ফিলিস্তানি
সাময়িকভাবে গাজাবাসীদের সরাতে চান ট্রাম্প: রুবিও
ফিলিস্তানিদের অন্যত্র পুনর্বাসিত করার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার দখল নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে কিংবা স্থায়ীভাবে নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠনের জন্য উপত্যকাটি থেকে সাময়িকভাবে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
গুয়েতেমালা সফরকালে স্থানীয় সময় বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুবিও বলেন, প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্প) প্রস্তাবটি ‘শত্রুভাবাপন্ন’ নয়, বরং গাজাবাসীর প্রতি এটি একটি ‘উদার পদক্ষেপ’। উপত্যকার পুর্নগঠনে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ দেখাতে চেয়েছেন তিনি।
‘গাজাকে বসবাসযোগ্য করতে সেখান থেকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ সরানো প্রয়োজন। সে সময়ে গাজার বাসিন্দারা সেখানে থাকতে পারবেন না।’
এর আগে, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসিত করে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার দখল নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তার এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিষ্ঠানসহ আরব দেশগুলোর নেতারা।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটও একই ধরনের কথা বলেছেন। তার ভাষ্যে, ট্রাম্পের বক্তব্যের উদ্দেশ্য গাজায় ‘সেনা মোতায়েন করে’ উপত্যকাটির দখল নেওয়া নয়। ওই অঞ্চলটি বর্তমানে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কাউকে সেখানে বসবাস করতে দেওয়াটাও অমানবিক।
আরো পড়ুন:গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা ও সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব ট্রাম্পের
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর গাজা থেকে বর্জ্য সরানোর নামে উপত্যকার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তর করে ‘ক্লিন গাজা’ মিশন পূরণ করতে চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে তিনি ফিলিস্তানিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মিসর ও জর্ডানকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবকে ‘অনৈতিক’ আখ্যা দিয়ে ওই দুই দেশ ছাড়াও অন্যান্য আরব দেশগুলো তা প্রত্যাখ্যান করে।
এরপর মঙ্গলবার শুধু গাজাবাসীদের সরানোই নয়, গাজার ওপর অধিকার নিতে চান বলেই ঘোষণা দেন ট্রাম্প। গাজাকে তিনি ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরিয়া’ বানাতে চান বলেও সে সময় জানান তিনি।
ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। মিসর, জর্ডান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা এর তীব্র নিন্দা জানান।
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে কিংবা সাময়িক—কোনোভাবেই গাজাবাসীদের নিজ ভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করার পক্ষপাতী নন তারা।
তবে নিন্দিত হলেও ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘দোষের কিছু’ দেখছেন না ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু। ট্রাম্পের বক্তব্যের সমালোচনার মধ্যে নিজের এই অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি।
৫২ দিন আগে