত তথ্যাদি জার্নাল আকারে প্রস্তুত করে বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে। জার্নাল প্রকাশের তারিখ থেকে দুই মাস সময়ের মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষের আপত্তি বা বিরোধিতা না পাওয়া গেলে পণ্যটিকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু, দুশ্চিন্তায় সংশ্লিষ্ট পেশার মানুষ
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক 'সুন্দরবনের মধু' পণ্যটিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট আবেদন দাখিল করেন। ডিপিডিটি ওই আবেদন পরীক্ষা করে আবেদনে উল্লিখিত বিষয়ে আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য আবেদনকারীকে অনুরোধ জানায়। ডিপিডিটি'র অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সুন্দরবনের মধুর পুষ্টিগুণ বিষয়ে বিএসটিআই একটি পরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ডিপিডিটিকে প্রদান করে। এছাড়াও চাওয়া অন্যান্য তথ্যাদি না পাওয়ায় ওই বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। সেসব তথ্যাদি আবেদনকারী ২৭ জুন আবার দাখিল করে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১২৭টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩২
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মৌয়ালের মৃত্যু
সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে মোশাররেফ হোসেন গাজী নামে এক মৌয়ালের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) ঢাংমারী নদীতে ঘটনাটি ঘটে।
মৃত মৌয়াল মোশাররেফ হোসেন গাজী খুলনার দাকোপ উপজেলার ঢাংমারী গ্রামের আমির আলী গাজীর ছেলে।
আরও পড়ুন: যশোরে পুলিশ হেফাজতে নারীর মৃত্যুর অভিযোগ
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে চারজন মৌয়াল শনিবার দুপুরে একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে ঢাংমারী নদী দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় হঠাৎ করে একটি কুমির নৌকা থেকে মোশারফেকে টেনে নদীতে নিয়ে যায়। পরে তার সঙ্গীরা করমজল এলাকার খাল থেকে মোশারেফের লাশ উদ্ধার করে।
প্রসঙ্গত সুন্দরবনে নদী-খালে মাছ এবং বনে বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পযন্ত তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ।
এই তিন মাস জেলে-বাওয়ালি, মৌয়াল ও পর্যটকসহ সবার সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধি রয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১২৭টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩২
রিমালের আঘাতে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩২টিতে।
মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত বন থেকে ১২৭টি হরিণ ও ৪টি বন্য শুকরের মৃতদেহসহ একটি অজগর উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলার চর, নারিকেল বাড়িয়া ও নীলকমল থেকে মৃত প্রাণীগুলো উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১১১টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১১৬
পাশাপাশি ১৮টি হরিণ অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বনে ছেড়ে দিয়েছে বন বিভাগ।
এদিকে বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে।
তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মঙ্গলবার থেকে সুন্দরবনে তল্লাশি করে প্রতিদিন তারা মৃত অবস্থায় হরিণ উদ্ধার করছে। শুক্রবারও বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা ৩১টি মৃত হরিণ উদ্ধার করে। এর মধ্যে কয়েকটি হরিণের দেহ অনেকাংশে পচে গেছে।
তিনি আরও বলেন, এনিয়ে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত তারা ১২৭টি মৃত হরিণ, ৪টি বন্য শূকর ও একটি অজগর উদ্ধার করে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে নদীতে ভাসতে থাকা জীবিত ১৮টি হরিণ উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে। এখনও বনের মধ্যে বন বিভাগের সদস্যরা তল্লাশি করছে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে লবণ পানি বনের মধ্যে আটকে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বনের কোথাও আর কোনো বন্যপ্রাণী মরে পড়ে আছে কি না তা ঘুরে দেখছে বন বিভাগের সদস্যরা। তালিকা পাওয়ার পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে আরও ৪৫টি মৃত হরিণ উদ্ধার
সুন্দরবনে আরও মৃত ১২টি হরিণসহ ২ দিনে ৫১টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার
সুন্দরবনে ৩ মাসের জন্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
তিন মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ।
শনিবার (১ জুন) খেকে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) পর্যন্ত সুন্দরবনে এ নিষেধাজ্ঞা কর্যকর হবে। এই সময়ে বনজীবী, সাধারণ জনগণ ও দর্শনার্থীরা বনে প্রবেশ করতে পারবে না।
সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানসের (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর এ সিদ্ধান্ত নেয় বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: আজিজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী সরকার, সেনাবাহিনীর সুনাম কলঙ্কিত: ফখরুল
