অন্তবর্তী সরকার
বঙ্গবন্ধু সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলের নাম পরিবর্তন
বঙ্গবন্ধু সেতু ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নাম পরিবর্তন করেছে অন্তবর্তী সরকার।
বঙ্গবন্ধু সেতুর নাম পরিবর্তন করে ‘যমুনা সেতু’ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নাম ‘কর্ণফুলী টানেল’ করে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সেতু বিভাগ।
যমুনা বহুমুখী সেতু যমুনা নদীর ওপর অবস্থিত একটি সড়ক ও রেল সেতু। ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন চালু হয় এই সেতু। সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে সেতুটির নামকরণ করা হয়। এ সেতু বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত হয় টানেল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর টানেলটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর নাম দেওয়া হয় বঙ্গবন্ধু টানেল। চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে টানেল শেষ হয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।
আরও পড়ুন: সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বাড়িতে যেতেই কর্ণফুলী টানেল করা হয়েছে: প্রেস সচিব
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের নামে থাকা বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্টই টানেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামফলক সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
৬৫ দিন আগে
জুলাই চার্টারের ওপর নির্ভর করছে নির্বাচন কখন হবে: শফিকুল আলম
আগামী জাতীয় নির্বাচন এ বছরের শেষ নাগাদ, নাকি আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে; তা নির্ভর করছে জুলাই চার্টারের ওপর বলে জানিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এরপর সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে কিছু কিছু সুপারিশ তিনি তুলে ধরেন।
রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে নির্বাচনের কথা বলছে, সেখানে বর্তমান সরকার কী এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে যে সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতেই হবে, প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা প্রথম থেকে বলছেন ছয়টি বড় সংস্কার কমিশন যে সুপারিশগুলো করবে, সেটা নিয়ে একটি ঐকমত্য কমিশন করেছে অন্তবর্তী সরকার। সেই কমিশনের প্রধান হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা নিজেই।’
‘ভাইস চেয়ারম্যান হলেন অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ। বাকি পাঁচটা কমিশন প্রধান এটার সদস্য। এই ছয়টি কমিশনের পুরো প্রতিবেদন নিয়ে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবে ঐকমত্য কমিশন। তারপর একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে কতটুকু সংস্কার দ্রুত করতে হবে, কতটুকু পরে করা যাবে—কতটুকু করার জন্য সাংবিধানিক সংস্কার দরকার।’
তিনি বলেন, ‘যেসব সুপারিশে সবাই একমত হবে, রাজনৈতিক দলগুলো সেখানে সই করবে। এরপর যেটা দাঁড়াবে, সেটা হবে জুলাই চার্টার। সেটার বাস্তবায়ন বর্তমান সরকার কিছু করবে, পরবর্তী সরকার কিছু করবে। আর সেই বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করবে—নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বর নাগাদ নাকি আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে।’
আরও পড়ুন: নারী ফুটবলারদের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধের আশ্বাস শফিকুল আলমের
ছয়টি কমিশনের মধ্যে চারটির প্রতিবেদন গেল ডিসেম্বরের শেষ দিকে জমা দেওয়া হয়। আর আজ জমা দেওয়া হয়েছে বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন ও প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন।
বিচার বিভাগ পুরোপুরি স্বাধীন করার প্রস্তাব
বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কমিশনের সুপারিশে—এমন তথ্য দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘যদিও আগের সরকারগুলো বলেছে যে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। কিন্তু কার্যত বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কোনোদিনও স্বাধীন ছিল না। নতুন প্রতিবেদনে বিচার বিভাগকে পুরোপুরি ও কার্যকরভাবে স্বাধীন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’
‘৩৫১ পাতার এই প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাংবিধানিক সংস্কারও লাগবে। বিচার বিভাগে স্বচ্ছতা আনতে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা কিছু সুপারিশ দিয়েছেন। তার আলোকে কিছু কাজও রয়েছে। আপনারা দেখেছেন বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালার কথাও এসেছে সুপারিশে।’
স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস
বিচার বিভাগীয় কমিশনের সুপারিশে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিসের কথা বলা হয়েছে। শফিকুল আলম বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সুপারিশ হচ্ছে, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস করা। বিশ্বের অনেক দেশে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস আছে। সারা দেশে প্রায় চার হাজার পাবলিক প্রসিকিউটর আছেন। এই পুরো পাবলিক প্রসিকিউটর আসলে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অনুগতদের মধ্য থেকে নিয়োগ দিয়ে এসেছে। কিন্তু স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস এলে আগের সেই চর্চা আর থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিসিএসে যেভাবে রিক্রুট হয়, সেভাবে এটা হবে। এটির মূল কারণ হলো—আদালতে ফৌজদারির মামলার ৪০ শতাংশ সরকারই দাখিল করে, দেখা যাচ্ছে পুলিশ এটা করে। পরে সরকারকে এই মামলাগুলো লড়তে হয়। এতে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস যাতে ভালো হয়, সেই সুপারিশও করা হয়েছে।’
স্বাধীন তদন্ত সংস্থা
এছাড়াও প্রতিবেদনে স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেসব অপরাধ হয়, পুলিশই সেগুলোর তদন্ত করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুলিশকে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যবহার করে। অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করতে তদন্ত করা হয়। আমরা অনেক দেখেছি, বাংলাদেশের বড় বড় মামলাগুলো পুলিশি তদন্তের কারণে কীভাবে কলুষিত হয়েছে। পুলিশের তদন্তগুলো খুবই রাজনৈতিক, অনেকক্ষেত্রে এগুলো ম্যানিপুলেট করা যায়।’
আরও পড়ুন: হাসিনার বিচার করা অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার: শফিকুল আলম
শফিকুল আলম বলেন, এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী বেঞ্চকে তারা ডিভিশনে (বিভাগীয় শহরে) সেটআপ করার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ, বাংলাদেশে জনসংখ্যা বাড়ছে। আগের হাইকোর্ট দেখেন, ১৯৭১ সালের পরে যে হাইকোর্ট, সেই একই হাইকোর্ট, একই জায়গায় আছে। এ জন্য হাইকোর্টের বেঞ্চগুলো বাড়িয়ে বিভাগে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পুরো উপজেলা পর্যন্ত নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। গরিব মানুষের জন্য আইনি সহায়তা আরও বাড়াতে বলা হয়েছে। এই কাজটা যাতে গ্রাম পর্যন্ত চলে যায়, এমন সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ গ্রামগুলো এখন বড় হচ্ছে। আধুনিক জীবনের অনেক বিষয় এসে গেছে সেখানে। যে কারণে সেখানে অনেক মামলা হয়,’ বলেন প্রেস সেক্রেটারি।
তিনি বলেন, আর আইনজীবীদের রাজনীতি নিয়ে একটি নীতিমালা দেওয়া হয়েছে।
৮৬ দিন আগে