এই তিন মাস সুন্দরবনের নদী-খালের মাছের প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এই সময়ে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ ছাড়া এই সময়ে বন্য প্রাণীদেরও প্রজনন মৌসুম।
তাই সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকত।
পরে ২০২২ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, বনের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় আইআরএমপির সুপারিশ অনুযায়ী আগামী তিন মাস সুন্দরবনে সব ধরনের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এই সময়ে জেলে, বাওয়ালী ও মৌয়ালদের পাশও বন্ধ থাকবে। কোনোভাবে অবাঞ্চিত কেউ বনে প্রবেশ করতে পারবে না। নিষেধাজ্ঞার সময়ে বনে যাতে কোনো প্রকার অন্যায় অপরাধ সংগঠিত হতে না পরে, সেজন্য বন বিভাগ সতর্ক থাকবে।
বন বিভাগের মতে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে নানা নাম ও আকারের ৩৪৪ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরী ও গেওয়া গাছ বেশি।
এছাড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বানর, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৯০ প্রজাতির পাখি, ১২০ প্রজাতির মাছ, ৩৫টি সরীসৃপ, ৮টি প্রজাতির উভচর প্রাণী রয়েছে।
এর মধ্যে মধ্যে ২ প্রজাতির উভচর, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৫ প্রজাতির পাখি এবং ৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে।
আরও পড়ুন: শিল্পী সমিতির সম্পাদক পদে ডিপজলের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত
আর্থিক অভিজাতদের সহায়তা করতে সাংবাদিকদের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা: সিপিডি
সুন্দরবনে আগুন: তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল
সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে আগুন লাগার কারণ হিসেবে ছয়টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব বৃহস্পতিবার বিভাগীয় বন কর্মকতার (ডিএফও) কাছে এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
এছাড়া প্রতিবেদনে সুন্দরবনের ৭ দশমিক ৯৮ একর বনভূমি পুড়ে যাওয়া এবং ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫০ টাকা ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আগুন: বৃহস্পতিবার পুড়ে যাওয়া এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছে তদন্ত কমিটি
প্রতিবেদনে আগুন লাগার কারণ হিসেবে যে বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, ভোলা নদী প্রায় ভরাট হওয়ার কারণে নদীর সঙ্গে ছোট-বড় খালগুলোর মধ্যে দিয়ে বনে জোয়ারে পানি প্রবেশ করতে পারছে না। নদী ও সংযোগ খালগুলো সচল না থাকাটাও আগুনের কারণ হতে পারে।
ভোলা নদীর গভীরতা কম ও সংযোগ খালগুলো সচল না থাকায় একদিকে বনভূমি পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে না, অন্য দিকে বনের পার্শ্ববর্তী মানুষ ও গবাদি পশু অতি সহজে সুন্দরবনে প্রবেশ করছে।
এদিকে শুকনা পাতা বনভূমিতে পড়ে থেকে শুকনা লেয়ার সৃষ্টি করে। এবছর তীব্রতাপদাহ চলছে যা ৭৫ বছরের রের্কড ভঙ্গ করেছে এবং বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শুকনা ডাল ও পাতায় ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন স্থির তড়িৎ উৎপাদনের মাধ্যমে এই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
বনের মূর্তির খালে এই সময়ে প্রচুর টেংরা জাতীয় মাছ পাওয়া যায়। মাছ আহরণ করতে বনের লতিফের ছিলা দিয়ে পায়ে হেঁটে মানুষ যাতায়াত করছে। ফলে অজ্ঞানতাবসত বা ইচ্ছাকৃত ফেলে দেওয়া সিগারেটের অবশিষ্ট অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে।
অবৈধ মৌয়াল অথবা বাওয়ালীদের বনে প্রবেশ করে মধু সংগ্রহ করার সময় ধোঁয়া তৈরির কুণ্ডলীর অবশিষ্ট অংশ বা বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে।
আগুনের সূত্রপাত হিসেবে ঘটনাস্থলে একটি মৌচাকের মধুসংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত লোফার কিছু অংশ অবশিষ্ট দেখা যায়। এখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যরা তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটি সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। আগুন লাগার ছয়টি কারণ উল্লেখ করেছে প্রতিবেদনে।
কমিটির প্রধান খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, কমিটির সদস্যদের নিয়ে তিনি এরই মধ্যে সুন্দরবনে লাগা আগুনের এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেখান থেকে নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত তারা সংগ্রহ করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসাবে যা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্য রয়েছে, বলা তিন হাজার ৪০০ কুইন্টাল যার মূল্যে ছয় লাখ ১২ হাজার টাকা। গেওয়া ২২৫ কুইন্টাল যার মূল্যে ৪৭ হাজার ২৫০ টাকা।
সুন্দরী ১০০ কুইন্টাল যার মূল্যে ৩৯ হাজার টাকা এবং জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১১১টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১১৬
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত সুন্দরবন
ঘূর্ণিঝড় রিমাল: ১১১টি হরিণসহ সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১১৬
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৬টিতে।
শুক্রবার (৩১ মে) বিকাল পর্যন্ত বন থেকে ১১টি হরিণ এবং ৪টি বন্য শুকরের মৃতদেহ এবং একটি অজগর উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলার চর, নারিকেল বাড়িয়া ও নীলকমল থেকে মৃত প্রাণীগুলো উদ্ধার করা হয়।
পাশাপাশি ১৮টি হরিণ অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বনে ছেড়ে দিয়েছে বন বিভাগ।
এদিকে বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে।
আরও পড়ুন: ‘রিমালের’ আঘাতে সুন্দরবনে প্রাণ হারিয়েছে ২৬ হরিণ
তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, মঙ্গলবার থেকে সুন্দরবনে তল্লাশি করে প্রতিদিন তারা মৃত অবস্থায় হরিণ উদ্ধার করছে। শুক্রবারও বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা ১৫টি মৃত হরিণ উদ্ধার করে। এর মধ্যে কয়েকটি হরিণের দেহ অনেকাংশে পচে গেছে। এনিয়ে মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তারা ১১১টি মৃত হরিণ, চারটি বন্য শূকর, এবং একটি অজগর উদ্ধার করে। এছাড়া জলোচ্ছ্বাসে নদীতে ভাসতে থাকা জীবিত ১৮টি হরিণ উদ্ধার করে অবমুক্ত করা হয়েছে। এখনও বনের মধ্যে বন বিভাগের সদস্যরা তল্লাশি করছে। দুয়েকদিনের মধ্যে তল্লাশি শেষ করা হবে। এর পরে বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কম।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, রিমালের জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে লবণ পানি বনের মধ্যে আটকে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বনের কোথাও আর কোনো বন্যপ্রাণী মরে পড়ে আছে কি না তা ঘুরে দেখছে বন বিভাগের সদস্যরা। তালিকা পাওয়ার পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন থেকে আরও ৪৫টি মৃত হরিণ উদ্ধার
সুন্দরবনে আরও মৃত ১২টি হরিণসহ ২ দিনে ৫১টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার
সুন্দরবনে আরও মৃত ১২টি হরিণসহ ২ দিনে ৫১টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে মিলেছে আরও ১২টি মৃত হরিণ। এনিয়ে দুই দিনে সুন্দরবন থেকে মৃত ৫১টি হরিণ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বুধবার (২৯ মে) সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা ও কচিখালী এলাকা থেকে বন বিভাগের সদস্যরা মৃত অবস্থায় হরিণগুলো উদ্ধার করে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দোর নেতৃত্বে বুধবার সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তারা রিমালের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবন ঘুরে দেখেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় হরিণের মাংস জব্দ, পল্লী বিদ্যুতের ২ কর্মী গ্রেপ্তার
বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করছে। তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, তিনি নিজে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন। বনের কটকা থেকে মৃত অবস্থায় দুটি হরিণ, কচিখালী থেকে ১০টি হরিণ এবং একটি বন্য শূকর উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার ৩৯টি মৃত হরিণ ও একটি বন্য শূকর সুন্দরবন থেকে উদ্ধার করা হয়। মৃত হরিণ ও বন্য শূকর মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পানিতে ভেসে যাওয়ার সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে জীবিত অবস্থায় ১৭টি হরিণ উদ্ধার করা হয়।
মিহির কুমার দো আরও বলেন, ঘুর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রবিবার এবং সোমবার দিনে ও রাতে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারে চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি বেড়ে যায়। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত করে। পানিতে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী আবাসস্থল হারিয়ে ছুটাছুটি করতে থাকে।
প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছ পালার পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর অনেক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। জলোচ্ছাসে সুন্দরবনে বাঘ ও হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী আবাস্থল হারিয়ে ফেলে। বনপ্রাণী ও বনের গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি সরজমিনে দেখে তালিকা করার জন্য খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো এবং সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বনের ওই কর্মকর্তারা বুধবার সুন্দরবন সরজিমেন পরিদর্শন করছেন। তালিকা পাওয়ার পর সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: ‘রিমালের’ আঘাতে সুন্দরবনে প্রাণ হারিয়েছে ২৬ হরিণ
বাগেরহাটে ২৯ কেজি হরিণের মাংসসহ গ্রেপ্তার ১
‘রিমালের’ আঘাতে সুন্দরবনে প্রাণ হারিয়েছে ২৬ হরিণ
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে সুন্দরবনে প্রাণ হারিয়েছে ২৬টি হরিণ। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও ১৩টি হরিণ। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কাজ শুরু করেছে বন বিভাগ।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালার যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি জলোচ্ছ্বাসে বহু বন্যপ্রাণীও ভেসে গেছে। দুইদিন ধরে জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ ডুবে যাওয়ায় প্রাণ বাঁচাতে বন্যপ্রাণীরা এদিক থেকে সেদিকে ছুটাছুটি করতে থাকে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কটকা জামতলা এলাকা থেকে ২৬টি মৃত হরিণ উদ্ধারের পাশাপাশি আরও ১৩টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে বগুড়ায় নিয়ে যাওয়ার সময় ৪টি হরিণের মৃত্যু
এছাড়া বনের মধ্যে থাকা ৮০টি পুকুরে লবণ পানি ঢোকায় স্বাদু পানির উৎস নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে বন বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ের অবকাঠামো।
বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানতে বন বিভাগের সদস্যরা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় অনুসন্ধান করছে। তবে সুন্দরবন বিভাগ এখনও পর্যন্ত জানাতে পারেনি রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রবিবার ও সোমবার দিনে ও রাতে নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারে চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের পানিতে সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশ প্লাবিত হয়। বনের মধ্যে দিয়ে ৬ থেকে ৭ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়।
তিনি বলেন, পানিতে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরা ছুটাছুটি করতে থাকে। পানিতে ভেসে যাওয়ার সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩টি জীবিত হরিণ উদ্ধার করে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
মিহির কুমার দো আরও বলেন, বন বিভাগের সদস্যরা মৃত হরিণগুলোকে মাটিচাপা দিয়েছে। বনজ সম্পদ এবং বন্যপ্রাণীর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে বন বিভাগের সদস্যরা কাজ করছেন। তবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এমন আশঙ্কা ওই বন কর্মকর্তার।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, পানির কারণে বনের বিভিন্ন এলাকায় হরিণ শাবক মারা গেছে। বন বিভাগের সদস্যরা বনের বিভিন্ন এলাকায় মৃত অবস্থায় হরিণ শাবক দেখতে পাচ্ছে। হরিণ মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাগর এখনও উত্তাল থাকায় বন বিভাগের সদস্যরা ঠিকভাবে সব কাজ করতে পারছেন না বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ২৯ কেজি হরিণের মাংসসহ গ্রেপ্তার ১
খুলনায় হরিণের মাংস জব্দ, পল্লী বিদ্যুতের ২ কর্মী গ্রেপ্তার
৩ দিন পর সুন্দরবনে আগুন নেভানোর ঘোষণা
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেছেন, অগ্নিকাণ্ডের তিন দিন পর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে লাগা আগুন নিভে গেছে।
তিনি বলেন, এখন সেখানে আর আগুন বা ধোঁয়ার কোনো অস্তিত্ব নেই।
মঙ্গলবার (৭ মে) বিকাল ৪টার দিকে তিনি আগুন সম্পূর্ণ নিভে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়।
মিহির কুমার দো বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের এলাকায় ড্রোন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বন বিভাগের একাধিক টিম ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সার্বক্ষণিক বনের মধ্যে ঘুরে ঘুরে অনুসন্ধান করে দেখছে কোথাও কোনো ধরনের আগুন বা ধোঁয়া আছে কি না। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সুন্দরবনে আগুন বা ধোঁয়ার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এরপর বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নিভে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে: পরিবেশ মন্ত্রণালয়
এদিকে বন অধিদপ্তরের গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির সভাপতি মিহির কুমার দো কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করছে।
শিগগিরই কমিটির সদস্যরা সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানান তিনি।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, বন বিভাগের গঠিত টিমসহ তিনি নিজে অগ্নিকাণ্ডের এলাকা কয়েক দফায় ঘুরে দেখেছেন। কোথাও আগুন ও ধোঁয়া দেখতে পাননি। সুন্দরবনে আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব বলেন, কমিটির সদস্যদের নিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন ডিএফও অফিসে জমা দেওয়া হবে।
আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষতির পরিমাণ জানতে রবিবার সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে ওই কমিটির প্রধান করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অপর দিকে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্য বন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সোমবার বিকালে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দোকে ওই কমিটির প্রধান করা হয়। কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে: সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের আগুন ৩০ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে